1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

নিশ্চিত হোক পাটের বহুমুখী ব্যবহার

ডেস্ক রিপোর্ট : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
বুধবার, ৬ মার্চ, ২০২৪

স্বাধীনতার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশে পাট খাতের উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৭২-৭৩ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট রপ্তানি আয় ছিল ৩৪ কোটি ৮৪ লাখ ডলার। এর মধ্যে শুধু কাঁচা পাট ও পাটজাতীয় দ্রব্য রপ্তানি করে আয় হয় ৩১ কোটি ৩১ লাখ ডলার। অর্থাৎ মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় ৯০ শতাংশ আসে পাট থেকে। বাংলাদেশ বর্তমানে পাট উৎপাদনে দ্বিতীয় এবং পাট রপ্তানিতে প্রথম। পাট খাতের উন্নয়নের জন্য পাট ও পাটজাত পণ্যকে ২০২৩ সালের ‘প্রোডাক্ট অব দ্য ইয়ার’ বা বর্ষপণ্য এবং পাটকে কৃষিজাত পণ্য হিসেবে গণ্য করার সানুগ্রহ ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ৪০-৫০ লাখ কৃষক পাট উৎপাদনে জড়িত। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট মোট ১৬টি জাত (দেশি ৬, তোষা ৪, কেনাফ ৩, মেস্তা ৩), ৭৩টি কৃষিপ্রযুক্তি এবং ৩৫টি শিল্প ও কারিগরি প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে। কাঁচা পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানিতে প্রণোদনাসহ পাটকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য গৃহীত হয়েছে সরকারি বিভিন্ন পদক্ষেপ। অভ্যন্তরীণ বাজার ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন করে ইউরোপের দেশগুলোয় পাটজাত পণ্যের রপ্তানি বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাটশিল্পের পুনরুজ্জীবন ও আধুনিকায়নের ধারা বেগবান করা এবং বাংলাদেশের পাট সারা পৃথিবীর কাছে নতুন করে পরিচয় করে দিতে ২০১৬ সাল থেকে ৬ মার্চ দেশব্যাপী জাতীয় পাট দিবস উদ্‌যাপন করা হচ্ছে।

পাটের বহুমুখীকরণ যত বাড়ানো যাবে অর্থনীতিতে পাটের ততই অবদান বাড়বে। বিশেষত পরিবেশবান্ধব বিপণনব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য পাটের মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন-২০১০ ও বিধিমালা-২০১৩ আছে। পলিথিন উৎপাদন, বিপণন, ব্যবহার বন্ধ ও পাটপণ্যের মোড়ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের লক্ষ্যে চাহিদা অনুযায়ী গুণগত মানসম্পন্ন পণ্য উৎপাদন এবং প্রচার বাড়াতে হবে। মানসম্মত পাট উৎপাদন, পাটের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতকরণ, পাটপণ্যের বহুমুখীকরণ, পাটকলের আধুনিকায়ন, পাটপণ্যের বাজার সম্প্রসারণ এ পাঁচটি বিষয় অগ্রাধিকার দিয়ে ‘জাতীয় পাটনীতি-২০১৮’-এর অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সরকার ২০১০ সালে পাটজাত মোড়কের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করেছে। পাটের উন্নয়ন ও বহুমুখীকরণের জন্য প্রশিক্ষণের পাশাপাশি দরকার গবেষণা। এ ক্ষেত্রে বাজেট বরাদ্দ বাড়াতে হবে। পাটসংশ্লিষ্ট কুটিরশিল্পের জোরদারকরণ প্রকল্প হাতে নিতে হবে। দক্ষ জনবল নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে। পাট ও পাটসামগ্রী বিপণনে হাটবাজার সম্প্রসারণ করতে হবে, গুদাম মেরামত বা নতুন গুদাম তৈরি করতে হবে।

পাটের কোনো কিছুই ফেলনা নয়। ছোটবড় সব ধরনের পাটগাছ থেকে পাতা নিয়ে পুষ্টিকর পাটশাক খাওয়া যায়। পাটের শিকড়, গাছ, পাতা থেকে সার যোগ হলে পরবর্তী ফসল আবাদে ওই জমিতে আর কোনো বাড়তি সার প্রয়োগের প্রয়োজন পড়ে না। জনগণের মধ্যে দেশি পণ্যের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টিতে নানামুখী পদক্ষেপ দরকার। পলিথিনের ব্যবহার বন্ধ করে সুলভ ও আকর্ষণীয় পাটপণ্য তৈরির প্রতি জোর দিতে হবে। এজন্য শ্রম ব্যবস্থাপনায় আধুনিক ও প্রযুক্তিগত উৎকর্ষকতা, শ্রমিকস্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে অধিক মনোযোগ দিতে হবে। পাটশিল্পে দক্ষ কর্মী সৃষ্টিতে অধিক ডিপ্লোমা ইনস্টিটিউট স্থাপন করা দরকার। পাট একটি পরিবেশবান্ধব বস্তু। পাট থেকে উন্নতমানের ভিসকস সুতা উৎপাদন হয়। সুতি কাপড় থেকেও যার বাজারমূল্য বেশি। পাটখড়ি জ্বালানির প্রধান উৎস হলেও কয়েক বছর ধরে পাটখড়ির চারকোল বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে, আয় হচ্ছে হাজার কোটি টাকা। বর্তমানে পাট থেকে তৈরি হচ্ছে চা। এতে জীবনরক্ষাকারী উপাদান আছে। পাটের বহুমুখী ব্যবহার নিশ্চিতের মাধ্যমে আমরা অর্থনৈতিকভাবে যেমন স্বচ্ছল হতে পারি, তেমনি পরিবেশ রক্ষায়ও এর ভূমিকা অনেক। দ্বি-বীজপত্রী আঁশ উৎপাদনকারী এই ফসলটি আমাদের সম্পদ। বিশ্বে পরিবেশ সচেতনতা বৃদ্ধি পাওয়ায় পাটের চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই পরিবেশ বান্ধব পাটের উৎপাদনশীলতা ও আঁশের ফলন বৃদ্ধির জন্য আমাদের মনোযোগী এবং সচেষ্ট হওয়া প্রয়োজন।

লেখক: ডা. মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ – প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, জাতীয় রোগীকল্যাণ সোসাইটি।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ