1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আপোষহীন থাকতে হবে

নিউজ এডিটর : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

কথাটি খুবই মূল্যবান। সন্ত্রাসবাদ থেকে বিশ্বের কোনো দেশই সুরক্ষিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন রুশ প্রেসিডেন্টের দপ্তর ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ। মস্কোর উপকণ্ঠের কনসার্ট হলে গত ২২ মার্চের ভয়াবহ হামলা ঠেকাতে না পারাটা রাশিয়ার নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর ব্যর্থতা কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেছেন তিনি। মাঝেমধ্যেই আধুনিক উন্নত দেশের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে মনে হয়, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় আমরা ভালো। অবশ্য, এটা বলার সঙ্গে সঙ্গে কিছু লোকের গাত্রদাহ শুরু হয়ে যায়। এ সত্যিটা মানতেই চান না কিছু লোক। বিভিন্ন সময় আমরা দেখেছি, বাংলাদেশের গোয়েন্দারা অসংখ্য ঘটনা প্রকাশ্য সামনে আসার আগে অন্ধকারেই নিস্ক্রিয় করে দিতে সক্ষম। তাঁদের যোগ্যতা আর দক্ষতা দিয়েই এটা তাঁরা করে থাকেন। অবশ্য শোনা যায়, এটা নাকি পছন্দ না একশ্রেণির রাজনীতিকের। কারণ, বড় কোনো ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটলে বক্তৃতা দিতে তাদের সুবিধা হয়। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নির্দেশে জঙ্গী পরিস্থি মোকাবিলায় আমাদের পুলিশ প্রশাসন খুবই দায়িত্বশীলতা দেখিয়েছে।

আমরা সবাই জানি, জঙ্গীবাদ-সন্ত্রাসবাদ এটা বৈশ্বিক সমস্যা। সারাবিশ্ব জঙ্গী আর সন্ত্রাসবাদ নিয়ে চিন্তিত। যদিও জঙ্গী-সন্ত্রাসী দমনে আমাদের পুলিশের কৌশল অনেকের পছন্দ হয়নি। বানিয়ে বানিয়ে কিছু রাজনৈতিক নেতা দায়িত্বহীন উক্তি করেছেন, করছেন। গল্প বলে চলেছেন নানা সময়ে। অবশ্য জনগণের কাছে এগুলো কখনও গ্রহণযোগ্য হয়নি, হয়ও না। তবে হাঁ, ২০১৬ সালে আমরা বড় বিপদে পড়েছিলাম। হোলি আর্টিজানের হামলায় বিপদগ্রস্ত হয়ে ছিলাম। আমরা কাটিয়ে উঠেছি সেসব সমস্যা ও সংকট। জঙ্গী মূলোৎপাটন না হলেও অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণে। সুতরাং এখন আমরা ভালো আছি সেটা বলতে চাই কিন্তু কিছু কিছু দুর্নীতিবাজ, সাম্প্রদায়িক, জঙ্গীআদর্শিক লোকের কাছে শান্তি অপছন্দ। আমরা বুক চিতিয়ে চলি এটা তাদের অপছন্দ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে সরকার জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করে আসছে। এর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় যথাযথ অংশগ্রহণ এবং বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে যাতে কেউ সন্ত্রাস বা জঙ্গিবাদ সম্পর্কিত কোনো কর্মকাণ্ড করতে না পারে, সে ব্যাপারে সদা সচেতন থাকা জরুরি। এ কারণে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে একটি দায়িত্বশীল ও নির্ভরযাগ্য রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এটা ধরে রাখতে আরও সতর্কতার প্রয়োজন। যতদূর মনে পড়ে, সিডনিভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট ফর ইকোনমিকস অ্যান্ড পিস [আইইপি] গ্লোবাল টেররিজম ইনডেক্স [জিটিআই]-২০২৩ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছিল বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ সূচকে বাংলাদেশ তিন ধাপ উন্নতি করেছে। অর্থাৎ বাংলাদেশ যথেষ্ট নিরাপদে। বেশি সন্ত্রাসকবলিত দেশের দুটিই দক্ষিণ এশিয়ায়। দেশ দুটো হলো-পাকিস্তান ও আফগানিস্তান। অথচ বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল একদা পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর বিশ্বস্তব্যক্তি পাকিস্তানের ইমরান খানের যে প্রশংসা করলেন তাতে অবাকই হতে হয়। আর আফগানিস্তানের কথা কী আর বলবো। সন্ত্রাসী আর জঘন্য দেশ না হলে মেয়েদের পড়াশোনা আইন করে বন্ধ করে দিতে পারে?

নিরাপত্তার প্রসঙ্গে আসি। গত ২২ মার্চ সন্ধ্যায় মস্কোর উত্তরপশ্চিম প্রান্তে ক্রোকাস সিটি হলে হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৩৭ জন নিহত এবং ১৮২ জন আহত হয়েছেন। এটা ভয়ংকর খবর। দুনিয়ায় যে দুই মোড়লের নাম উচ্চারিত হয় এর একটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আরেকটি রাশিয়া। সে রাশিয়ার মস্কোয় সন্ত্রাসী হামলা পুতিনের জন্য বড় ধাক্কা। ভ্লাদিমির পুতিন পঞ্চম দফায় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যেই মস্কোয় কনসার্ট হলে সন্ত্রাসী হামলায় শতাধিক মানুষের প্রাণহানি দেশটির নিরাপত্তা পরিস্থিতির ঘাটতি সামনে এনেছে। এ পরিস্থিতি পুতিনের জন্য কতটা চ্যালেঞ্জের, তা তুলে ধরার চেষ্টা করেন মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের আন্তর্জাতিক বিষয়াবলীবিষয়ক প্রধান প্রতিবেদক ম্যাথিউ চ্যান্স। আসল কথা হলো, রাশিয়াকে নিরাপত্তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে পঞ্চম দফায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন ভ্লাদিমির পুতিন। অথচ এক সপ্তাহের মধ্যেই তিনি ভয়াবহ এক ঘটনার মুখোমুখি হলেন। মস্কোয় ভয়ংকর সন্ত্রাসী হামলা ও বিশৃঙ্খলার ঘটনা প্রত্যক্ষ করলেন তিনি। অবশ্য এটাও সত্য যে, স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তার যে আশায় রুশ নাগরিকেরা ভোট দিয়ে পুতিনকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করেছেন, তার সঙ্গে এর কোনো মিল নেই। দীর্ঘদিন ধরেই পুতিনকে বিশাল ও অশান্ত দেশটিকে শৃঙ্খলার নিশ্চয়তা দিতে সক্ষম একজন নেতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু পশ্চিমাদের কেউ কেউ অভিমত প্রকাশ করেছেন টিভিতে, পুতিনের গত ২৪ বছরের শাসনামলের মধ্যে এখন রাশিয়াকে সবচেয়ে বেশি অনিরাপদ ও অস্থির মনে হচ্ছে। কিন্তু লক্ষ্য করলে দেখা যাবে পুতিনের শাসনামলে বড় কোনো নৃশংসতা রাশিয়ায় ঘটেনি সাম্প্রতিক কালের এ হামলা ছাড়া।

বিশ্বপরিস্থিতি চোখের সামনে বলেই নিরাপত্তা ইস্যুতে অনেক কথাই এখন আমলে আনা দরকার। সন্ত্রাস প্রতিরোধ ইস্যুতে ষড়যন্ত্রকারীদের কোনো চাপের মুখেই কখনো নত হওয়া যাবে না। বাংলাদেশকে অস্থির ও অনিরাপদ করার জন্য একটি চক্রান্তকারী মহল ওঁৎপেতে আছে এটা মনে করতে হবে। ষড়যন্ত্রকারীদের মানুষ জানে ও চিনে। এ কারণে সংশয় সন্দেহ থাকা অমূলক নয়। যারা ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়ে আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করতে চেয়েছিল, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে চেয়েছিল তারা কি না করতে পারে। তারা ক্ষমতার স্বাদ নেওয়ার জন্য দেশকে ধ্বংস করতে পারে। দেশে মানুষের শান্তি তো তাদের পছন্দ নয়। রাজনীতির নামে লুণ্ঠননীতি এদেশের জনগণ ২১ বছর দেখেছে।

এখন বিএনপির ভারতবিরোধিতার রাজনীতি ও রুহুল কবির রিজভীর বক্তব্যের সারাংশ হচ্ছে বাংলাদেশকে বিপদে ফেলা। ভারতীয় পণ্য বয়কটের নামে বিএনপি দেশের বাজারব্যবস্থাকে অস্থির করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। বিএনপির রাজনীতি এখন হচ্ছে ‘গণবিরোধী রাজনীতি।’ সুতরাং পাঁচবারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এখনই কঠোর হতে হবে। চক্রান্ত-ষড়যন্ত্রকারীরা বসে নেই। জনগণকে কষ্ট দেওয়ার রাজনীতিতে কারা কারা অভ্যস্ত তা এদেশের মানুষ জানে। গোয়েন্দাদের আরও বেশি সতর্ক হওয়া চাই। সাবের হোসেন চৌধুরী, মুনতাসির মামুন, শাহরিয়ার কবিরের মতো ব্যক্তিদের রিমান্ডে নিয়ে নজিরবিহীন নির্যাতন চালানোর রেকর্ড বিএনপি-জামায়াত সরকারের আছে। সুতরাং পর্যবেক্ষণ করতে হবে, সিনেমা হলে বোমা নিক্ষেপ করা, জঙ্গীবাহিনি গড়ে তোলা, গ্রেনেড ছুঁড়ে মানুষ মারার কাজে দক্ষ বিএনপির গতিবিধি কোন দিকে।

লেখক: দীপক চৌধুরী – সিনিয়র সাংবাদিক, কলামিস্ট, কথাসাহিত্যিক ও ফিল্মমেকার


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ