1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর: ডলার সংকটের ধকল কাটিয়ে বাড়ছে আমদানি

বানিজ্য প্রতিবেদক : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
শুক্রবার, ৭ এপ্রিল, ২০২৩

ঋণপত্র ও ডলার সংকটের ধকল কাটিয়ে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর দিয়ে আমদানি বাড়ছে। গত বছরের অক্টোবর মাস থেকেই আমদানি ধারাবাহিকভাবে কমে আসছিল, ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সেই ধারা অব্যাহত ছিল। তবে গত মার্চ মাসে প্রথম আমদানি বাড়ার চিত্র দেখা গেছে। আমদানি বাড়ার মূল কারণ ছিল রোজার ভোগ্য পণ্য আমদানি। সেই সঙ্গে তৈরি পোশাক শিল্পের কাঁচামাল, সিমেন্টশিল্পের কাঁচামাল, বিভিন্ন ধরনের ফল, স্ক্র্যাপসহ বিভিন্ন বিলাসবহুল পণ্যও আমদানি শুরু হয়েছে।

বিশ্বজুড়ে চলা অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব দেশে ঠেকানো, বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ বাড়াতে সরকার নিত্যপণ্য আমদানি ছাড়া বাকি সব পণ্য আমদানিতে ব্যাপক কড়াকড়ি আরোপ করে। এরপর মার্চ মাস থেকেই দেখা যাচ্ছে আমদানি আবার বাড়ছে। যদিও দেশের বড় শিল্পোদ্যোক্তারা আমদানি বেড়েছে এই কথা মানতে নারাজ। তাঁদের মতে, শুধু রমজান ঘিরেই আমদানি বেড়েছে। পরে সেটি থাকবে না। কারণ ঋণপত্র এবং ডলার সংকট এখনো কাটেনি। ব্যাংকগুলো এখনো ঋণপত্র খুলতে সহযোগিতা করছে না।

তবে চট্টগ্রাম বন্দর, জাহাজ পরিচালনাকারী অপারেটর এবং চট্টগ্রাম কাস্টমসের তথ্য বলছে মার্চ মাসে আমদানি যথেষ্ট বেড়েছে। এই বৃদ্ধির হার ফেব্রুয়ারি মাসের তুলনায় প্রায় ২৭ শতাংশ বেশি। ধারণা করা হচ্ছে, ধীরে ধীরে দেশের অর্থনীতি আগের গতিতে ফিরতে শুরু করেছে। তবে কবে নাগাদ পূর্বাবস্থায় ফিরবে তা এখনো নিশ্চিত নন অর্থনীতি বিশ্লেষকরা।

দেশের আমদানির বড় অংশই পরিবহন হয় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর দিয়ে। আমদানি বাড়ার তথ্য নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম বন্দর পরিচালক (পরিবহন) এনামুল করিম বলেন, ‘গত ১৫ দিনে আমরা দেখছি সব ধরনের কনটেইনার জাহাজ পুরো আমদানি ভর্তি হয়েই আসছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে জাহাজ আসার সংখ্যাও। বেশ কয়েক মাস আমদানি কমার পর এখন আবারও বাড়ছে। আমরা আশা করছি, এপ্রিল শেষ হলে আমদানিতে বড় অগ্রগতি হবে।’ তিনি বলেন, ঋণপত্র সংকট কাটিয়ে ওঠা, ডলার সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় আমদানি বাড়ছে।

চট্টগ্রাম কাস্টমসের তথ্যানুযায়ী গত ফেব্রুয়ারি মাসে ২৮ হাজার ৪৭৮টি বিল অব এন্ট্রির বিপরীতে ৭৯ লাখ টন পণ্য আমদানি হয়েছে। সেখানে সর্বশেষ মার্চ মাসে আমদানি বাড়ে এক কোটি সাত লাখ টন। আর বিল অব এন্ট্রি জমা পড়েছে ৩৭ হাজার ৪২৮টি। আমদানিতে কড়াকড়ি আরোপের পর নভেম্বরে আমদানি হয়েছিল ৯৮ লাখ টন, ডিসেম্বরে হয়েছিল ৮০ লাখ টন; জানুয়ারিতে হয়েছিল ৮৫ লাখ টন।

স্বাভাবিক সময়ে যেমন ২০২২ সালের মার্চে আমদানির পরিমাণ ছিল এক কোটি ৯ লাখ টন। আর বিল অব এন্ট্রি জমা পড়েছিল ৪১ হাজার ৯৪৩টি।

চট্টগ্রাম কাস্টমসের উপকমিশনার ব্যারিস্টার বদরুজ্জামান মুন্সি বলেন, ‘শুধু ফেব্রুয়ারির তুলনায় মার্চ মাসে চট্টগ্রাম কাস্টমস দিয়ে আমদানির পরিমাণ বেড়েছে ৩৬ শতাংশ। রমজানের ভোগ্য পণ্য আমদানি যেমন বেড়েছে; তেমনি বেড়েছে বিলাসবহুল বা উচ্চ শুল্কের পণ্য আমদানির পরিমাণ। ধারাবাহিকতা থাকলে অবশ্যই এপ্রিল মাসে আমদানি আরো বাড়বে।’

দেশি-বিদেশি জাহাজগুলোর কনটেইনার পণ্য পরিবহনের চিত্রেও আমদানি বাড়ার প্রমাণ মিলেছে। জানুয়ারি মাসে এই বন্দরে দেশি-বিদেশি জাহাজে ৮৭ হাজার ৯৮৪ একক কনটেইনার আমদানি পণ্য এসেছে। আর ফেব্রুয়ারি মাসে এসেছে ৭৭ হাজার ৮৪১ একক; মার্চ মাসে ৯৮ হাজার ৭৩৬ একক এসেছে। অর্থাৎ ফেব্রুয়ারির তুলনায় আমদানি বেড়েছে ২১ হাজার একক কনটেইনার। শতাংশের হিসাবে আমদানি বেড়েছে প্রায় ২৭ শতাংশ।

চট্টগ্রামভিত্তিক ভোগ্য পণ্য আমদানিকারক এটিআর ট্রেডিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুরুল আলম বলেন, ‘মূলত আমদানি বেড়েছে রোজা ঘিরেই। রোজা ঘিরে নিত্যপণ্যের ঋণপত্র খোলা সহজ করায় এই আমদানি বেড়েছে। কিন্তু সার্বিক বিবেচনায় আমদানি বেড়েছে বলা যাবে না। কারণ এখনো ঋণপত্র খুলতে ব্যাংক বিভিন্ন গড়িমসি করছে, ডলার সরবরাহ কিছুটা বাড়লেও দাম কিন্তু খুব বেশি কমেনি। এই অবস্থায় আমদানি স্বাভাবিক রাখতে ঋণপত্র  ও ডলার সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে তদারকি জরুরি।’

আমদানি বাড়ার সুফল কী

অর্থনীতিবিদ পারভেজ মনে করেন, রোজা ঘিরে রেমিট্যান্সের জোয়ার আসছে, আমি বলব না তবে গতি বাড়ছে, সেই সঙ্গে রিজার্ভও বাড়ছে। মূলত ঋণপত্র এবং ডলার নিয়ে বিভিন্ন ধরনের কড়াকড়ি এবং বিধি-নিষেধের ফলে এখন দেরিতে হলেও সন্তুষ্টির জায়গায় এসেছি আমরা।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ