1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

টিআইবির প্রতিবেদনের সত্যতা কতটুকু!

ডেস্ক রিপোর্ট : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
সোমবার, ২৯ জানুয়ারি, ২০২৪

বিভিন্ন বাধা এবং দেশি ও বিদেশি ষড়যন্ত্রকে উড়িয়ে দিয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়ে গেল। জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহন এবং নানা দল মতের প্রার্থীদের অংশগ্রহনে উন্মুক্ত পরিবেশে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ একটি নির্বাচন প্রত্যক্ষ করল বিশ্ব। কিন্তু সম্প্রতি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে টিআইবির প্রতিবেদনে আসল তথ্যের বদলে মতামত দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করেছে। তথ্য এবং মতামতের মধ্যে পার্থক্য আছে। তারা মতামতকে তথ্য হিসেবে উপস্থাপন করেছে।

টিআইবির প্রতিবেদনটিকে ‘গবেষণা প্রতিবেদন’ বলে দাবি করা হলেও তা কোনো গবেষণা নয়। কেননা, গবেষণা করতে যেসব পদ্ধতি প্রয়োগ করতে হয়, তা এখানে প্রয়োগ করা হয়নি। এমনকি গবেষণা বিষয়ক কোন পদ্ধতির বর্ণনাই উল্লেখ করেনি প্রতিবেদনটিতে। কিন্তু সচেতন মানুষ মাত্রই জানেন, গবেষণার পদ্ধতি এবং প্রয়োগের বিষয়ে প্রতিবেদনে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরা বাঞ্ছনীয়। নইলে প্রতিবেদনটি সচেতন মানুষের সংশয় তৈরি করতে পারে।

টিআইবি রিপোর্টে সুনির্দিষ্ট কোনো ঘটনা বা তথ্য না দিয়ে রায় দিয়েছে, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা সবাই নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন। কিন্তু বাস্তবতা হলো নির্বাচনী প্রচারণা ও আচরণবিধি পর্যবেক্ষণ করে প্রয়োজনে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। আচরণবিধি লঙ্ঘনের জন্য ইসি ৭৬২ বার শোকজ করেছে, যার মধ্যে ৩০০ বার ছিল আওয়ামী লীগের শতাধিক সংসদ সদস্যকে। এছাড়াও প্রার্থী বা তাদের সমর্থকদের বিরুদ্ধে ৬৩টি মামলা হয়েছে।

সংস্থাটির মাপকাঠি মাত্র ৫০টি নির্বাচনী আসন। সেগুলোর কতগুলো ভোটকেন্দ্রে তারা পর্যবেক্ষণ চালিয়েছে, তার উল্লেখ নেই। নির্বাচনের দিন ইসিকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে দেখা গেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীকে (চট্টগ্রাম-১৬) অযোগ্য ঘোষণা করে ইসি। এটি দেশের নির্বাচনের ইতিহাসে একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। একটি ভোট কেন্দ্র স্থগিত থাকায় ময়মনসিংহ-৩ (গৌরীপুর) আসনের ফলাফলও স্থগিত করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।

নির্বাচন কমিশন প্রায় প্রতি দুই ঘণ্টা পরপর হালনাগাদ তথ্য পেয়েছে। এর মানে হল যে ২৭ শতাংশ ভোটারের তথ্য, যা বিকাল ৩টায় বলা হয়েছে, তা কমপক্ষে দুই ঘণ্টা পুরনো ছিল। অতএব ৪১ শতাংশ ভোট পড়ার বিকাল ৪টায় আপডেট হওয়া তথ্যের সঙ্গে আগের তথ্যের তিন ঘন্টার ব্যবধান ছিল। নির্বাচনের দিন সকালে অতিরিক্ত ঠান্ডা থাকার ফলে ভোটারদের একটি বড় অংশ তাদের ভোট দেওয়ার জন্য দুপুর পর্যন্ত অপেক্ষা করেছিল, যার আপডেট ওইদিনে দেরিতেই গণনা করা হয়েছিল।

এবারের নির্বাচনে ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পেরেছেন। এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি, একজনের ভোট অন্য কেউ দিয়ে দিয়েছেন। নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আগত কোনো পর্যবেক্ষক নির্বাচনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন নি। নির্বাচন কমিশন তার ক্ষমতার পূর্ণ ব্যবহার করেছে এবং এক্ষেত্রে সরকারের আচরণও ছিল সহযোগিতাপূর্ণ। দলীয় সরকারের অধীনে এবং নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে নির্বাচন পরিচালনার ক্ষেত্রে এবারের নির্বাচনটা ছিল গণতন্ত্রের জন্য চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জের প্রাথমিক পরীক্ষায় বাংলাদেশ উত্তীর্ণ হয়েছে। এই নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের মধ্যে অনেকেই পরাজিত হয়েছেন। সেখানে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন। এটা যদি সাজানো-পাতানো নির্বাচন হতো, তাহলে এ ঘটনা ঘটত না। সেই সঙ্গে তিনজন প্রতিমন্ত্রীও ভোটে পরাজিত হয়েছেন।

জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের তুলনায় এই নির্বাচন অনেক বেশি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক হয়েছে। কিছু যে বিচ্যুতি ছিল না, তা কিন্তু নয়। তবে বাংলাদেশে এ ধরনের নির্বাচন করা ছিল সরকারের কাছে একটা বড় চ্যালেঞ্জ। সব দলের অংশগ্রহণ এই নির্বাচনে নিশ্চিত করা না গেলেও নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখা এবং সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার ব্যাপার ছিল। সার্বিক দিক বিবেচনা করলে নিঃসন্দেহে অপেক্ষাকৃত ভালো নির্বাচন বলা যায়। সুতরাং টিআইবির প্রতিবেদনটি যে মনগড়া এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত তাতে কোনো সন্দেহ নেই।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ