1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

ছাত্র রাজনীতির অবশ্যই দরকার আছে

নিউজ এডিটর : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
শুক্রবার, ১২ এপ্রিল, ২০২৪

গত কয়েকদিনে বুয়েটের বিভিন্ন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের দেওয়া নানা রকম বিবৃতি আর সাক্ষাৎকার পড়ে আমি একটা বিষয় বুঝলাম, যে তারা সবাই এত বেশি অহংবোধে সিক্ত যে কেউ পয়েন্টে কথা বলতে চান না, অথবা পারেন না। তাদের কমন কথা হলো বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি হওয়া উচিত নয়, কারণ বুয়েটের চরিত্র আলাদা। আইনগত দিক থেকে লিগ্যাল পারসন হিসেবে একটা ইনস্টিটিউটের আদৌ চরিত্র থাকতে পারে কিনা সে প্রসঙ্গে নাইবা গেলাম, কিন্তু এই হাস্যকর কথা বলার মাধ্যমে তারা বারবার নিজেদের যতটা আলাদা করতে চাচ্ছেন তার চাইতে বেশি অন্যদের তাচ্ছিল্য করছেন।

যত প্রাইম ইনস্টিটিউটই হোক না কেন, এই প্রবণতা শিক্ষার মৌলিক দর্শনের সাথে যায় না। বিশ্বের নামকরা বা হালের র‌্যাংকিং- প্রথম সারির হার্ভার্ড বা অক্সফোর্ড সবচাইতে বেশি সমালোচিত হয় যখন তাদের কোনো নীতি ‘আমরা স্পেশাল’ এই ভাব থেকে তৈরি হয়। এবং তার চাইতেও বড় কথা, এই আলাদা চরিত্র যায় হোক না কেন, এর সাথে বুয়েটের ছাত্র রাজনীতির কোনো যৌক্তিক সম্পর্ক নেই। আদালতে বা স্কুল পর্যায়ের বিতর্কেও এই খোঁড়া যুক্তি কাজ করবে না। বুয়েটে এবং দেশের অন্য যেকোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করা উচিত কিনা, এই বিষয়ে যে কথাটা কেউ বলেনি দেখলাম, তাহলো, ছাত্র রাজনীতি বলতে এখানে যা বুঝানো হচ্ছে তা আদৌ ছাত্র রাজনীতি নাকি?

ছাত্র রাজনীতির দরকার আছে। শিক্ষার্থীদের হলের পরিবেশ, খাদ্যের মান, ভর্তুকি ব্যবস্থা, ক্যাম্পাসের সুরক্ষা, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা, শিক্ষার্থীদের নানা রকম প্রয়োজন যেমন তাদের খণ্ডকালীন কর্মসংস্থান, শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় শিক্ষার্থীদের মতামত, institutional policy making এ শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্ব ইত্যাদি বিষয়ে নিজেদের হক আদায়ের ক্ষেত্রে ছাত্র রাজনীতির বিকল্প নেই।

করোনা চলাকালীন সময়ে ক্লাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরও যখন হার্ভার্ড একই টিউশন ফি নিচ্ছিল বা ব্রিস্টল যখন ছাত্রদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেয়ার পর এবং হলের সুযোগ সুবিধা কমিয়ে দেয়ার পরেও একই পরিমাণ ভাড়া আদায় করছিল, তখন ছাত্রদের ইউনিয়ন মিলে এসবের প্রতিবাদ করেছিল। হার্ভার্ডে যখন একজন ছাত্রী যৌন হয়রানির শিকার হয়েছিল, তখন হার্ভার্ডের ছাত্র সংগঠনগুলো মিলে মামলা করার জন্য আন্দোলন করেছিল। প্যালেস্টাইনে গত অক্টোবরে যুদ্ধ শুরু হলে আমেরিকার বিভিন্ন ছাত্রদের দলই এর প্রতিবাদ শুরু করে সবার আগে। ইউকেতে সরকার যখন ইসরায়েলকে অস্ত্র বেচতে চায় তখন বৃষ্টলের ছাত্রদের ইউনিয়ন স্মারকলিপি পাঠিয়ে ইউনিভার্সিটিকে ইসরায়েলপন্থী সকল কোম্পানির সাথে চুক্তি বাতিল করার দাবি জানায়। এগুলো ছাত্র রাজনীতি।

বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা কুপমণ্ডুকের মতো খালি পড়বে আর বিদেশে যাওয়ার এপ্লিকেশন লিখবে- এটাই যদি একটা ইনস্টিটিউটের চরিত্র হয় তাহলে চিন্তার বিষয়। ভালো গবেষণা করতে হলে কী ধরনের ইকো-সিস্টেম দরকার তার প্রস্তুতি নিতেও রাজনীতি সচেতন হতে হয়। আপনারা বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করতে চান? নাকি ছাত্রদের রাজনৈতিক স্বার্থের বলি হওয়া থেকে বাঁচাতে চান? দুইটা এক নয়।

(অর্পিতা শাম্স মিজান এর ফেসবুক থেকে)


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ