1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

ফিরছে সোনালি আঁশের ঐতিহ্য 

নিজস্ব প্রতিবেদক : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
রবিবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২২

সোনালি আঁশখ্যাত রাজবাড়ীর পাটের ঐতিহ্য দেশজুড়ে। এ সুখ্যাতি ধরে রাখতে ও পাট চাষকে জনপ্রিয় করতে গড়ে উঠছে পাটশিল্প। সহজলভ্য কাঁচামাল হওয়ার কারণে এক দশকে জেলায় গড়ে উঠেছে পাঁচটি পাটকল। এতে একদিকে স্থানীয়ভাবে হয়েছে কর্মসংস্থান, অন্যদিকে দাম ভালো থাকায় পাট চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। ইতিবাচক পরিবর্তন হয়েছে আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে।

দেশের অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে রাজবাড়ী পাটের জন্য বিখ্যাত। এ অঞ্চলের পাটের মান খুব ভালো। রাজবাড়ীতে প্রতি বছর অন্তত ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ করা হয়। আশপাশের জেলার মাটিও পাট চাষের জন্য খুব উপযোগী।

রাজবাড়ীতে মোট পাটকল ৬টি। তাদের একটি নেহাজ জুট মিল। রাজবাড়ী-ফরিদপুর সড়কের সদর উপজেলার বসন্তপুর ইউনিয়নের সাইনবোর্ড এলাকায় এটি অবস্থিত। পাটকলটি ডেসটিনি লিমিটেডের সঙ্গে যৌথভাবে পরিচালনা করতে গিয়ে মামলা ও নানা জটিলতায় বর্তমানে বন্ধ রয়েছে।

২০০৮ সালের সেপ্টেম্বরে সদর উপজেলার আলাদীপুরে কার্যক্রম শুরু হয় রাজবাড়ী জুটমিলের। এর পর কয়েক বছরের ব্যবধানে গড়ে উঠেছে আরও কয়েকটি পাটকল। বর্তমানে চালু থাকা পাটকলগুলোর মধ্যে সদর উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নের আহলাদিপুরের রাজবাড়ী জুট মিলস, রামকান্তপুর ইউনিয়নের কাজীবাঁধা এলাকার গোল্ডেশিয়া জুটমিল, বরাট ইউনিয়নের ভবদিয়ায় গ্লোবাল জুট মিল, কালুখালী উপজেলার রতনদিয়ার কিং জুট মিল এবং বালিয়াকান্দির জামালপুরের আব্দুল জলিল মিয়া জুট মিলস। এসব পাটকলে কয়েক হাজার শ্রমিক কাজ করেন। পাটকলে উৎপাদিত পণ্য যাচ্ছে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে। রাজবাড়ীর নাম সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়াসহ আয় হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রা।

রাজবাড়ী জুটমিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী দিদার আহমেদ বলেন, ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ১০ একর জমিতে এই পাটকলের কার্যক্রম শুরু। শুরুতে প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৫০০ শ্রমিক কাজ করতেন। ১১ মাস পরে পাটকলে উৎপাদন শুরু হয়। শুরুতে প্রতিদিন উৎপাদন ছিল ৯ টন।

পাটকল থেকে প্রধানত কার্পেট ব্যাকিং সুতা তৈরি করা হয়, যা ইরান ও তুরস্ক বিভিন্ন দেশে কার্পেট তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। এ ছাড়া আর কিছু পাটপণ্য তৈরি করা হয়, যা শতভাগ রপ্তানিমুখী। এখন কারখানার আয়তন ২২ একর। বেড়েছে জনবলও। প্রতিদিন তিন শিফটে কাজ করছে তিন হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী। উৎপাদন ১০ গুণ বেড়ে এখন দৈনিক ৯০ টন। শুরুতে কারখানার স্থাপনা ছিল ৬০ হাজার বর্গফুট। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে তিন লাখ বর্গফুটে। এ ছাড়া ৭৫ হাজার বর্গফুটে রয়েছে গুদামঘর।

পাট ব্যবসায়ী আশরাফুজ্জামান বলেন, আমি পাটের ব্যবসা করি। আগে বিজিএমসিতে পাট দিতাম। সেখানে ২০০১৬-১৭ সালের সাত লাখ টাকা এখনো পাওনা আছে। রাজবাড়ী জুটমিলের লেনদেন খুব ভালো। এখানে সাপ্তাহিক ভিত্তিতে লেনদেন করা হয়। এ কারণে অল্প সময়ের মধ্যে পাওনা টাকা হাতে পাওয়া যায়।

গোল্ডেশিয়া জুট মিলের পরিচালক কাজী রাকিবুল হোসেন শান্তনু বলেন, পাটকলে সুতা ও বস্তা তৈরি করা হয়। এগুলো ভারত, চীন, ইরান, তুরস্ত, রাশিয়া প্রভৃতি দেশে পাঠানো হয়। তবে করোনা পরিস্থিতি ও বর্তমানে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে কিছু সমস্যা হচ্ছে। এ ছাড়া দেশ থেকে প্রচুর কাঁচাপাট রপ্তানি করা হয়। বাজারে প্রচুর পাট পাওয়া যায়। তবে দামের ক্ষেত্রে একটি রেজুলেশন থাকা প্রয়োজন। যে পাট তিন হাজার টাকা, আগামীকাল সকালেই তা তিন হাজার একশ বা দুইশ টাকা হয়ে যাচ্ছে।

রাজবাড়ী চেম্বারের পরিচালক আবদুস সালাম বলেন, পাটকলগুলোতে হতদরিদ্র মানুষ কাজ করে। এলাকায় বেকারদের কর্মসংস্থান হয়েছে। তারা আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছে। দারিদ্রের হার কমছে। সবমিলিয়ে আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে একটি ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা দিয়েছে। এই শিল্পে বিত্তবানরা এগিয়ে এলে আর শিল্পকারখানা স্থাপন করলে এলাকার অবস্থার আরও পরিবর্তন হবে।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ