1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

‘স্মার্ট উন্নত বাংলাদেশ মডেল’ ও আমাদের অভীষ্ট

ড. শামসুল আলম : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
শুক্রবার, ১১ আগস্ট, ২০২৩

দিনবদলের সনদ নামক নির্বাচনী ইশতেহারের মাধ্যমে বর্তমান সরকার ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়ে দেশ শাসনের ভার হাতে নেয়। সেই নির্বাচনী ইশতেহারটি পরবর্তী সময়ে রূপকল্প ২০২১ (২০১০-২১) ও ডিজিটাল বাংলাদেশের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে। ২০০৯ সালে যখন সরকার দায়িত্ব নেয়, তখন আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থা ছিল খুব প্রতিকূল। সন্ত্রাসবাদ, দুর্নীতি, অদক্ষতা, অব্যবস্থাপনা সর্বত্র বিরাজমান ছিল।

মূল্যস্ফীতি ছিল দুই অঙ্কের ঘরে, তদুপরি বিদ্যুতের চরম ঘাটতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ ও কৃষি খাতে স্থবিরতা ছিল। সে অবস্থা থেকে দেশকে ক্ষুধা, দারিদ্র্য, নিরক্ষরতা দূর করার জন্য রূপকল্প ২০২১ এবং প্রথম প্রেক্ষিত পরিকল্পনা (২০১০-২১) প্রণয়ন করা হয়, যার ভিত্তিতে ষষ্ঠ (২০১১-১৬) ও সপ্তম (২০১৬-২০) পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণীত হয় এবং এর মধ্য দিয়েই শুরু হয় নয়া এক জাতীয় পরিকল্পনা যুগের। এ সময় সরকারের কাছে পাঁচটি প্রাধিকার বিষয় ছিল—অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির ওপর নিয়ন্ত্রণ, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ; তেল, গ্যাস, কয়লা, জ্বালানির অর্থনৈতিক ব্যবহার নিশ্চিতকরণ, দারিদ্র্য ও অসমতা দূরীকরণ, সুশাসন প্রতিষ্ঠা।

ডিজিটাল বাংলাদেশ ছিল চারটি স্তম্ভের ওপর গঠিত—ডিজিটাল বাংলাদেশ, মানবসম্পদ উন্নয়ন, তথ্য-প্রযুক্তির বিকাশ, শিল্পের প্রসার, নাগরিকদের সংযুক্তি বাড়ানো।

ডিজিটাল বাংলাদেশের মূল দর্শন হলো গণতন্ত্র, জনগণের অধিকার, স্বচ্ছতা, জবাবদিহি, সরকারি সেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যমে জনগণের জীবনমানের উন্নয়ন করা এবং এর ফলে বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করা। সরকারের সামনে ছিল অসীম চ্যালেঞ্জ। ডিজিটাল বাংলাদেশ সে সময়ে অনেকের কাছে হাস্যকর বিষয় ছিল।

বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংকের মানদণ্ড অনুযায়ী ২০১৫ সালে ‘নিম্ন আয়ের’ গণ্ডি পেরিয়ে ‘নিম্নমধ্যম আয়ের দেশে’ পরিণত হয়।

২০১৮ সালে বাংলাদেশ জাতিসংঘের মানদণ্ডে ‘স্বল্পোন্নত দেশ’ থেকে ‘উন্নয়নশীল দেশে’ পরিণত হওয়ার সব শর্ত পূরণ করে। বিবেচিত সূচক হলো—মাথাপিছু আয়, মানবসম্পদ সূচক এবং অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচক। সর্বশেষ বাংলাদেশ ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জাতিসংঘের এসব শর্ত তিন বছর পর দ্বিতীয়বার পূরণ করেছে। কভিড-১৯-এর কারণে সব দিক বিবেচনা করে অন্য যেসব দেশ উত্তরণের শর্ত পূরণ করেছে, তারা সম্মিলিতভাবে উত্তরণের জন্য আরো দুই বছর সময় চেয়েছে অর্থাৎ আনুষ্ঠানিক ঘোষণা পাওয়া যাবে ২০২৪-এর পরিবর্তে ২০২৬ সালে।

বাংলাদেশের অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ দিকটি হলো প্রতি দশকে গড়ে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ১ শতাংশ বা তার কিছু বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।

এর ফলে মাথাপিছু আয়ও বেড়ে চলেছে। তবে গত দশকে (২০১০-২০) মাথাপিছু আয় গড়ে আড়াই গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা বিগত কোনো দশকে সম্ভব হয়নি। বাংলাদেশ যে ধীরে ধীরে একটি উদীয়মান অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত হচ্ছে তা বিশ্বের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণ থেকে বোঝা যায়। হংকং সাংহাই ব্যাংকিং করপোরেশনের প্রক্ষেপণ বাংলাদেশ ২০৩০ সালের মধ্যে ২৬তম বৃহৎ অর্থনীতিতে পরিণত হবে। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বহুজাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইউবিএসের মতে, বাংলাদেশ ২০৫০ সালে ১২তম বৃহৎ অর্থনীতিতে পরিণত হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মতে, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন বাংলাদেশের ভাবমূর্তি অন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবে। দেশের শক্তিমত্তা ও আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেবে। বাংলাদেশ এখন এশিয়ার একটি সফলতার গল্প হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। অনেকে বাংলাদেশকে ‘এশিয়ান টাইগার’ নামেও অভিহিত করছে।

গত দশকে কভিড-১৯-এর আগ পর্যন্ত বাংলাদেশ বিশ্বে দ্রুততম বর্ধনশীল অর্থনীতিগুলোর মধ্য অন্যতম ছিল। পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশ ভারত ও পাকিস্তানকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশ মাথাপিছু আয় ও সামাজিক সূচকগুলোর মধ্যে প্রায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এখনো এগিয়ে রয়েছে। এর সঙ্গে রয়েছে এমডিজি ক্ষেত্রে প্রভূত সাফল্য ও দারিদ্র্য নিরসনে অসামান্য অর্জন। ২০১১-১৯ এই সময়ে বাংলাদেশের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রতিবছর গড়ে ৮.৬ শতাংশ, অন্যদিকে গোটা বিশ্বে তা বেড়েছে মাত্র ০.৪ শতাংশ। বাংলাদেশ ঋণ জিডিপি অনুপাত ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশের মধ্যে রাখতে সক্ষম হয়েছে, অন্যদিকে ভারত ও পাকিস্তানের ক্ষেত্রে তাদের দেশজ আয়ের ৯০ শতাংশের কাছাকাছি চলে এসেছে। পাকিস্তানের সঙ্গে তুলনায় বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালে পাকিস্তান মাথাপিছু আয়ে বাংলাদেশের চেয়ে ৭০ শতাংশ বেশি ধনী ছিল, আর বাংলাদেশ এখন ৪৫ শতাংশ বেশি ধনী। এ সবই বাংলাদেশে পরিকল্পিত নয়া উন্নয়ন মডেলের সাফল্য।

নিউ ইয়র্কভিত্তিক ম্যাগাজিন নিউজ উইক বাংলাদেশকে নিয়ে কয়েকটি আলাদা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তার মধ্যে একটি হলো ‘অদম্য বাংলাদেশ’। বাংলাদেশের অগ্রগতি অসাধারণ উল্লেখ করে বলা হয়েছে, প্রক্ষেপণ থেকে দেখা যাচ্ছে এটি সবেমাত্র শুরু। সাম্প্রতিক দশকে বাংলাদেশ যে অভাবনীয় অগ্রগতি লাভ করেছে তাতে যারা এখনো অতীতের গণ্ডিতে আবদ্ধ আছে, তাদের বাস্তবতা মেনে আবার চিন্তা করতে বলছে ম্যাগাজিনটি। অন্য আরো একটি প্রতিবেদনে ম্যাগাজিনটি বলছে, বাংলাদেশ বিশ্বের মধ্য অন্যতম গতিশীল ও সম্ভাবনাময় দেশ। ২০০৯ সালে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে দ্রুত রূপান্তর ঘটেছে এবং আগামী অর্ধশতাব্দীর মধ্যে বাংলাদেশ শুধু আঞ্চলিক পাওয়ার হাউস নয়, বরং বৈশ্বিক পাওয়ার হাউস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

প্রথম প্রেক্ষিত পরিকল্পনা (২০১০-২১)-এর মাধ্যমে ‘রূপকল্প-২০২১’-এর সফল বাস্তবায়ন শেষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে বর্তমান সরকার প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০৪১ গ্রহণ করেছে। এই রূপকল্প ২০৪১ (২০২১-৪১) বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ‘রূপকল্প-২০৪১ বাস্তবে রূপায়ণ : বাংলাদেশের প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১-৪১’ প্রণয়ন করা হয়েছে। এই প্রেক্ষিত পরিকল্পনার দুটি প্রধান অভীষ্ট হচ্ছে—ক. ২০৩১ সালের মধ্যে ‘উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে’ পদার্পণ ও চরম দারিদ্র্য নিরসন এবং খ. ২০৪১ সালের মধ্যে উচ্চ আয় ও দারিদ্র্যমুক্ত দেশে পরিণত হওয়া। বস্তুত প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১-এর সফল বাস্তবায়নের ভিত্তি করে প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০৪১ প্রণয়ন করা হয়েছে। এ ছাড়া বর্তমান বিশ্বের বিভিন্ন উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশ ও উচ্চ আয়ের দেশগুলো যে উন্নয়ন পথ পাড়ি দিয়েছে, তাদের ইতিবাচক অভিজ্ঞতা বিবেচনায় নিয়ে সে পথে এগিয়ে যেতে চায় বাংলাদেশ।

প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০৪১-এর মূল অভীষ্টগুলো হলো—২০৩১ সালের মধ্যে চরম দারিদ্র্যের অবসান এবং ২০৪১ সালের মধ্যে দারিদ্র্য ৩ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনা, ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উচ্চ আয়ের দেশের মর্যাদা অর্জন, শিল্পায়ন ও কাঠামোগত রূপান্তর, কৃষিতে মৌলিক রূপান্তরের মাধ্যমে পুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, ভবিষ্যতের সেবা খাত ডিজিটাল অর্থনীতি, নগরের বিস্তার, দক্ষ জ্বালানি ও টেকসই অবকাঠামো, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় স্থিতিশীল বাংলাদেশ বিনির্মাণ ও দক্ষতাভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণ। এই অভীষ্টগুলো নির্ধারিত সময়ে অর্জনের জন্য বাংলাদেশকে এমন এক ত্বরান্বিত গতির পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে এগিয়ে যেতে হবে, যা হবে দ্রুত ও রূপান্তরধর্মী। কৃষি, শিল্প ও বাণিজ্য, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য পরিচর্যা, পরিবহন, যোগাযোগসহ সব ক্ষেত্রে আমাদের গতিশীলতা বজায় রাখতে হবে। সবার জন্য, বিশেষ করে দরিদ্র ও অরক্ষিত জনগোষ্ঠীর মধ্যে প্রবৃদ্ধির সুফল যথাযথভাবে বণ্টনের ওপর গুরুত্বারোপ করে দ্রুত প্রবৃদ্ধি ও রূপান্তরের সামঞ্জস্য বিধান করতে হবে। প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০৪১ চারটি প্রাতিষ্ঠানিক স্তম্ভের ওপর নির্ভরশীল, যার সুফলভোগী হবে জনগণ এবং এরাই হবে প্রবৃদ্ধি ও রূপান্তর প্রক্রিয়ার প্রধান চালিকাশক্তি। এগুলো হলো—১. সুশাসন, ২. গণতন্ত্রায়ণ, ৩. বিকেন্দ্রীকরণ এবং ৪. মানবসম্পদে সক্ষমতা বৃদ্ধি। বস্তুত এই চারটি ভিত্তির ওপর স্থাপিত হতে হবে উন্নত জাতি হিসেবে সমৃদ্ধির পথে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা।

ডিজিটাল বাংলাদেশের ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হওয়ার জন্য সরকারের এখন লক্ষ্য হচ্ছে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণ করা। ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ একটি ভবিষ্যদ্বাদী বাংলাদেশের চেয়ে বেশি কিছু। এটি ফাইভজি ইন্টারনেটের চেয়ে বেশি, শতভাগ স্মার্টফোন থাকার চেয়ে বেশি, শতভাগ উচ্চগতির ইন্টারনেট থাকার চেয়ে বেশি, ক্যাশহীন সোসাইটি হওয়ার চেয়ে বেশি। এটি হলো নাগরিকদের সাধারণ জনগণের প্রতি আরো অন্তর্ভুক্তিশীল হওয়া। এর ভিত্তি চারটি—স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট সরকার, স্মার্ট অর্থনীতি ও স্মার্ট সমাজ। স্মার্ট বাংলাদেশ হলো বাংলাদেশের প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের চূড়ান্ত রূপরেখা, যা শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অবকাঠামো, প্রযুক্তি ও গবেষণায় বিনিয়োগের মাধ্যমে অর্জন করা হবে। ডিজিটাল সংযোগ, উপাত্তভিত্তিক সেবা পরিচালন, টেকসই অবকাঠামো, উদ্ভাবনীয় প্রযুক্তি, নাগরিককেন্দ্রিক সেবা, স্মার্ট চলাচল ব্যবস্থা, শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়ন, ব্যক্তির নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা রক্ষা প্রভৃতিতে প্রভূত উন্নতি সাধন হবে। স্মার্ট বাংলাদেশে সব আদান-প্রদান হবে অনলাইনে।

তবে স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে কিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—দুর্নীতি কমানো, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা, যুবদের কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ, আয় অসমতা ও বৈষম্য হ্রাস, গবেষণা উন্নয়ন, ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠন এবং এর মধ্য দিয়ে ‘মধ্যম’ আয়ের ফাঁদ অতিক্রম। স্মার্ট  ও উন্নত বাংলাদেশে মাথাপিছু আয় হবে ১২ হাজার ৫০০ ডলারের ওপর, দারিদ্র্য থাকবে ৩ শতাংশের নিচে, চরম দারিদ্র্য থাকবে শূন্যের কোঠায়, রাজস্ব জিডিপির অনুপাত হবে ২০ শতাংশের ওপর, বিনিয়োগ জিডিপির অনুপাত হবে ৪০ শতাংশের বেশি এবং সব ধরনের সেবা থাকবে জনগণের দোরগোড়ায়।

আমাদের নয়া জাতীয় পরিকল্পনার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো জলবায়ুর পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলা করে সমুদ্রভিত্তিক নীল অর্থনীতিকে সমুদ্র বাণিজ্য ও সমুদ্রসম্পদ ব্যবহারে দেশকে সমৃদ্ধ ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করা। শতাব্দীব্যাপী এই পরিকল্পনাটি হচ্ছে বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০।

লন্ডনভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর ইকোনমিকস অ্যান্ড বিজনেস রিসার্স (সিইবিআর) প্রতিবছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অর্থনীতি নিয়ে প্রক্ষেপণ করে, যা ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক লীগ টেবিল’ নামে পরিচিত। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক লীগ টেবিলের ২০২৩ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০৩১-৩২ সালেই বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার ট্রিলিয়ন ডলার হবে এবং ২০২২ সালের ৩৪তম অবস্থান থেকে ১৪ ধাপ এগিয়ে ২০৩৭ সালে ২০তম বৃহত্তম অর্থনীতি হবে। যদি বর্তমান মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে এনে উপরোল্লিখিত চ্যালেঞ্জগুলো সঠিকভাবে মোকাবেলা করা যায়, তবে বাংলাদেশ উদীয়মান ব্যাঘ্রশাবক থেকে এশিয়ার নতুন টাইগারে পরিণত হবে ২০৩০-এর দশকে। পরিকল্পনাভিত্তিক প্রণীত উন্নয়ন মডেল অনুসরণে ২০৪১ সালের অভীষ্ট উচ্চ আয়ের দেশের পথে স্মার্ট বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা দুরন্ত গতিতেই এগিয়ে যাবে—এই প্রত্যাশা থেকে বিচ্যুত হওয়ার কারণ দেখি না, যদি না শাসনপরিক্রমায় কোনো অপ্রত্যাশিত পরিবর্তন না ঘটে।

লেখক: ড. শামসুল আলম – সামষ্টিক পরিকল্পনাবিদ, একুশে পদকপ্রাপ্ত, অর্থনীতিবিদ ও প্রতিমন্ত্রী, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়।

সূত্র: কালের কন্ঠ 


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ