1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

দৃশ্যমান বহুল প্রত্যাশিত কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল

ডেস্ক রিপোর্ট : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
বুধবার, ৩ জানুয়ারি, ২০২৪

গত কয়েক দশকের মধ্যে জেলায় সবচেয়ে বড় উন্নয়ন প্রকল্প হলো কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ এবং ৫০০ শয্যাবিশিষ্ট নির্মাণাধীন হাসপাতাল। এটি কুষ্টিয়া রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কসংলগ্ন প্রায় ২০ একর জমির ওপর নির্মিত। নির্মাণাধীন হাসপাতালের সাততলা ভবনে ৫০০ শয্যার পাশাপাশি ৮৮টি কেবিন, ২৩ শয্যার সিসিইউ, ২০ শয্যার আইসিইউ সেবা থাকছে। এ ছাড়া জরুরি সেবা দিতে আলাদা আরও ১৩০ শয্যার ব্যবস্থা থাকছে। কলেজ ও হাসপাতাল মিলে থাকছে ২১টি বড় লিফট। ১৬টি অপারেশন থিয়েটার, সিসিইউ-আইসিই্উ, অর্থোপেডিক, নিউরোলজি, নেফ্রোলজি, কার্ডিওলোজি, গাইনী, চক্ষু ও নাক,কান-গলাসহ অন্যান্য বিভাগের জন্য আমদানী এমআরআই, সিটি স্ক্যান, আলট্রাসাউন্ড ও এক্স-রে মেশিনসহ বিদেশ থেকে আমদানি চাহিদার ৬০ ভাগ কোটি কোটি টাকার যন্ত্র-মেডিকেল সরঞ্জাম স্থাপনের কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে।

জেলাবাসীর দীর্ঘ প্রতীক্ষিত এবং বহুল প্রত্যাশিত এই প্রকল্প দুটি অবশেষে দৃশ্যমান হয়েছে। এর ফলে নানা রকম সুফল ভোগ করবে এই অঞ্চলের মানুষসহ আশপাশের কয়েকটি জেলার মানুষ। শুধু স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়ন নয় মেডিকেল কলেজটি পূরণ করবে এই এলাকার শত শত শিক্ষার্থীর চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন। অন্যদিকে মেডিকেল কলেজের সঙ্গেই নির্মাণাধীন ৫০০ শয্যার হাসপাতালটির কারণে এই এলাকার অনেক বেকার যুবকের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করবে।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০১১ সালে কুষ্টিয়া শহরে ম্যাটসে অস্থায়ীভাবে মেডিকেল কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম চালু হয়। ২০১২ সালের ৩ মার্চ একনেকে সভায় অনুমোদন দেওয়া হয় কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল নির্মাণ প্রকল্পের। পরে নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে মেডিকেল কলেজটি অস্থায়ী ভবন থেকে স্থানান্তরের পর ২০২২ সালের ৩ মার্চ মূল ক্যাম্পাসে একাডেমিক-প্রশাসনিক কার্যক্রম চালু হয়। সেখানে ছয়তলাবিশিষ্ট একাডেমিক ভবন, চারতলা করে দুটি হোস্টেল, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য তিন ও দুই তলাবিশিষ্ট ডরমিটরি, মসজিদসহ আরও কিছু ভবন হস্তান্তর করা হয়েছে। বর্তমানে কলেজে অনানুষ্ঠানিকভাবে সবকিছু চলছে। ইতোমধ্যে হাসপাতালের আংশিক চিকিৎসা কার্যক্রমের চালু রয়েছে। বহির্বিভাগ থেকে দেওয়া হচ্ছে চিকিৎসাসেবা।

কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এ অঞ্চলের মানুষসহ আশপাশের মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, মাগুরা এবং রাজবাড়ী জেলার মানুষের জন্য নতুন দিগন্ত ও উন্নত স্বাস্থ্যসেবা মাধ্যম হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। ইতিমধ্যে এ কলেজের সম্পূর্ণ কাজ সমাপ্তি হয়েছে এবং ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে হস্তান্তর করা হবে বলেও জানান তারা।

গণপূর্ত কার্যালয় সূত্র জানায়, ২০১২-১৩ অর্থবছরে ২৭৫ কোটি টাকা প্রাক্কলন ব্যয় ধরে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল নির্মাণ প্রকল্পটি অনুমোদন পায়। কুষ্টিয়া শহরের কালিশংকরপুর মৌজায় ২০ একর জমিতে প্রকল্পের নির্মাণকাজ শুরু হয়। বিভিন্ন সময়ে ৫৩টি প্যাকেজে ৫২ জন ঠিকাদার কাজটি করতে থাকেন। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও শেষ হয়নি। তখন অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় ২০১৮ সাল পর্যন্ত নানা জটিলতায় কাজ বন্ধ থাকে। ২০১৮ সালে প্রথম দফায় কাজের মেয়াদ ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। নির্মাণের ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৬১১ কোটি টাকা। কিন্তু এ সময়েও কাজ শেষ করতে পারেননি ঠিকাদারেরা। দ্বিতীয় দফায় ২০২১ সালের ৫ অক্টোবর পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়। এবার ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৬৮২ কোটি টাকা, যা প্রথমে ধরা ব্যয় থেকে ৪০৭ কোটি টাকা বেশি। ওই মেয়াদেও কাজ শেষ না হওয়ায় তৃতীয়বারের মতো চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসসংলগ্ন এলাকায় ইতোমধ্যে গড়ে উঠেছে মার্কেট, যেখানে ওষুধের দোকানের পাশাপশি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, খাবার হোটেল, ক্যাফেসব বিভিন্ন ধরনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। আবার বাণিজ্যিকভাবে ঢাকা রোড এবং এর পাশের হাউজিং লাহিনী বটতলা, মোল্লাতেঘুরিয়া এলাকার গুরুত্ব বেড়েছে কয়েক গুণ। বেড়েছে সেখানকার জমির দাম এবং বাসাভাড়া।

কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান খান বলেন, এখানে ১ বছর মেয়াদী হাতে-কলমে শিখনসহ (ইন্টার্নশিপ) স্নাতক পর্যায়ের ৫ বছর মেয়াদি এম.বি.বি.এস শিক্ষাক্রম চালু রয়েছে। যাতে প্রতিবছর ১০০ জন শিক্ষার্থীকে ভর্তি করা হয়ে থাকে। এখানে বর্তমানে মোট ৩২৫ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। লেখাপড়ার জন্য রয়েছে মনোরম পরিবেশ। এই প্রতিষ্ঠানটিতে রয়েছে তাদের জন্য অভিজ্ঞ শিক্ষক এবং অত্যাধুনিক যন্ত্রাংশ। এর ফলে প্রতিবছর সাফল্যের সঙ্গে যেসব শিক্ষার্থী চিকিৎসক হয়ে বের হচ্ছে, তারা চিকিৎসা ক্ষেত্রে তাদের সর্বোচ্চ সেবাটাই দিতে পারবেন।

প্রকল্প পরিচালক সরওয়ার জাহান বলেন, গত অর্থবছরের জুনে অন্তত ৯০ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি ও আসবাব কেনা হয়। এসব যন্ত্রপাতির মধ্যে আছে অত্যাধুনিক এমআরআই মেশিন, সিটিস্ক্যান, এক্স-রে মেশিন, আলট্রাসনোগ্রাম মেশিন এবং অস্ত্রোপচারকক্ষে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি। যা ইতিমধ্যে ভবনের ভেতর সেটআপ করা হয়েছে। খুব দ্রুত হাসপাতালের পরিচালকের নিকট এসব যন্ত্রপাতি হস্তান্তর করা হবে। বর্তমানে বহির্বিভাগ সেবা চালু আছে কিন্তু আপাতত কোনো ডায়াগনসিস করানো হচ্ছে না। হস্তান্তরের পর আশা করছি সকল সেবা চালু হয়ে যাবে।

কুষ্টিয়া গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নুরুজ্জামান হোসেন জাহির বলেন, প্রকল্পের শতভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। প্রকল্প পরিচালকের মাধ্যমে হাসপাতালের পরিচালকের নিকট যথা সময়ে হস্তান্তর করা হবে। তবে আশা করছি ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে হস্তান্তরের কাজ সম্পন্ন হবে।

কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি রাশেদুল ইসলাম বিপ্লব বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুউল আলম হানিফ এমপির অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে এ জেলার মানুষের দীর্ঘদিনের একটি স্বপ্নপূরণ হয়েছে। আমরা একটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল উপহার পেয়েছি, এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও হানিফ এমপি নিকট কুষ্টিয়াবাসী চিরকৃতজ্ঞ থাকবো। এখান থেকে মানুষ উন্নত চিকিৎসাসেবা পাবে। যা কুষ্টিয়াকে আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ