বছরের প্রথম দিন পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি নিজ মাতৃভাষার বই পেল পার্বত্য অঞ্চলের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীরা। চাকমা মার্মা ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের ৩২ হাজার ৬৪৯ জন শিক্ষার্থীকে দেওয়া হয়েছে নিজ মাতৃভাষার বই। বছরের প্রথম দিন নিজ মাতৃভাষার বই পেয়ে খুশি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
পার্বত্য জেলা বান্দরবানে চাকমা মারমা ত্রিপুরা বম খুমী খেয়াং লুসাইসহ রয়েছে ১১টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বসবাস। এসব ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সম্প্রদায়ের প্রত্যেকের রয়েছে নিজস্ব কৃষ্টি কালচার ও ভাষা। কিন্তু সংরক্ষণের অভাবে এসব ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর অনেক সম্প্রদায়ের বিভিন্ন সংস্কৃতি ও ভাষা বিলুপ্তির পথে। তাই পার্বত্য অঞ্চলে বসবাস কারী বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সম্প্রদায়ের ভাষা ও বর্ণমালা সংরক্ষণের লক্ষ্যে ২০১৭ সাল থেকে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বিভিন্ন সম্প্রদায়ের নিজ নিজ মাতৃভাষার বই পুস্তকে লিপিবদ্ধ করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠ্য বই হিসেবে বিতরণ করে আসছে।
তারই ধারাবাহিকতায় বছরের শুরুতে বান্দরবানের সাতটি উপজেলায় পাঠ্য বই বিতরণের পাশাপাশি পার্বত্য অঞ্চলে বসবাসকারী চাকমা মার্মা ও ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীদের নিজ মাতৃভাষার বই ও বিতরণ করা হচ্ছে। পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি নিজ মাতৃভাষার বর্ণমালা চিনতে ও জানতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ মাতৃভাষার বইও পড়ানো হচ্ছে। আর বছরের প্রথম দিন পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি নিজ মাতৃভাষার বই পেয়ে খুশি শিক্ষার্থীরা।
এবছর জেলার সাতটি উপজেলায় ২৩ হাজার ২৬৮ টি মারমা মাতৃভাষার বই ,৭ হাজার ৯৫টি ত্রিপুরা মাতৃভাষার বই এবং ২ হাজার ২৬৬টি চাকমা ভাষার বই বিতরণ করা হয়েছে। আর শিক্ষার্থীদের নিজ মাতৃভাষার বর্ণমালা শিখাতে সপ্তাহে একদিন পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি বিদ্যালয়ে নিজ মাতৃভাষার এসব বই পড়ানো হয় বলে জনান শিক্ষকরা।
নিজেদের ভাষা ও বর্ণমালা শিখতে ও সংরক্ষণে সরকারের এ উদ্যোগ প্রশংসনীয় হলেও পর্যাপ্ত দক্ষ শিক্ষক না থাকায় শিক্ষার্থীরা এসব বই সঠিকভাবে পড়তে পারছে না বলে জানায় অভিভাবকরা। তাই বিদ্যালয়ে মাতৃভাষায় পাঠদানের জন্য প্রশিক্ষিত শিক্ষক নিয়োগ দানের দাবি জানায় তারা।
তবে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সফিউল আলম জানান, বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক সংকট এবং দক্ষ ও প্রশিক্ষিত শিক্ষক না থাকায় সব বিদ্যালয়ে পাঠদান সম্ভব হচ্ছে। তবে আমরা শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছি ভবিষ্যতে এ সমস্যার সমাধান হবে।