1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

ওআইভিএস প্রযুক্তি: আঙুলের ছাপে শনাক্ত হবে ভোটার ও অপরাধী

ডেস্ক রিপোর্ট : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
বৃহস্পতিবার, ৪ জানুয়ারি, ২০২৪

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ-সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে করতে সহযোগিতায় মাঠে কাজ শুরু করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ লক্ষ্যে এর মধ্যেই ‘অনসাইড আইডেন্টিফিকেশন অ্যান্ড ভেরিফিকেশন সিস্টেম (ওআইভিএস)’ নামে একটি বিশেষ ডিভাইস নিয়ে মাঠে নেমেছে এলিট ফোর্স র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। এ ডিভাইসের মাধ্যমে আঙুলের ছাপেই বেরিয়ে আসবে সংশ্লিষ্ট এলাকার ভোটাদের নাম-ঠিকানা। এ ছাড়াও ওআইভিএসে আঙুলের ছাপেই শনাক্ত করা সম্ভব হবে দীর্ঘদিন ছদ্মবেশে আত্মগোপনে থাকা অপরাধীদেরও। ইতিমধ্যে এ ডিভাইসের মাধ্যমে ক্লুলেস হত্যাকাণ্ড ও অপরাধীদের শনাক্ত করেছে র‌্যাব।

ভোটের ৪৮ ঘণ্টা আগে থেকে কেন্দ্রের সামনে ওআইভিএস নিয়ে প্রস্তুত থাকবে র‌্যাব। বর্তমানে ১৫টি ব্যাটালিয়নের কমান্ডাররা এ ডিভাইস ব্যবহার শুরু করেছেন। ভোটকেন্দ্রের সামনে সন্দেহভাজনরা ঘোরাঘুরি করলেই তাদের আঙুলের ছাপ নেবে র‌্যাব।

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, ২০২১ সালে র‌্যাব ফোর্সেস প্রয়োজনীয় হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার ও ডাটাবেজের সমন্বয়ে আত্মপ্রকাশ করে ওআইভিএস। বিশেষ এ ডিভাইসের মাধ্যমে জাল ভোট দিতে আসা ব্যক্তিরাও শনাক্ত হবে। তিনি বলেন, এ ডিভাইস চালুর পর হত্যা মামলার আসামি, দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীসহ গুরুতর অপরাধীদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে র‌্যাব।

কমান্ডার আল মঈন বলেন, ওআইভিএস যন্ত্রটির ব্যবহার শুরুর পর থেকে তাৎক্ষণিক যেকোনো ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে। মোবাইলসদৃশ ডিভাইসটি ইন্টারনেট সংযোগের মাধ্যমে যেকোনো স্থান থেকে পরিচালনা করা যায়। অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি ও অপরাধী শনাক্তের ক্ষেত্রেও ডিভাইসটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। ডিভাইসটির মাধ্যমে তাৎক্ষণিক জাতীয় পরিচয়পত্র, অপরাধীদের ডাটাবেজ ও কারাভোগের ডাটাবেজের তথ্য পাওয়া যায়। এতে কোনো ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, জন্ম তারিখ বা ফিঙার প্রিন্টে ওই ব্যক্তির তথ্য সহজেই তাৎক্ষণিক পাওয়া যায়। এতে নিমিষেই জানা সম্ভব হচ্ছে, হত্যাকাণ্ডের শিকার কিংবা হত্যাকাণ্ডে জড়িত বা অপরাধমূলক যেকোনো কাজের সঙ্গে ওই ব্যক্তির সংশি¬ষ্টতা রয়েছে কি না। ওআইভিএসের মাধ্যমে শুধু অপরাধী শনাক্তই নয়, বিভিন্ন অজ্ঞাতপরিচয় মৃত ব্যক্তি ও মানসিক প্রতিবন্ধীর পরিচয়ও শনাক্ত করা হচ্ছে এবং তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এতে অপরাধ তদন্তে আরও গতিশীলতা বৃদ্ধি পেয়েছে।

এই র‌্যাব কর্মকর্তা আরও বলেন, ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। এ নির্বাচনে সারা দেশের নিরাপত্তা পরিকল্পনার অংশ হিসেবে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি র‌্যাব মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছে। চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নির্বাচনের নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে র‌্যাব গত ২৯ ডিসেম্বর থেকে মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে প্রতিটি সংসদীয় আসনে মোতায়েন রয়েছে। এ ছাড়াও স্থাপন করা হয়েছে ৩০টির বেশি অস্থায়ী ক্যাম্প। জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জনজীবন স্বাভাবিক রাখতে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় সম্পদে সুরক্ষা দিতে র‌্যাব পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে। জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যেকোনো ধরনের নাশকতা কিংবা সহিংসতা প্রতিরোধে দেশব্যাপী মোট ৭০০টির অধিক টহল দল আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করছে।

ভোট গ্রহণের ৪৮ ঘণ্টা বাকি থাকতেই নির্বাচনি প্রচার এবং ভোটকেন্দ্রের আশপাশে ঘোরাঘুরি না করতে নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ওই নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে ভোটকেন্দ্র ও তার আশপাশের এলাকায় অনুপ্রবেশকারী বহিরাগতদের পরিচয় শনাক্ত করতে র‌্যাবের মোবাইল টহল দল ওআইভিএস ব্যবহার করবে। এ ছাড়াও এ ডিভাইসের মাধ্যমে এক এলাকার ভোটার অন্য এলাকায় প্রবেশ করে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে কি না তা শনাক্ত করে তাৎক্ষণিক সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ওআইভিএসের সফলতা

র‌্যাবের মাধ্যমে আধুনিক যন্ত্র ওআইভিএস ব্যবহারের শুরু থেকেই অপরাধী শনাক্তসহ অজ্ঞাতনামা ভুক্তভোগীর পরিচয় নিশ্চিতে বাহিনীর সাফল্য মিলেছে। ইতিমধ্যে ছদ্মবেশ ধারণ করে দীর্ঘদিন পলাতক থাকা ২০০৫ সালে বাগেরহাটের চাঞ্চল্যকর মনু হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হেমায়েত কবিরাজ, কুড়িগ্রামে একই পরিবারের ৪ জনকে কুপিয়ে হত্যাসহ ৪টি হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জালাল গাজি, ১৯৯৩ সালে রাজধানীর কেরানীগঞ্জে পিতা-পুত্রকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যাকাণ্ডে জড়িত মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আরিফ, ২০১৩ সালে রাজধানীর মতিঝিলে পুলিশ কনস্টেবল বাদল মিয়া হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রিপন নাথ ঘোষ, ২০০৬ সালে কেরানীগঞ্জের রোহিতপুর ইউনিয়ন পরিষদ মেম্বার আনোয়ার হোসেনকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত প্রধান আসামি কামাল উদ্দীনসহ দীর্ঘদিন ছদ্মবেশে পলাতক থাকা অসংখ্য অপরাধীর আঙুলের ছাপ নিয়ে তাদের পরিচয় শনাক্ত করা হয়। একইভাবে দীর্ঘদিন পলাতক মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া আসামি বাউল সেলিম ফকিরকে গ্রেফতার, রাজধানীর পুরান ঢাকায় বহুল আলোচিত বিশ্বজিৎ হত্যা, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের এমপি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন হত্যাকাণ্ডসহ বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর ও ক্লুলেস হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করা হয় এবং বিভিন্ন মামলায় দীর্ঘদিন ছদ্মবেশে পলাতক অপরাধীদের আঙুলের ছাপ নিয়ে তাদের পরিচয় শনাক্ত করা হয়। এ ছাড়াও অনেক অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির খণ্ডিত ও অগ্নিদগ্ধ মৃতদেহ উদ্ধারের পর এ ডিভাইসটি ব্যবহার করে তাদের পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেনের মরদেহ, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ব্যবসায়ী হেলাল উদ্দিনের খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধারের তাদের পরিচয় শনাক্ত উল্লেখযোগ্য। সম্প্রতি রাজধানীর আশুলিয়া থানাধীন শিমুলিয়া এলাকার বংশাই নদীতে ভাসমান অজ্ঞাতনামা নারীর মরদেহ উদ্ধারের পর এ প্রযুক্তির সহায়তায় মৃতদেহ শনাক্তপূর্বক জড়িতদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ