1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

সুনামগঞ্জে হারভেস্টার বিপ্লব: কৃষকের ঘরে সোনালী ধান

সুনামগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
মঙ্গলবার, ৯ মে, ২০২৩

সুনামগঞ্জে হাওরে এবার ধান কাটায় কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন ব্যাপক সাফল্য এনে দিয়েছে। বোরো মৌসুমে ইতিহাসের সর্বোচ্চ সংখ্যক যন্ত্রের ব্যবহার হয়েছে এ বছর। পুরো মৌসুমে হাওরে ধান কেটেছে সরকারি ভর্তুকিতে দেওয়া ১ হাজার ৩৮টি কম্বাইন্ড হারভেস্টার। যার মধ্যে ৭৭৬টি সুনামগঞ্জের ও ২৬২টি মেশিন এসেছে বাইরের জেলা থেকে।

এতে সবচেয়ে কম সময়ের মধ্যে হাওরের ধান কাটা সম্ভব হয়েছে। যার ফলে অন্য বছরের মতো পড়তে হয়নি শ্রমিক সংকটে। সাশ্রয় হয়েছে প্রায় ৭৫ কোটি টাকারও অধিক। আগামীতে কৃষিকে আরও আধুনিক করতে কৃষকদের বেশি করে যান্ত্রিক প্রশিক্ষণের আওতায় আনার কথা জানিয়েছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ।

সুনামগঞ্জে এবার ২ লাখ ২২ হাজার ৭৯৫ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ হয়েছে। আবাদকৃত জমিতে ১৩ লাখ ৫৩ হাজার মেট্রিক টন ধান উৎপাদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা টাকার অংকে প্রায় ৩ হাজার ৮০০ কোটি টাকা।

আবাদকৃত মোট জমির ৪০ শতাংশ অর্থাৎ ৮৯ হাজার ১১৮ হেক্টর ধান কাটা হয়েছে মেশিনের মাধ্যমে। মেশিনের মাধ্যমে ধান কর্তনে কৃষকদের প্রতি হেক্টরে খরচ হয়েছে ৯ হাজার থেকে সর্বোচ্চ সাড়ে ১০ হাজার টাকা। এদিকে সনাতন পদ্ধতিতে এক হেক্টর জমির ধান কেটে মাড়াই পর্যন্ত নিতে কৃষকের খরচ হয় ১৮ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা। কম্বাইন্ড হারভেস্টারে কাটার ফলে কৃষকের সাশ্রয় হয়েছে হেক্টর প্রতি ৯-১০ হাজার টাকা। মোট হিসেব করলে সাশ্রয়ের পরিমাণ ৭৫ কোটি টাকার উপরে বলে জানায় কৃষি বিভাগ।

অন্যান্য বছর বোরো মৌসুম আসলে হাওরে শ্রমিক সংকট দেখা দিতো। শ্রমিক সংকট কাটাতে সরকারি-বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় বাইরের জেলা থেকে শ্রমিক আনা হতো। ধান কাটার জন্য বন্ধ করে দেওয়া হতো স্থানীয় বালু মহালগুলো। যেন বালুমহালের শ্রমিকেরা ধান কাটায় নিয়োজিত হতে পারে। তবে এ বছরের চিত্র পুরোটাই ভিন্ন। হাওরে তেমন কোনো শ্রমিক সংকট ছিল না। উল্টো দ্রুত ধান কেটে সময় ও অর্থের সাশ্রয় হয়েছে। আর এর সবই অনুকূল আবহাওয়া ও যান্ত্রিকতার কারণে সম্ভব হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও কৃষকরা।

শান্তিগঞ্জ উপজেলার কৃষক এমদাদ আলী বলেন, কেদার প্রতি ভাগালু (ধান কাটার শ্রমিক) দিয়ে ধান কাটালে ২ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার টাকা খরচ আছে। তারপর আবার সেই ধান মাড়াই করতে ধানের ভাগ নয়তো টাকা দেওয়া লাগে। আর মেশিনে ধান কাটলে সব কাজ একসঙ্গেই হয়ে যায়। খরচ আসে সর্বোচ্চ দুই হাজার টাকা। আমার ১৩ কেয়ার জমিতে ২০০ মনের মতো ধান পেয়েছি। মেশিনের কারণে কৃষকের উপকার হয়েছে।

একই উপজেলার কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, এ বছর হাওরে বাম্পার ফলন হয়েছে। ২৮, ২৯ ধান বাদে অন্যান্য ধান কেয়ারে ২০ মন পেয়েছি আমরা। ২৮, ২৯ একেবারে জ্বলে নষ্ট হয়ে গেছে। বাকি ধান কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিনের কারণে দ্রুত কাটাও শেষ হয়ে গেছে।

সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিমল চন্দ্র সোম বলেন, এবার সর্বোচ্চ সংখ্যক হারভেস্টার মেশিন দিয়ে হাওরে ধান কাটা হয়েছে। মেশিনে ধান কাটার সময় কোনো সমস্যার সম্মুখীন হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। এর ফলে হাওরে শতভাগ ধান কাটা শেষ। হাওরের বাইরের কিছু জমি বাকি আছে। মেশিনে ধান কাটার ফলে পুরো জেলায় কৃষকদের প্রায় ৭৫ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে। আগামীতে কৃষিকে যন্ত্র নির্ভর ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে কৃষকদের আরও বেশি করে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ