1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

সেই মহাকাব্যিক সাত মার্চ 

অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
মঙ্গলবার, ৭ মার্চ, ২০২৩

একাত্তর সালের সাত মার্চ বাঙালির মুক্তির সংগ্রামের এক গৌরবদীপ্ত দিন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে লক্ষ লক্ষ উদ্বেলিত জনতার সামনে এই ঐতিহাসিক দিনে তাঁর প্রাণের সবটুকু শক্তি ঢেলে দিয়ে গর্জে ওঠেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ আর সেই শ্বাসরুদ্ধকারী ভাষণটি তিনি শেষ করেন ‘জয় বাংলা’ রণধ্বনি উচ্চারণ করে। এই ভাষণের অন্তর্নিহিত স্পিরিট সর্বজনবিদিত। কার্যত এটিই ছিল আমাদের স্বাধীনতার ডাক। এমন শৈল্পিক উপস্থাপনায় দেয়া এই ভাষণ এখন বিশ্ব ঐতিহ্যের অমূল্য সম্পদ। যেমন নান্দনিক তেমনি বাংলা ভাষার কারুকার্যে ভরা এই ভাষণ। তাই এর আবেদন কালজয়ী। আবেগ আর বাস্তবতার এক অপূর্ব সম্মিলন ঘটেছিল এই ভাষণে। সেজন্য যুগে যুগে এ ভাষণটি মুক্তিকামী মানুষের প্রাণের কথা বলে চলেছে। আগামীতেও বলবে।

আমাদের প্রাণের ভাষা বাংলা ভাষায় দেয়া এই অমূল্য ভাষণটি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম ভাষণগুলোর একটি হিসেবে এরই মধ্যে নানা ভাষায় অনুদিত হয়েছে। অনেক ইতিহাসবিদ ও গবেষক- মার্টিন লুথার কিং, আব্রাহাম লিংকন এবং চার্চিলের কালজয়ী ভাষণের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর এই অসাধারণ ভাষণটিকে যুক্ত করেছেন। কেউ কেউ বলতে চেয়েছেন এ এক ‘অমর রাজনৈতিক কবিতা’। ইতিহাসবিদ ও লেখক জ্যাকব এফ.ফিল্ড বিশ্বসেরা ভাষণগুলো নিয়ে লেখা ‘We shall Fight on the Beaches: The Speeches That Inspired History’ গ্রন্থে এই ভাষণটি স্থান করে নিয়েছে। এই ভাষণের প্রতিটি বাক্য বাঙালি জাতির দীর্ঘ দিনের গভীর বেদনা ও অভ্যুদয়ের তীব্র আকাক্সক্ষার কথা বলে। এই ভাষণটির বহুমাত্রিক বিশ্লেষণ আমরা দেখতে পাই সাংবাদিক অজিত কুমার সরকারের ‘বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ: রাজনীতির মহাকাব্য’ (২০১৭) বইটিতে। আসলেই এমন একটি বইয়ের খুবই দরকার ছিল। বইটির মুখবন্ধ লিখেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধুকন্যা তাঁর সংক্ষিপ্ত মুখবন্ধেই বইটির সারকথা চুম্বকের মতো তুলে এনেছেন। তিনি যথার্থই লিখেছেন, ‘বাঙালির মুক্তির পথ-নকশা নির্মাণে অনন্য-দূরদর্শী ভাষণ এটি। …প্রতিটি বাক্যে উঠে এসেছে একটি জাতির ইতিহাস, আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকারের সংগ্রাম ও বাঙালি জাতির প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়ের কথা।’

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিক জগতের শ্রেষ্ঠ প্রতিনিধিরা ৭ই মার্চ ভাষণের নানা দিক নিয়ে লিখেছেন এই বইটিতে। ‘আজ বাংলার মানুষ মুক্তি চায়, বাংলার মানুষ বাঁচতে চায়, বাংলার মানুষ তার অধিকার চায়’শিরোনামে প্রথম লেখাটি লিখেছেন অধ্যাপক মুস্তাফা নূরউল ইসলাম। তিনি ছাত্রজীবন থেকেই বঙ্গবন্ধুকে চিনতেন এবং জানতেন। তাঁর শাসনামলেই তিনি বাংলা একাডেমির দায়িত্বে ছিলেন। প্রবীণ এই বুদ্ধিজীবী মনে করেন যে, ‘বাংলাদেশের ইতিহাসের অত্যন্ত উজ্জ্বল ও দিক-নির্দেশক হিসেবে চিহ্নিত ৭ই মার্চ এক উল্লেখযোগ্য বাঁক, যে বাঁক আমাদের দিয়েছে স্বাধীন এই দেশ। … আমাদের সবার হযে সুস্পষ্ট করে মহান নেতা জানিয়ে দিলেন এই দেশ ‘বাংলাদেশ’।’

ইতিহাসবিদ মুনতাসীর মামুন পাকিস্তান আমলের ২৩ বছরের ইতিহাস যে রাজপথ রক্তে রঞ্জিত করারই ইতিহাস সে কথাটি খুবই স্পষ্ট করে বঙ্গবন্ধুর জবানীতে তুলে ধরেছেন। তিনি আরও লিখেছেন এই ‘২৩ বছরের ইতিহাস’ কথাটি বঙ্গবন্ধু তাঁর ভাষণে দুবার উল্লেখ করেছেন। বাঙালির রক্তে রঞ্জিত হবার ইতিহাস বঙ্গবন্ধু তাঁর ভাষণে নানা উপমায় সেদিনের রেসকোর্স ময়দানে ইতিহাসের পর্বে পর্বে সমবেত বিক্ষুব্ধ জনতার সামনে তুলে ধরেন। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান তাঁর লেখায় ইতিহাসের নানা বাঁকের কথা কিভাবে বঙ্গবন্ধু তাঁর ৭ মার্চের ভাষণে এনেছিলেন সে কথাই তুলে ধরেছেন। ভাষা আন্দোলন, চুয়ান্নর নির্বাচন, একুশ দফার পরিপ্রেক্ষিতে পূর্ব বাংলার জনগণের সঙ্গে পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠীর প্রতারণার খতিয়ান কিভাবে বঙ্গবন্ধুর ভাষণে উঠে এসেছে সে বিষয়টিই তাঁর লেখায় প্রাধান্য পেয়েছে।

তরুণ প্রজন্মের কাছে অসাধারণ ‘এক রোল মডেল’ বন্ধুবর মুহম্মদ জাফর ইকবাল। বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধকে তরুণদের মনে নতুন করে জাগিয়ে দেবার ক্ষেত্রে জাফর ইকবালের অবদান অসামান্য। এই জনপ্রিয় লেখক যথার্থই লিখেছেন যে, ‘এই ভাষণটি সত্যিকারভাবে অনুভব করতে হলে বঙ্গবন্ধুর কণ্ঠে শুনতে হবে; তাঁর কথা বলার ভঙ্গিটি নিজের চোখে দেখতে হবে; তাঁর আবেগ, ক্রোধ, ক্ষোভ এবং বেদনার সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে হবে। সবচেয়ে বড়ো কথা, ভাষণের মর্ম উপলব্ধি করতে গেলে ১৯৭১ সালের উত্তাল মার্চ সম্পর্কে জানতে হবে, পাকিস্তানি মিলিটারি-সৃষ্ট ভয়াবহ ও আতঙ্কজনক বিভীষিকার পরিবেশটি বুঝতে হবে। কেউ যদি এই পুরো বিষয়টি অনুভব করতে পারেন তাহলে ৭ই মার্চের ভাষণটি নিশ্চিতভাবে তাঁর ভেতরে বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধুর অবদান নিয়ে নতুন এক উপলব্ধির জন্ম দেবে।’ বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের গুন বিষয়ে বলতে গিয়ে জাফর ইকবাল আরও লিখেছেন, ‘পুরোদেশের সকল মানুষের দায়ভার একা নিজের ওপর নেয়ার এরকম উদাহরণ আমার মনে হয় খুব বেশি নেই। সেটি সম্ভব হয়েছে শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধুর মতো একজন নেতার পক্ষেই।’

ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম তাঁর লেখায় বঙ্গবন্ধুকে একজন উদার গণতন্ত্রে বিশ্বাসী মহানুভব নেতা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। শাসনতন্ত্র তৈরির সময় সকল পক্ষের সাথে তিনি আলাপের তাগিদ দিয়েছেন। আর তাই তাঁর ৭ই মার্চের ভাষণে “আপনারা আসুন, বসুন, আমরা আলাপ করে শাসনতন্ত্র তৈয়ার করি” বাক্যটি স্থান করে নিয়েছে। সাংবাদিক সৈয়দ বদরুল আহসান তাঁর লেখায় দেখিয়েছেন যে জুলফিকার আলী ভূট্টোই মূল ষড়যন্ত্রকারী ছিলেন। এ কথাটি বঙ্গবন্ধু আগেভাগেই ধরে ফেলেছিলেন। তাই তাঁর ভাষণে একাধিকবার ভূট্টোর প্রতি ক্ষোভ ফুটে উঠেছে। সাংবাদিক আবু সাঈদ খান তাঁর লেখায় বঙ্গবন্ধু অবহেলিত বাংলার মানুষের মর্মবেদনা কতোটা গভীরভাবে অনুভব করতেন তাই তুলে এনেছেন। তাঁর লেখার শিরোনাম “দোষ দেওয়া হলো বাঙলার মানুষকে, দোষ দেওয়া হলো আমাকে” বলে দেয় বঙ্গবন্ধুর অন্তর্জালার কথা। কথা সাহিত্যিক আনিসুল হকের লেখার শিরোনাম ‘আমরা বাঙালিরা যখনই ক্ষমতায় যাবার চেষ্টা করেছি তখনই তারা আমাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে’। এই শিরোনামই বলে দেয় বাঙালির ২৩ বছরের বঞ্চনার ইতিহাস একটি মাত্র বাক্যেই কি চমৎকারভাবে উঠে এসেছে। আনিসুল হক যথার্থই লিখেছেন, ‘তিনি ছিলেন অসাধারণ কথাকার ও অপরূপ বাগ্মী; তুলনারহিত দেশপ্রেমিক; যিনি দেশের মুক্তির জন্য আত্মত্যাগে ও আত্মদানে সদা-প্রস্তুত। যাঁর জীবনের একমাত্র লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা, বাঙলার মানুষের মুক্তি।’ প্রয়াত কথা সাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক ‘রক্তের দাগ শুকায় নাই’ শিরোনামের লেখায়, যেমনটি আমরা আশাকরি, তেমনটিই উচ্চারণ করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘কোনদিন শুকোবে না। বাইরের দাগ যদি কখনো মুছেও যায় বাঙালির হৃদয় থেকে যে রক্তক্ষরণ হয়েছে তা শুকোনোর তো প্রশ্নই ওঠে না, বরং আজো ক্ষরণ চলছে। গোটা জাতির অবিরত এই রক্তক্ষরণের একমাত্র ন্যায্য প্রতিশোধ হচ্ছে অপ্রতিরোধ্য সংগ্রামে বাঙালির উজ্জীবিত হওয়া।’

শহিদের রক্ত মাড়িয়ে বঙ্গবন্ধু যে কোনো আপোস আলোচনায় যোগ দেবেন না সে কথাটিই সুস্পষ্ট করেছেন ইতিহাসবিদ সৈয়দ আনোয়ার হোসেন তাঁর লেখায়। রাজনীতিবিদ এবং ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম প্রধান ছাত্রনেতা তোফায়েল আহমেদের লেখার শিরোনাম ‘জনগণের প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।’ প্রজ্ঞাবান ও দূরদর্শী নেতা বঙ্গবন্ধু বরাবরই রাজনৈতিক বৈধতার শক্তির জোর বিষয়ে আস্থাবান ছিলেন। তাই জনগণের প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতার হস্তান্তরের কথা বলে আসন্ন মুক্তিযুদ্ধের বৈধতা অর্জন করেছিলেন।

‘আমি প্রধানমন্ত্রিত্ব চাই না। আমরা এদেশের মানুষের অধিকার চাই’এ কথা ক’টির মাধ্যমে প্রয়াত সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কামাল লোহানী সঠিকভাবেই প্রমাণ করতে চেয়েছেন যে বাংলার নিপীড়িত মানুষের অধিকারের প্রশ্নে বঙ্গবন্ধু কতোটা আপোসহীন ছিলেন। প্রাবন্ধিক আবুল মোমেন লিখেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু গোড়া থেকেই জনগণের সঙ্গে থেকে রাজনীতি করেছেন। … নিজের ওপর নিজের চাপানো দায় সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু বরাবরই সচেতন ছিলেন। তাই এ পথে কোনো বাঁধা এলে তিনি তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন।’ জনসংলগ্ন এই মহান নেতার উক্তি ‘আর যদি একটা গুলি চলে, আর যদি আমার লোককে হত্যা করা হয়’ তাই সহজেই আবুল মোমেনের লেখার শিরোনাম হয়ে যায়। শিল্পী হাশেম খান এই বইয়ের শুধু প্রচ্ছদই আঁকেন নি, ‘প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলো’ শিরোনামে একটি লেখাও লিখেছেন। এই একটি বাক্যের মাধ্যমে যে আসন্ন গেরিলা যুদ্ধের স্পষ্ট নির্দেশনা ছিল, গণমানুষের মুক্তির বার্তা প্রতিধ্বনিত হয়েছিল সে কথাটিই হাশেম খানের লেখায় সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে।

প্রয়াত এমিরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের লেখাতেও এই জনমানুষের মুক্তিযুদ্ধের কথাই ফুটে উঠেছে। ‘তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে’বঙ্গবন্ধুর এই আহ্বানকেই শিরোনাম করেছেন অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। যে কোনো মূল্যে ‘চাই স্বাধীনতা, চাই মুক্তি’ সে কথাটিই পরিস্কার করে তুলে ধরেছেন লেখক তাঁর গোছানো লেখায়। প্রায় একই সুর বাজে কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেনের লেখায়। ‘সাত কোটি মানুষকে দাবায়ে রাখতে পারবানা’ শিরোনামের লেখায় সেলিনা হোসেন আমাদের জানিয়েছেন যে সময় বঙ্গবন্ধুকে সৃষ্টি করেনি, বরং তিনিই ‘সময়কে নিজের করতলে নিয়ে এসেছেন।’ প্রয়াত অধ্যাপক অজয় রায় আপাদমস্তক এক অসাম্প্রদায়িক বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি তুলে ধরেছেন তাঁর লেখায়। জাতি গঠনের গণমাধ্যমের ভূমিকা সম্বন্ধে বঙ্গবন্ধু অবহিত ছিলেন। সে কারণেই অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক তাঁর লেখায় ৭ মার্চ ভাষণে বৈরী পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীকে বঙ্গবন্ধু কেন হুমকি দিয়েছিলেন তার ব্যাখ্যা দাঁড় করিয়েছেন। যদি তাঁর ভাষণ প্রচারে বাঁধা দেয়া হয় তাহলে যেন রেডিও টিলিভিশনের বাঙালি কর্মীরা প্রতিবাদ করে কর্মক্ষেত্র থেকে বের হয়ে আসেন সেই আহ্বান জানিয়ে ছিলেন বঙ্গবন্ধু তাঁর ভাষণে। এই হুমকি কাজে লেগেছিল। অনেক টালবাহানার পর পরের দিন গণমাধ্যমে তাঁর ভাষণ প্রচার করতে বাধ্য হয়েছিল পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠী। আর সেই ভাষণ শুনে বাঙালির রক্ত টগবগ করে জ্বলে উঠেছিল।

‘জয় বাংলা’ শিরোনামে লিখেছেন প্রয়াত প্রবীণ সাংবাদিক আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরী। কি করে এই স্লোগান ধর্ম, বর্ণ ও গোত্র নির্বিশেষে সকল বাঙালিকে স্বাধীনতার মন্ত্রে উদ্বুদ্ধ করেছিল সেই প্রসঙ্গেরই অবতারণা করেছেন লেখক তাঁর নিবন্ধে। বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি এবং রাজনীতিবিদ এস এ মালেক মুক্তি ও স্বাধীনতার অন্তর্নিহিত সংযোগের কথা লিখেছেন ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ শিরোনাম। এছাড়াও শিক্ষাবিদ আব্দুল খালেক, সাবেক সরকারি কর্মকর্তা ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. ফরাসউদ্দীন, কবি কামাল চৌধুরি ও সাংবাদিক আবেদখান বর্ণনা করেছেন কেমন করে ৭ই মার্চের ভাষণটি আমাদের জনযুদ্ধের অনুপ্রেরণার অংশ হয়ে গিয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর নান্দনিক নেতৃত্বের এমন বহুমাত্রিক বিশ্লেষণধর্মী আরও বেশি বেশি প্রকাশনা হওয়া উচিত। এমনটি হলেই বাঙালির চলমান অর্থনৈতিক মুক্তির সংগ্রামেও বঙ্গবন্ধুর কালজয়ী ৭ মার্চের ভাষণটি সমানভাবেই প্রাসঙ্গিক হতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস। তাই বইটি পাঠক নন্দিত হোক সেই প্রত্যাশাই করছি।

লেখক : অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান – অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ