1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

জাতিগত সংহতির শোভাযাত্রা যখন মৌলবাদের লক্ষ্যবস্তু

সম্রাট দেব চৌধুরী : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
শুক্রবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২২

দুইটি বছর, বলতে গেলে বন্ধ থাকার পর এবারের পহেলা বৈশাখে আবার আগের মতো ঘটা করে আয়োজিত হয়েছে মঙ্গল শোভাযাত্রা। এবারের শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ সঙ্গত কারণেই খুবই চোখে পড়ার মতো ছিলো। প্রায় দুই বছর একটানা অতিমারীতে উৎসবপ্রিয় বাঙালিকে একের পর এক বাদ দিতে হয়েছে দুটি পূজো, চারটি ঈদ, দুটি পহেলা বৈশাখের মতো নানা উপলক্ষ্য। এবারের শোভাযাত্রায় সেই সবকিছু পুষিয়ে নেওয়ারই যেনো চেষ্টা ছিলো মানুষের মাঝে।

কিন্তু আমার এই লেখার উদ্দেশ্য তা না। এমন সময়ে আমি এই লেখাটি লিখছি যখন রাষ্ট্র একজন বিজ্ঞান শিক্ষককে ক্লাসে বিজ্ঞান পড়ানোর অপরাধে গ্রেফতার করছে তারই নিরাপত্তা নিশ্চিত করার তাগিদে, এবং সেই একই রাষ্ট্রের আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কয়েক সারি করে সশস্ত্র সদস্যকে সামনে পিছনে রেখে আয়োজন করতে হচ্ছে বাঙালির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ, ধর্মনির্বিশেষে সকলের জন্যে সমান আবেদনময় উৎসবটির সেই গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গটির, যাকে ইউনেস্কো স্বীকৃতি দিয়েছে বিশ্ব ঐতিহ্যের। বাংলাদেশ থেকে মাত্র তিনটি বিশ্ব ঐতিহ্যের একটি হয়ে ওঠা মঙ্গল শোভাযাত্রায় আজ কেনো এতো নিরাপত্তার প্রয়োজন হয় বা কারা এই নিরাপত্তার হুমকি তা সকলেরই জানা।

কিন্তু যখন বিষয়টি একই সাথে গড়িয়ে যায় রাষ্ট্রের বা জাতির সাংষ্কৃতিক ঐতিহ্য ও অস্তিত্বের প্রশ্ন পর্যন্ত তখন কিছু বিষয়কে সুস্পষ্ট করতে প্রয়াস রাখাটা মনে হয় নাগরিক কর্তব্যের ভিতরেই পড়ে।

আজ আমরা মঙ্গল শোভাযাত্রার বিরুদ্ধে যে সুসংবদ্ধ প্রচারণা দেখছি, বহুল প্রস্তুতিপূর্ণ সেই প্রচারণার ফলাফলে জাতির মোটামুটি উল্লেখযোগ্য একটি অংশের কাছে দ্বিধা তৈরী করতে সক্ষম হচ্ছে যে প্রশ্নগুলি তার জবাব খুঁজতেই আজকের এই লেখা।

এ ক্ষেত্রে মাথায় রাখতে হবে মঙ্গল শোভাযাত্রা হোক আর বাঙালিয়ানার ধারক যেকোনো চর্চা বা অনুষ্ঠান, সেটিকে ধর্মের দোহাই দিয়ে বা হিন্দুয়ানী সংষ্কৃতি বলে বিভাজনের রেখার ওপর পারে নিয়ে গিয়ে যেকোনো জাতিগত চর্চার পথে সূক্ষ বা স্থুল ভাবে নিয়মিত বাধা দেওয়ার একটি অবিরত তৎপরতা বাংলাদেশে একটি গোষ্ঠী বহু দিন ধরে দেখিয়ে আসছে।
মঙ্গল শোভাযাত্রা নিয়ে একদম প্রথম আপত্তিটাই জানায় এই গোষ্ঠী এই যুক্তি দিয়ে যে এই শোভাযাত্রায় “ভূত,প্রেত, পশু, পাখির” অবয়ব গড়ে সেই অবয়বের কাছে মঙ্গল প্রার্থনা করা হয়। এই তথ্য দিয়ে তারপরে তারা জানায় যেহেতু ইসলামে আল্লাহ ব্যতীত কারো কাছে কিছু কামনা করাটা শিরক তাই মঙ্গল শোভাযাত্রা এই জায়গা থেকে শিরকে পরিণত হয়ে যায় এবং এটি অবশ্যবর্জনীয় হয়ে উঠে।

আমার লক্ষ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা অনৈসলামিক কিছু নয় বলে প্রমাণ করা বা ইসলামসিদ্ধ বলে প্রতিপন্ন করা নয়। অর্থাৎ এই লেখায় আমি ইসলামের সাথে মঙ্গল শোভাযাত্রার কোনো সম্পর্ক নিরুপন করবো না।

আমি শুধু কয়েকটি প্রচলিত মিথ্যা তথ্যের গুমোট ভাঙবো।
প্রথম মিথ্যেটি হচ্ছে এই যে “মঙ্গল শোভাযাত্রায় বিভিন্ন অবয়বের কাছে মঙ্গল কামনা করা হয়”।

এর জন্যে আগে জানতে হবে “মঙ্গল শোভাযাত্রা” কী?
“মঙ্গল শোভাযাত্রা” মূলত ঢাবি চারুকলা বিভাগভিত্তিক একটা আয়োজন (যদিও এখন সারা দেশেই হয়)।

প্রতি বছর সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব সহকারে ঢাবি চারুকলা বিভাগ মঙ্গল শোভাযাত্রার সার্বিক ব্যবস্থাপনার (মোটিফ নির্মান, আনুষঙ্গিক নির্মান) কাজটি করে আসছে। এটি তাদের একাডেমিক চর্চারই একটা অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যেহেতু তাদের পড়াশোনার ক্ষেত্রটিই প্রায়োগিক তাই তারা পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে নিজেদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার একটু হাত মকশোও করে নেয় এই সুযোগে। আর নিবিড় মনোযোগ ও অক্লান্ত পরিশ্রমে উৎসবমুখর একটি পরিবেশ গড়ে তুলে বাঙালিকেও দেয় শত সহস্র বছরের পুরানো উৎসবমুখরতায় নতুন আঙ্গিকে হারিয়ে যাওয়ার সুযোগ।
তো এই যে আমরা প্যাচা, ঘোড়া যাই দেখি এগুলো ওদের বিভাগীয় কাজের আওতায় বানায় ওরা।

এগুলোকে বলে মোটিফ (মোটিভ না)। মানে কোনো তাৎপর্য বহন করে, প্রতীকী ভাবে কোনো অর্থ বহন করে এমন কোনো বস্তু, যা তৈরীই করা হয়েছে ওই প্রতীকী রুপের প্রকাশের জন্যে।
এই জিনিসগুলো বানানোর ক্ষেত্রে চারুকলা তার নিজস্ব প্রতীকবাদ ব্যবহার করে। এটা খুব স্বাভাবিক। চারুকলা বাদ দিলাম, আর্মি থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রেই প্রতীকের ব্যবহার আছে কিন্তু (সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডোর ইনসিগনিয়ার “চিতা” ক্ষিপ্রতার প্রতীক, জার্সির লোগোর “রয়েল বেঙ্গল টাইগার” প্রতীক জাতীয় ক্রিকেট দলের, …)।

এই যে চারুকলার মোটিফ, এগুলোর তারা পূজা করে না, এগুলার কাছে তারা কোনো প্রার্থনা করে না, কিচ্ছু করে না। কেউই করে না। এগুলো প্রতীকবাদের বিভিন্ন প্রতীক মাত্র যা বিভিন্ন অর্থ বহন করে। চারুকলার প্রতীকবাদের জায়গাটি থেকে (যেমন রঙ তুলির আঁচড়ে মানুষের স্তুপ জমে থাকা ” গোয়ের্নিকা” বলে ওঠে হাজারটি কথা) এই মোটিফগুলি দিয়ে উৎসবের নানা দিক ফুটিয়ে তোলা হয়।

অথচ এই জিনিসটিকেই গোষ্ঠীটি বানিয়ে বসেছে “হিন্দুয়ানী পূজা, প্যাচার কাছে মঙ্গল প্রার্থনা করা হয়, হিন্দু প্রার্থনার গান গাওয়া হয়” আরো কতো কী!

এ বিষয়ে এই মঙ্গল শোভাযাত্রার একদম গোড়া থেকে আজ পর্যন্ত যুক্ত থাকা আয়োজকদের একজনেরই বয়ানটি জানি বরং আমরা। ঢাবি চারুকলা বিভাগের সাবেক ডিন, নিসার হোসেন এ প্রসঙ্গে অতীতে গণমাধ্যমে বলেন “লোকসংস্কৃতির মধ্যে ধর্মনিরপেক্ষ উপাদানগুলো বেছে নেয়া হয়েছিল। আমাদের সোনারগাঁয়ের লোকজ খেলনা পুতুল, ময়মনসিংহের ট্যাপা পুতুল, নকশি পাখা, যাত্রার ঘোড়া এসব নেয়া হয়েছিল।” তিনি বলেন, “শুরু থেকেই লক্ষ্য ছিল এই শোভাযাত্রাটিতে ‘বাঙ্গালির ঐতিহ্য থেকে উপাদান নেয়া হবে এবং দেশের কল্যাণের জন্য একটি আহ্বান থাকবে”।

অর্থাৎ, বিভিন্ন এলাকার গুরুত্বপূর্ণ সাংষ্কৃতিক বৈশিষ্ট্যবাহী পুতুল, খেলনা, মুখোশের উন্মেষ ঘটানোর এই প্রয়াসে খুব মনোযোগী ভাবেই এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে ধর্মীয় স্বাতন্ত্র্য রাখে এমন সব উপাদান।

এবার আসি এর পরের পর্যায়টিতে। মঙ্গল শোভাযাত্রা নিয়ে তীব্র আপত্তি যাদের তারা আরেকটি প্রশ্নকে খুবই উৎসাহিত করেন। প্রশ্নটি হচ্ছে “আনন্দ শোভাযাত্রা” নামে শুরু হওয়া শোভাযাত্রা কেনো নাম বদলে “মঙ্গল শোভাযাত্রা” হয়ে গেলো। তারা এই প্রশ্নটি করেন কারণ তারা জানেন তাদের প্রশ্নটুকু শুনেই প্রভাবিত হয়ে পড়ার মতো যথেষ্ট বড় একটি শ্রেণী বাংলাদেশে রয়েছে, যারা প্রশ্নের উত্তরটুকু খোঁজার কষ্ট না করেই সিদ্ধান্তে চলে আসবে যে নাম বদলে “মঙ্গল শোভাযাত্রা” রাখাই হয়েছে “র বা ভারতীয় হাইকমিশনের কারসাজিতে”, মঙ্গল শোভাযাত্রা হিন্দুদের কিছু একটা (যেহেতু প্যারাডক্সিকাল বিজ্ঞানীরা তেমনটা বলছেন) এবং আগে এই জিনিস বাংলাদেশে ছিলো না, কৌশলে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে।”

এবার একটু তবে জানি “মঙ্গল শোভাযাত্রা”র নাম কেনো “আনন্দ শোভাযাত্রা” ছিলো, আর কেনোই বা “মঙ্গল শোভাযাত্রা” হলো।

সে জন্যে জানতে হবে আজকের এই মঙ্গল শোভাযাত্রার শুরুটা কবে?

বাংলাদেশে প্রথম বড় পরিসরে, আনুষ্ঠানিক নামে মঙ্গল শোভাযাত্রা হয় ১৯৮৯ সালে। কিন্তু প্রথম বারের সেই শোভাযাত্রার নাম রাখা হয়েছিলো “আনন্দ শোভাযাত্রা”। তৎপূর্বে ক্ষুদ্র পরিসরে কয়েক বছর কয়েকটি জেলা শহরে এই ধরণের শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। তো সেই “মঙ্গল শোভাযাত্রা”র উদ্যোক্তা যারা তাদেরই একজন জানিয়েছেন প্রথম বারও তাদের ইচ্ছে ছিলো “মঙ্গল শোভাযাত্রা” নামেই আয়োজন করার। তৎকালীন রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও চাপ বিবেচনায় তারা সেই কাজটি করতে পারেননি। অর্থাৎ, “মঙ্গল শোভাযাত্রা” নামে পালন করা যায়নি রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে। তা কেনো এমন হলো? “মঙ্গল শোভাযাত্রা”র নাম নিয়ে কার আপত্তি ছিলো,কীসে আপত্তি ছিলো?

আয়োজকদের একজনের বক্তব্যই জানি বরং।
চারুকলা অনুষদের সাবেক ডিন, নিসার হোসেন তখন ছিলেন একজন তরুণ শিক্ষক। তিনি সংবাদমাধ্যমে ইতোপূর্বে জানিয়েছেন “তৎকালীন স্বৈরাচার সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য ধর্মকে ব্যবহার করার বিপরীতে সব ধর্মের মানুষের জন্য বাঙ্গালি সংস্কৃতি তুলে ধরার চেষ্টা ছিল শিক্ষার্থীদের মধ্যে। তারাই মূলত: এই আয়োজনটি করেছিল।”

তিনি সুস্পষ্টভাবে বলেছেন মঙ্গল শোভাযাত্রার রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিলো, সেটি ছিলো স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে এক ধরণের প্রচ্ছন্ন মুভমেন্ট। যখন বাংলার মানুষ রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মে এক হওয়ার সুযোগ পাচ্ছিলো না, ঠিক সেই সময়ে বাঙালি জাতীয়তাবাদকে পাথেয় করে আপামর মানুষের কোনো একটি উপলক্ষ্যকে কেন্দ্র করে সমবেত হওয়ার একটি প্রয়াস ছিলো এই শোভাযাত্রা। যে শোভাযাত্রা থেকে স্বৈরাচারী শাসককে প্রতীকী ঈঙ্গিত ছুঁড়ে দেওয়ার লক্ষ্য ছিলো যে অমঙ্গল, অশুভ শক্তির দিন শেষ।

আমাদের বুঝতে হবে এই মঙ্গল কোন মঙ্গল? এই শোভাযাত্রা কীসের ঈঙ্গিতবাহী?

এটি অতীতের সব অশুভের অবসানের ঈঙ্গিত, নতুন সূচনার ঈঙ্গিত। যার সূচনা মূলত এরশাদের বিরুদ্ধে সূক্ষ মুভমেন্ট করার রাজনৈতিক মানসিকতা থেকে, এরশাদ পতনের সফলতায় সেই ধারা এখনো বজায় আছে। এরশাদ থাকলে আজ হয়তো শোভাযাত্রা থাকতো না!

ঠিক যে ধর্মভিত্তিক অপরাজনীতি, যে লালসালু চর্চার অবসান ঘটাতে, জাত-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বাঙালিকে এক করতে যে মঙ্গল শোভাযাত্রার উদ্ভব, খুব সঙ্গত ভাবে সেই শ্রেণীটির চিরন্তন একটি বিদ্বেষ সেই শোভাযাত্রার প্রতি থাকবেই।

এই শোভাযাত্রা তাদের অস্তিত্বের জন্যে সঙ্কটবহ। এই শোভাযাত্রার প্রতিটি পদক্ষেপে তারা অনুভব করে তাদের বুকের উপর পদাঘাতের যন্ত্রণা।

সুতরাং প্রতি বছর তারা চেষ্টা করবেই এই মঙ্গল শোভাযাত্রাকে থামানোর, রুখে দেয়ার। সে জন্যে তারা বানাবে নানান মিথ্যে গল্প। ধর্মনিরপেক্ষ লোকসংষ্কৃতির প্রতীক হয়ে উঠে আসা খেলনা ঘোড়া আর মাটির পুতুলকে তারা জোর করে বানাবে তথাকথিত উপাস্য।

আল্পনার রঙ থেকে সাদা শাড়ি লাল পাড়ের প্রতিটিতেই তারা টেনে আনবে ধর্মের গন্ডী। নিশ্চয়ই তাদের সে অবিরত প্রচারণায় প্রতি বছর বিহ্বল হবে শিশু,তরুণ,প্রবীণদের একটা করে অংশ। কারো মনে তারা জাগাতে সক্ষম হবে সংশয়, কারো মনে ভয় আর কারো মনে ঘৃণা।

কিন্তু তবু সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, ধর্মনিরপেক্ষতা, জাতিগত সংহতি আর রাজনৈতিক সচেতনতার প্রতীক হয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রা প্রতি বছরই আগের চেয়েও বেশি সংখ্যক মানুষ নিয়ে, আগের চেয়েও বিপুলতর কলেবরে আয়োজিত হবে। হতে থাকবে। কারণ, একটি জিনিস নিয়ে কোনো পক্ষ যতো বেশি মিথ্যে প্রচারণা চালায়,মানুষের মনে সে জিনিসটার সততার প্রতি আস্থা ততোটাই বাড়ে।

লেখক : সম্রাট দেব চৌধুরী, অনলাইন এক্টিভিস্ট, রাজনৈতিক কর্মী।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ