1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

পরশুরামের রাবার বাগানে পর্যটকের মেলা 

নিজস্ব প্রতিবেদক : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
বুধবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

ফেনীর পরশুরাম উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী জয়ন্তীনগর গ্রামে ২০১০ সালে নিজের মালিকানাধীন প্রায় ২৫ একর জায়গায় ১০ হাজার রাবার চারা রোপণ করেন হাজি মো. মোস্তফা। সারি সারি রাবার গাছের এ বাগান দীর্ঘ ১২ বছর পরিচর্যার পর বর্তমানে ছয় হাজার গাছ থেকে কষ সংগ্রহ করা হচ্ছে। বাণিজ্যিকভাবে লাভের পাশাপাশি ফেনীর একমাত্র রাবার বাগানটি দর্শনীয় স্থান হিসেবে পর্যটকদের আকৃষ্ট করছে।

চলতি মৌসুমে পর্যায়ক্রমে সব গাছেই ‘কষ’ সংগ্রহের জন্য বাটি বসানো হয়েছে। কষ সংগ্রহ ও বাগান পরিচর্যায় নিয়োজিত রয়েছেন ২০-২৫ শ্রমিক।

বাগানের স্বত্বাধিকারী হাজি মো. মোস্তফা জানান, গাছ রোপণের ৭-৮ বছর পর থেকেই রাবার কষ উৎপাদন শুরু হয়। রাবার গাছ উৎপাদন উপযোগী হওয়ার পর থেকে ২৮-৩০ বছর পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্নভাবে ‘কষ’ দিয়ে থাকে। তার বাগানে বাণিজ্যিকভাবে রাবার উৎপাদন শুরু হয়েছে। বিশেষ পদ্ধতিতে গাছ থেকে রাবার কষ সংগ্রহ করা হচ্ছে।

যেভাবে সংগ্রহ করা হয় রাবার কষ

প্রথমে গাছের গোড়া থেকে ৭০-৭৫ সেন্টিমিটার ওপরে চারদিকে এক মিটার পরিমাণ কাটা হয়। কাটা অংশের নিচে একটি মাটির তৈরি বাটি বসিয়ে দেওয়া হয়। সে বাটিতে গাছ থেকে গড়িয়ে পড়ে জমা হয় রাবার কষ। একটি রাবার গাছ থেকে দৈনিক প্রায় ৩০০-৫০০ গ্রাম কষ পাওয়া যায়। বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী প্রতি লিটার রাবার কষ ১৫০-২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাগানের তত্ত্বাবধায়ক চায়ং মারমা বলেন, সারা বছরই রাবার উৎপাদন হয়। বর্তমানে চার হাজার গাছ থেকে কষ সংগ্রহ চলছে। তবে অক্টোবর-জানুয়ারি চার মাস রাবার উৎপাদনের মৌসুম। শীতে কষ আহরণ বেশি হয়।

তিনি আরও জানান, বাগান থেকে কষ সংগ্রহ করে শুকনো রাবার শিটে পরিণত করতে সময় লাগে সর্বোচ্চ সাতদিন। এরপর রোলার মেশিনের সাহায্যে কষ থেকে পানি বের করে শেডে শুকিয়ে ধুমঘরে তা পোড়ানো হয়। ওই প্রক্রিয়া শেষে রাবারের ৫০ কেজি ওজনের বান্ডিল গুদামজাত করা হয়।

হাজি মোস্তফার রাবার বাগানটি শুরুতে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে শুরু করলেও বর্তমানে পর্যটকদের আকৃষ্ট করছে। সারিবদ্ধ গাছ, সবুজের সমারোহ, বন্যপ্রাণীর অভয়াশ্রম, রাবার প্রক্রিয়াজাতকরণ দেখতে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সর্বোচ্চ কর্মকর্তাসহ দর্শনার্থীরা ভিড় জমান।

বাগানের স্বত্বাধিকারী হাজি মোস্তফার ছেলে নুরুজ্জামান ভুট্টু জানান, চট্টগ্রামের কয়েকটি কোম্পানি তাদের বাগান থেকে রাবার নিচ্ছে। এরমধ্যে চট্টগ্রামের মেসার্স আরিফ এন্টারপ্রাইজ কোম্পানি প্রথম চালানে দুই টন ১৩০ কেজি রাবার নিয়েছে। পর্যায়ক্রমে আরও নেবে বলে জানিয়েছে। বিক্রি করা রাবারের দাম দুই লাখ ১৩ হাজার টাকা।

উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মতিউর রহমান বলেন, রাবার একটি লাভজনক কৃষিভিত্তিক শিল্প। দেশের পাবর্ত্য এলাকাগুলোতে রাবার বাগান করে অনেকেই নিজেদের ভাগ্যের পরিবর্তন করছেন। তবে ফেনীতে আর কোথায়ও রাবার বাগান নেই। পরশুরামের জয়ন্তীনগর গ্রামে ব্যক্তি উদ্যোগে করা রাবার বাগানটি বাণিজ্যিকভাবেও লাভবান হচ্ছে।

জানতে চাইলে পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দা শামসাদ বেগম বলেন, ফেনী জেলায় এটাই প্রথম রাবার বাগান। রাবার বাগানটি শুধু বাণিজ্যিকভাবেই লাভবান হয়ে ওঠেনি, এটা এখন অন্যতম দর্শনীয় স্থান হিসেবে পরিচিত লাভ করেছে।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ