1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

ভেজাল পাট বিক্রি বন্ধে সরকারের খসড়া প্রণয়ন

নিজস্ব প্রতিবেদক : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
সোমবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৩

প্রাকৃতিক আর্দ্রতার চেয়ে অতিরিক্ত আর্দ্রতাযুক্ত পাটের ব্যবসা করতে পারবে না কোনও ব্যবসায়ী। শুধু তাই নয়— কারচুপি করে পানি, বালু ও রঙ ইত্যাদি মিশ্রিত পাটের ব্যবসাও করা যাবে না। বিধিমালা করে এই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি ‘পাট (লাইসেন্সিং অ্যান্ড এনফোর্সমেন্ট) বিধিমালা-২০২৩’ এর খসড়া  প্রণয়ন করেছে সরকার।

পাট ও পাটজাত দ্রব্য-পণ্যের বাজার সম্প্রসারণ, গুণগত মান বজায় রাখা এবং অর্থনৈতিকভাবে কৃষকদের উন্নয়নে এই বিধিমালা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে বস্ত্র ও পাট বিষয়ক মন্ত্রণালয়। খসড়াটির ওপর সংশ্লিষ্টদের মতামত নিতে মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে তা প্রকাশ করা হয়েছে।

খসড়া বিধিমালায় বলা হয়, লাইসেন্স ছাড়া কোনও পাট ও পাটজাত দ্রব্য-পণ্যের ব্যবসা করা যাবে না। ব্যবসা করতে হলে নির্ধারিত পদ্ধতিতে লাইসেন্স গ্রহণ করতে হবে। পাটচাষির উৎপাদিত পাট ও পাটজাত পণ্য-দ্রব্য বিক্রি করতে কোনও লাইসেন্স প্রয়োজন হবে না। পরিবারের সদস্যরা নিজেরা পারিবারিক পরিবেশে নিজ গৃহে ও নিজ হাতে উৎপাদিত পাটজাত পণ্য বিক্রির করতে পারবে লাইসেন্স ছাড়াই। তবে সরাসরি রফতারি করতে হলে পাটচাষিকেও লাইসেন্স নিতে হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো.কামরুল হাসান বলেন, ‘খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে। সংশোধন ও যাচাইবাছাই করার জন্য প্রকাশ করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় সংশোধন করে বিধিমালার খসড়া চূড়ান্ত করা হবে।’

তিনি জানান, লাইসেন্সের জন্য আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে নির্ধারিত ফরমে পাওয়া ম্যানুয়েল বা অনলাইনে আবেদন ও প্রয়োজনীয় অন্যান্য কাগজপত্রের সত্যতা যাচাইয়ের পর যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনে লাইসেন্স ইস্যু বা নবায়ন করা হবে। পাটের ডিলার ছাড়া অন্য কোনও ক্যাটাগরিতে কোনও ব্যক্তির নামে লাইসেন্স ইস্যু করা যাবে না।

মিলারদের ক্ষেত্রে লাইসেন্সের বিষয়ে খসড়া বিধিমালায় বলা হয়েছে, কোনও কাঁচা পাট রফতানিকারককে মিল প্রাঙ্গণে অবস্থিত বেলার ও পাটের ডিলার হিসেবে ব্যবসা করতে আলাদা লাইসেন্স নিতে হবে না।  তবে একাধিক কেন্দ্র হলে লাইসেন্স নিতে হবে।

ঋণ নেওয়ার বিষয়ে বিধিমালায় বলা হয়, পাট ও পাটজাত দ্রব্য-পণ্যের ব্যবসা পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণাধীন তফশিলভুক্ত যেকোনও ব্যাংকে বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে যেকোনও ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের আবশ্যিকভাবেভাবে পাট অধিদফতরের লাইসেন্স থাকতে হবে।

কাঁচাপাট রফতানির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট রফতানিকারকের অনুকূলে পাট অধিদফতরের অনুমোদিত লিডিং মার্ক বা বেল টিকিট ব্যবহার ছাড়া কাঁচা পাট রফতানি করা যাবে না। যেসব প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান কাঁচা পাট বা পাকা পাট বা কার্টিং বা স্লাইডার থেকে ইয়ার্ন, অথবা টুয়াইন বা পাটের সুতা তৈরি, বিক্রি বা রফতানি করে, পাটকলের অভ্যন্তরে নিজস্ব তাঁত ব্যবহার করে পাটজাত দ্রব্য-পণ্য প্রস্তুত করবে, সেসব প্রতিষ্ঠান শুধুমাত্র প্রস্তুতকারক-জুটমিল লাইসেন্স গ্রহণ করবে। অন্যথায়, প্রস্তুতকারক-জুটমিল এবং প্রস্তুতকারক-জুট স্পিনিং মিলকে উভয় ধরনের লাইসেন্স নিতে হবে।

বিদেশি নাগরিকদের লাইসেন্স দেওয়ার বাধ্যবধকতা উল্লেখ করে বিধিমালায় বলা হয়, সরকারের কাছে যুক্তিসঙ্গত বিবেচিত না হলে বিদেশি কোনও ব্যক্তি, ফার্ম বা কোম্পানিকে লাইসেন্স দেওয়া হবে না। তবে কমপক্ষে ৫১ ভাগ অংশীদাররিত্ব বাংলাদেশি নাগরিকের হতে হবে।

লাইসেন্সধারী ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে বকেয়া পাওনা পরিশোধের বিষয়ে বলা হয়— পাট ও পাটজাত দ্রব্য-পণ্যের ব্যবসার ধারাবাহিকতা রক্ষার স্বার্থে বৈধ লাইসেন্সধারী পাট ও পাটজাত দ্রব্য-পণ্যের বকেয়া ৬০ দিনের মধ্যে পরিশোধ করবে।

লাইসেন্স ইস্যু এবং নবায়নে আবেদনকারীর জন্য অবশ্যপালনীয় শর্তাবলি পালনের অঙ্গীকার করে লাইসেন্স নবায়ন করতে হবে।  লাইসেন্সধারী কেবল মঞ্জুরি/অনুমোদিত ওজনে পাট ব্যবসা পরিচালনা করবে। পাটের ওজন বা মূল্য হতে সাধারণত খলতা, কাবারী, বৃত্তি, শতকরা, নমুনা, বাট, জলপানি, কাচ্চি ও খাতা ইত্যাদি নামে পরিচিত কোনও ধরনের অন্যায় দায়-দাবি বা কারচুপিতে লিপ্ত হবে না।

প্রাকৃতিক আর্দ্রতার চেয়ে অতিরিক্ত আর্দ্রতাযুক্ত পাটের ব্যবসা করতে পারবে না। কিংবা পানি, বালু ও রঙ ইত্যাদি মিশ্রিত পাটের ব্যবসা করবে না।

কোনও ব্যবসায়ী ‘মণ’ হিসেবে ৩৭ দশমিক ৩২৪২ কেজির বেশি পরিমাণ ওজন গ্রহণ করিতে পারবে না। ব্যবসায়ীরা সময়ে সময়ে সরকার সংজ্ঞায়িত বা অনুমোদিত গ্রেডের মান অনুসারে ব্যবসা পরিচালনা করবে।

আইনের অধীন কোনও ঘটনা বা তথ্য সরবরাহ করতে বলা হলে ব্যবসায়ী মিথ্যা তথ্য সরবরাহ করতে পারবে না। ব্যবসায়ী কোনও মিথ্যা হিসাবের রেজিস্টার এবং রেকর্ডপত্র রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারবে না।

কোনও প্রস্তুতকারক, পার্ট বা পাটজাত দ্রব্য-পণ্য, রফতানিকারক, পাটজাত পণ্যের ডিলার, বেলার এবং প্রেস মালিক (কাঁচা ও পাকা) পাট ব্যবসার বিবরণ প্রদর্শন করবে। বাংলায় বা ইংরেজিতে ভাউচার, খাতাপত্র ও রেজিস্টার রাখবে এবং নির্ধারিত ছক অনুযায়ী মাসভিত্তিক রিটার্ন পাট অধিদফতরে মহাপরিচালক নির্ধারিত কর্মকর্তার কাছে দাখিল করবেন।

প্রকৃত পাটচাষি বা লাইসেন্সধারী ব্যবসায়ী নন— এমন কোনও ব্যক্তির সঙ্গে ব্যবসায়িক লেনদেন বা মধ্যস্থতা করা যাবে না।

লাইসেন্স গ্রহীতা বৈধ চুক্তি (বৈদেশিক বা স্থানীয়) পালনে ব্যর্থ হলে অথবা সন্তোষজনক কারণ ছাড়া চুক্তি পালনে ব্যর্থ হলে, প্রতিপক্ষকে বাজার মূল্যের পার্থক্য সমপরিমাণ মূল্য দিতে বাধ্য থাকবে।

লাইসেন্স গ্রহীতা পাটের আন্ডারগ্রেডিং, ওভারগ্রেডিং, আন্ডার-ইনভয়েসিং বা চোরাচালানি কাজে লিপ্ত হতে পারবে না। সরকার নির্ধারিত ন্যূনতম মূল্যের নিচে বা সর্বোচ্চ মূল্যের ওপরের দরে কোনও পাট বা পাটজাত দ্রব্য-পণ্য কেনা বা বেচা যাবে না, অথবা কেনা-বেচার প্রস্তাব করতে পারবে না। পাট বা পাটজাত দ্রব্য-পণ্যের কোনও লেনদেনের মধ্যস্থতা করতে পারবে না।

লাইসেন্স গ্রহীতা কোও ডিলার অব জুট বা বেলার বা প্রেস মালিক (কাঁচ্চা ও পাক্কা) হন, তা হলে তিনি সরকার নির্ধারিত রেটের চেয়ে অতিরিক্ত হারে ব্রোকারেজ, কমিশন, আড়তদারী, বা বেলিং ফি, যে ক্ষেত্রে যা প্রযোজ্য চার্জ করতে পারবে না। লাইসেন্স গ্রহীতা যদি কোনও বেলার হন, তাহলে পাট ব্যবসা পরিচালনার জন্য অবশ্যই একটি প্রতিষ্ঠিত অফিস থাকতে হইবে।

লাইসেন্স গ্রহীতা যদি সীমান্ত এলাকায় ব্যবসারত কোনও ডিলার অব জুট বা বেলার বা প্রেস মালিক হন, তাহলে সরকার যখন যেভাবে নির্দেশ দেবে, সেভাবে মহাপরিচালকের নির্দিষ্ট করা এলাকার এমন ব্যক্তি বা ব্যবসায়ীর কাছে তার কেনা সব পাট বিক্রি করবে এবং সব কেনাবেচা এবং মজুতের হিসাব রক্ষণাবেক্ষণ করে সরকার অথবা মহাপরিচালকের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে সাময়িক রিটার্ন দাখিল করতে বাধ্য থাকবে।

লাইসেন্স গ্রহীতা যদি কোনও প্রস্তুতকারক বা প্রেস মালিক (কাঁচ্চা বা পাক্কা) বা পাট বেলিং কেন্দ্রে পাট গুদাম ব্যবহারকারী হন, তাহলে তিনি আবশ্যিকভাবে ফায়ার সার্ভিস রুলস বা রেগুলেশনে যেভাবে নির্ধারণ করা হবে বা হয়েছে, সেই বিধান অনুসারে এবং সরকারের জারি করা নির্দেশনা অনুযায়ী, অগ্নিনির্বাপক সরঞ্জাম রাখতে বাধ্য হবেন।

পাটকলগুলো দেশে পাটের বস্তা পণ্যের অভ্যন্তরীণ চাহিদা আবশ্যিকভাবে পূরণ করে বিদেশে রফতানি করতে পারবে।

লাইসেন্স গ্রহীতা তার পাট মজুতের বিবরণ ও অবস্থান সম্পর্কে পাট অধিদফতরের স্থানীয় কার্যালয়কে মাসিকভিত্তিতে তথ্য সরবরাহ করতে বাধ্য থাকবে। প্রত্যেক প্রস্তুতকারক বা পাটকলকে আবশ্যিকভাবে রফতানিকারক লাইসেন্স নিতে হবে। পাকা বেলার লাইসেন্স ছাড়া পাটজাতদ্রব্য প্রস্তুতকারক বা রফতানিকারক লাইসেন্সের মাধ্যমে কোনও জুট মিল তাদের মিলের অপ্রয়োজনীয় কাঁচাপাট বা কাটিং কেনাবেচা করতে পারবে না।

লাইসেন্স হস্তান্তর করতে হলে লিখিতভাবে অবহিত করতে হবে। কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে। সরকার প্রয়োজনে নতুন শর্ত সংযোজন বিয়োজন পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করতে পারবে।

পাটজাত দ্রব্যাদি রফতানি খাতে প্রণোদনা/নগদ সহায়তা ভুর্তকির জন্য রফতারিযোগ্য পণ্যের তালিকা: পাট অধিদফতর রফতারিযোগ্য পটজাত চূড়ান্ত দ্রব্য/পাট সুতার তালিকা প্রস্তুত করবে। অধিকতর স্বচ্ছতা বজায় রাখতে রফতানির বিপরীতে প্রণোদনা, নগদ সহায়তা ভর্তুকি পরিশোধের আগে অ্যাসোসিয়েশনের সনদ করা পণ্যের গণগত মান যথার্থ কিনা, তা বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় বা পাট অধিদফতর যাচাই করবে।

জরিমানা ও সরকারি পাওনা আদায় করা হবে ২০১৭ সালের পাট আইন ও বিধিবিধান এবং ১৯৭৩ সালের দ্য পিডিআর অ্যাক্ট অনুসারে।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ