1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খান প্রসঙ্গে 

নিউজ এডিটর : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪

উনি এখন ভীষণ সমালোচিত। একেবারে রামায়ণ মহাকাব্যের খলনায়ক রাবণ। অপছন্দের তালিকায় প্রায় ইসরায়েলতুল্য। বক্স জেলিফিশের বিষে তার বদন ছাইভষ্ম হওয়া দেখতে চায় অনেকেই। যদিও দেশে এমন বা এরচেয়েও ভয়ংকর অপছন্দের লোক রয়েছেন। সেগুলো নিতান্তই রাজনৈতিক চরিত্র। তার বিষয়ে আমার দৃষ্টি ফেলার কারণ, নৈকট্য। এমন নয় যে তাকে আমি অনেক বেশি জানি। যেটুকু জানি সেটা প্রফেশনাল। আমার দেখার চোখ অবশ্যই আম জনতার মতো নয়। পার্থক্যও অনুমিত। একজন আইনজীবী ফেসবুকে তাকে নিয়ে একটি পোস্ট দিয়েছেন। স্বভাবতই সেখানে কিছু মন্তব্য ছিল। অতিমাত্রায় ব্যক্তিগত আক্রমণ এবং না বুঝে যা-তা মন্তব্য। দুটি ক্ষেত্রেই দৃষ্টিকটু রকমের বাড়াবাড়ি। যথারীতি শালীনতার সাথে প্রোটেস্ট করেছি। পোস্টের অথর দুর্বলতার দায় মেনেও নিয়েছেন।

কিন্তু একজন সাংবাদিক কেন এতটা অপছন্দের হবেন? অথচ যিনি কিনা দেশের সবচেয়ে সৃষ্টিশীল সাংবাদিক। তার প্রথাবিরোধী চিন্তা এবং কর্ম এই শিল্পটিকে ভিন্ন উচ্চতায় নিয়ে গেছে। বর্তমানে সাংবাদিকতার যে উচ্চতা সেটি একান্তই তার স্থাপিত মাইলস্টোন। মাত্র ২৪ বছর বয়সে তিনি জাতীয় পর্যায়ে সম্পাদক হয়েছিলেন। ২৭ বছর বয়সে একটি নিয়মিত জাতীয় সাপ্তাহিকের সম্পাদক এবং ৩২ বছর বয়সে একটি জাতীয় দৈনিকের সম্পাদক। ভাবা যায়! তার সাপ্তাহিক কাগজ সাংবাদিকতায় ভিন্নমাত্রা যোগ করেছিল। দূরদর্শি ও সৃষ্টিশীল একদল সংবাদকর্মী আমরা তখন দেখেছি। আর ৯০ সালে সম্পাদিত দৈনিক পত্রিকাটি দেশের রিপোর্টিংয়ে যে বৈচিত্র্য ও ভিন্নতা এনেছিল, সেটিই এখনো সবাই ফলো করছে। একই নিউজ পড়তে পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা ওল্টানোর প্রথা তিনি ডাস্টবিনে নিক্ষেপ করেছিলেন। ক্রিয়েটিভ নিউজ সাংবাদিকের নামে (বাইলাইন) ছাপানোর স্পর্ধা তার আগে কেউ কি দেখিয়েছেন? বরং এর আগে নিউজ ছাপা হতো স্টাফ রিপোর্টার আর ভিউজ যেত ছদ্মনামে। এছাড়া অল্পকথায় পুরো ঘটনা পাঠকের চোখাগ্রে তুলে দেওয়া। ভাষার ব্যবহার তীক্ষ্ণ কিন্তু শালীন।

মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী ভূমিকার জন্য পিতাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর দুঃসাহস তিনিই দেখিয়েছেন। নিজের পত্রিকায় রাজাকারের তালিকায় নিজের পিতার নাম ছাপানোর স্পর্ধা দেশে আর কেউ কি দেখিয়েছেন? বরং অনেক রাজাকারকে দেখি মুক্তিযোদ্ধার ভুয়া সনদে সং সাজতে। তার জীবনে তিনি যা যা করেছেন তেমন আর কেউ করতে পারেননি। তার আগে পরের কীর্তিমানদের অবদান এই তুলনায় খুবই সীমিত। নিরেট চাকরিজীবী। এখনকার যত জাদরেল সম্পাদক ও সাংবাদিক তাদের অনেককেই তিনিই তৈরি করেছেন।

ওই আইনজীবীর পোস্টের অশালীন কথাগুলো উল্লেখ করার অযোগ্য, তাই এড়িয়ে গেলাম। কিন্তু ওই পোস্টে প্রথিতযশা সিনিয়র সাংবাদিক সালেহ বিপ্লবকে নিয়েও আপত্তিকর কথা রয়েছে। যা আমার মনোকষ্টে ঘৃতাহুতির সামিল। শুধু বিএনপি ঘরানা পরিচয়ের কারণে এই মানুষটিকে কোনো ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান ঠাই দেয়নি। দিয়েছেন সেই সজ্জন সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খান। শুধু সালেহ বিপ্লব নয়, এমন অনেক সাংবাদিক আছেন যাদের জীবন নাঈমুল ইসলাম ব্যতীত অচল। রাজনৈতিক নিপীড়নের শিকার কিংবা বেঁচে থাকার আর কোথাও জায়গা না হলে কান্ডারি নাঈমুল ইসলাম খান।

তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি আওয়ামী লীগের পক্ষপাতিত্ব করেন। একসময় তাকে তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠও বলা হয়েছে। ওয়ান ইলেভেনের সময় তাকে আর্মির দালাল তকমা দেয়া হয়েছে। একজন মানুষ সবার দালাল হয় কী করে? আশ্চর্য ঠেকে না? হ্যাঁ তার একটি দুর্বলতা হয়তো থাকতে পারে। সেটি হচ্ছে তিনি সাংবাদিক অন্তঃপ্রাণ একজন মানুষ। কায়ক্লেশে এখানে ওখানে দৌড়ঝাঁপ করে একটা প্রতিষ্ঠানকে তৈরি করেন। সেখানে আমার মতো অনেক হাভাতাকে বুকে ঠাই দেন। রাজনৈতিক নিপীড়নে উপোস করে করে; রাজনৈতিক নেতাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে পরিত্যক্ত হয়েছেন, কোথাও ঠাই হয়নি।

এমন অসংখ্য পরিবারের আশ্রয়দাতা হতে গিয়ে প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনে নিজে প্রতিদিন হাজারো অপমানে দ্বগ্ধ হচ্ছেন। অপমান অপদস্ত হওয়ার কী কষ্ট কতো যে বেদনা সেটি তিনি ভালোই জানেন। ২০১৩ সালে ভাবিসহ তার ওপর হত্যার উদ্দেশে হামলাও হয়েছিল। তবুও তাকে বাঁচতে হচ্ছে। কারণ এই লোকটি আরও বড়ো বড়ো কষ্টের ভার বহন করছেন। অথচ কত নিষ্কর্মাকে দেখি শুদ্ধ করে দু’বাক্য লিখতে পারেন না, তাদের কতো কদর। তারাই সমাজে দান অনুদান আর খয়রাতের ওপর কি নান্দনিক জীবন কাটাচ্ছেন। প্রশ্ন হচ্ছে এই হিংসা-প্রতিহিংসার চূড়ান্ত কী? নোংরামির গভীরতাইবা কত? পছন্দ অপছন্দের ভিত্তি কি? অর্ডিনাল প্রাইয়োরিটি এপ্রোচ? না-কি কেবলই রাজনৈতিক? রাজনৈতিক প্রতিহিংসা হলে, দেশে কি আওয়ামী লীগ করা বা আওয়ামী লীগের পক্ষে কথা বলা শাস্তিযোগ্য অপরাধ? এজন্য একজন মানুষকে এতটা নোংরা ভাষায় গালমন্দ করতে হবে?

(সাংবাদিক নাসির উদ্দিন এর ফেসবুক টাইমলাইন থেকে)


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ