1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

ষড়যন্ত্রের যন্ত্রীরা মাঠে, কাণ্ডারি হুঁশিয়ার!

আলী হাবিব : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল, ২০২৩

শেষবার জাতীয় সংসদে বক্তব্য দিতে দাঁড়িয়েঐকমত্যেরমাধ্যমে গণতন্ত্রকেবিকশিত হওয়ার সুযোগ দিতে সব দলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, ক্ষমতা পরিবর্তনের একমাত্র পন্থা নির্বাচন, সেখানে আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস হিংসার রাজনীতি দেশ, সমাজ অর্থনীতির জন্য কখনোই কল্যাণকর নয় রাষ্ট্রপতির ভাষণের পর ১৪৭ বিধিতে প্রস্তাব উত্থাপন করে সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন যে ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ এবং জাতির পিতার স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে উঠবে কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, ষড়যন্ত্র থেকে কি বাংলাদেশ বেরিয়ে আসতে পারবে? বিশেষ করে যে ষড়যন্ত্রের সঙ্গে দেশের বুদ্ধিবৃত্তিক শ্রেণির একটি অংশ, গণমাধ্যম, বিদেশি শক্তি এবং একটি অপপ্রচারযন্ত্র সক্রিয়, সেই ষড়যন্ত্র থেকে মুক্তির উপায় কী?

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালে পাকিস্তানের হাতে বন্দি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তির অজুহাতে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বদলে পাকিস্তানের সঙ্গে কনফেডারেশন করে যুক্ত থাকার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছিলেন খন্দকার মোশতাক আহমদ। সেই ষড়যন্ত্র থেমে নেই ষড়যন্ত্রকারীরাও থেমে নেই এখন তারা আরো অনেক বেশি সংগঠিত এবং সক্রিয় দেশের অভ্যন্তরে বসে একটি চক্র যেমন ষড়যন্ত্রের আগুনে ঘি ঢালছে, তেমনি দেশের বাইরেও সক্রিয় একটি চক্র

অনেকেরই মনে থাকার কথা, ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন’ নামে একটি বিতর্কিত ডকুমেন্টারি তৈরি করেছিল আল জাজিরা টেলিভিশন এটি ছিল বর্তমান সরকার এবং বাংলাদেশের বিরুদ্ধে গণমাধ্যমের একটি বড় ষড়যন্ত্রের অংশ অথচ অনেককেই তখন বলতে শোনা যায়, এমন প্রামাণ্যচিত্র জীবনে প্রথম দেখছে তারা এমনকি এই তথ্যচিত্রকে ১৯৭৩ সালে নির্মিত একটি তথ্যচিত্রের সঙ্গেও তুলনা করা হয় কিছুদিন পরই দেখা গেল, ধোপে টিকল না আল জাজিরার তথ্যচিত্র  

ওই সময় একটি সহযোগী গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, তাদের তৈরি সরকারবিরোধী বিতর্কিত ডকুমেন্টারিঅল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেনএর বাংলা সংস্করণের রেকর্ডিং হয় লন্ডনে অথচ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে লন্ডন শহরের ইতিবাচক ভূমিকা রয়েছে বিশেষ করে এই শহরে ওই সময়ে বসবাসকারী বাঙালি কমিউনিটি দেশের পক্ষে ইতিবাচক ভূমিকা নিয়েছিল সহযোগী ওই গণমাধ্যমের খবরে এটিও উলে­ করা হয় যে বর্তমানে সরকার বিরোধী নানা ষড়যন্ত্রের ছক আঁকা হচ্ছে শহর থেকেই এর প্রমাণ মিলেছে সাম্প্রতিক আরেকটি খবরে, যেখানে বাংলাদেশকে একটি দুর্বৃত্ত রাষ্ট্র বলে মন্তব্য করেছেন একজন ব্রিটিশ এমপি, যিনি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকারের মানবাধিকার রেকর্ড দলীয় নেতাদের কড়া সমালোচনা করেছেন এই লেবার দলীয় এমপি ব্রিটিশ আইনসভা হাউস অব কমনসে আয়োজিত লেবার ক্যাম্পেইনফর হিউম্যান রাইটসের এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব মন্তব্য করেন তাঁর এসব মন্তব্য রীতিমতো অসম্মানজনকও তিনি মনে করেন, স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করাটা নাগরিকদের জন্য বাধ্যতামূলক করে দিয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার। জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানকে আওয়ামী লীগ যেভাবে দেখে তারও সমালোচনা করেছেন তিনি

বাংলাদেশ সম্পর্কে এ জাতীয় মন্তব্য এবারই প্রথম করলেন না তিনি অতীতেও তিনি বাংলাদেশ সরকারের মানবাধিকার রেকর্ড নিয়ে সমালোচনা করেছেন বিশেষ করে ২০১৮ সালে এক আলোকচিত্রীর গ্রেপ্তার নিয়ে তিনি সরব হয়েছিলেনতিনি মনে করেন, বাংলাদেশ কোনো স্বাভাবিক দেশ নয়, এক ধরনের দুর্বৃত্ত রাষ্ট্র বা এর কাছাকাছি কিছু বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এই ব্রিটিশ এমপি যে অনুষ্ঠানে এই বক্তব্য দিয়েছিলেন, সেখানে যাঁরা উপস্থিত ছিলেন, তাঁদের একজন সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যান

ডেভিড বার্গম্যানের পরিচয় নতুন করে দেওয়ার অপেক্ষা রাখেনা . কামাল হোসেনের এই জামাতা যুদ্ধাপরাধীদের এজেন্ট এবং তারেক রহমানের বেতনভুক্ত উপদেষ্টা অনেক বছর বাংলাদেশে অবস্থান করেছেন মানবতাবিরোধী অপরাধে সরাসরি জড়িতদের বিচারের বিরোধিতা করে নিজের ব্লগে লেখালেখি করেছেন দেশবিরোধী কিছু প্রবাসীর সঙ্গে তাঁর সখ্যের বিষয়টি সম্পর্কেও সচেতনমহল জ্ঞাত

সম্প্রতি বাংলাদেশের এলিট ফোর্স র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) নিয়ে একটি ডকুমেন্টারি প্রচার করেছে জার্মানি ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলেঅভিজাতবাহিনী র‍্যাব যেভাবে বাংলাদেশের মানুষকে ভীতসন্ত্রস্ত করে রাখে শীর্ষক তথ্যচিত্রটি নেত্র নিউজের সঙ্গে যৌথভাবে নির্মিত

বাংলাদেশে জন্মগ্রহণকারী প্রগতিশীল দাবিদার এক অধ্যাপক নাকি তাঁর একটি ফেসবুক পোস্টে এমনটি দাবি করেছেন যে আল জাজিরা ডয়চে ভেলের ডকুমেন্টারি থেকেস্পষ্টহয়েছে, ‘মানবতাবিরোধী অপরাধেরনির্দেশ কোথা থেকে আসে তিনি স্পষ্ট করেই প্রধানমন্ত্রীকে ইঙ্গিত করেছেন। অর্থাৎ তিনিও নেমেছেন সরকারবিরোধী ইনটেলেকচুয়াল প্রচারণায় যেমনটি সরকারবিরোধী রাজনৈতিক প্রচারণায় প্রতিদিন মাঠ গরম করছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তিনি ভুলে যাচ্ছেন, ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত যুদ্ধাপরাধীদের দল জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে তাঁর দল ক্ষমতায় ছিল আমরা পাঠকদের মনে করিয়ে দিতে চাই, যুদ্ধাপরাধী জামায়াতবিএনপির শাসনামলে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগ সভাপতি তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গ্রেনেড ছোড়া হয়েছিল সেই সরকারের আমলে দশ ট্রাক অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনাও ঘটেছিল এই ডয়চে ভেলে, আল জাজিরা তখন কোথায় ছিল? কোথায় ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপকরা? তখন কি তাঁরা চোখ বন্ধ করে অন্য কোনো ধ্যানে মগ্ন ছিলেন, নাকি এখন তাঁদের চোখ ফুটেছে? আগে তাঁরা চোখে দেখতেন না অথবা দেখার চেষ্টা করতেন না?

১৯৭৪ সালে গণমাধ্যমে বাসন্তীর ছবি, ২০২৩ সালে ফটোকার্ড অপরাধকে ভুল বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা। স্বাধীনতা দিবসের দিন আঘাত করা হচ্ছে স্বাধীনতাকে। এমনকি কটাক্ষ করা হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর মার্চের ভাষণও অথচ এই ভাষণকে ২০১৭ সালেডকুমেন্টারি হেরিটেজ বা বিশ্বপ্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেসকো এক অধ্যাপক তাঁর বইয়ে উলে­ করেছেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম বলার পর বঙ্গবন্ধুজয় বাংলা, জয় পাকিস্তান বলে তাঁর ভাষণ শেষ করেছিলেন আমরা একটু পেছনের দিকে তাকালে দেখতে পাই, এই অধ্যাপককে নিয়ে মাত্র তিনজন মানুষ শুনতে পেয়েছিলেন যে বঙ্গবন্ধুজয় পাকিস্তান বলে তাঁর বক্তব্য শেষ করেছেন আগের দুজন দুঃখ প্রকাশ করে পার পেয়ে গেলেও আলোচিত এই অধ্যাপক তাঁর বক্তব্যে অনড় প্রশ্ন হচ্ছে সেদিন রেসকোর্সে আর যাঁরা উপস্থিত ছিলেন, তাঁরাজয় পাকিস্তান শুনতে পাননি কেন? আমাদের আলোচিত অধ্যাপক সাহেবের বক্তব্য, তিনি মার্চ রেসকোর্সে উপস্থিত ছিলেন বলে ব্যক্তিগতভাবে পুরো ভাষণটি শুনতে পেরেছিলেন রেসকোর্সে উপস্থিত অনেকে দ্বিমত প্রকাশ করেছেন বলছেন, বঙ্গবন্ধু ভাষণ শেষে জয় পাকিস্তান বলেননি অধ্যাপক সাহেব মনে করেন, ‘তাঁরা শ্রবণগত অসুবিধার কারণেই (রিজন অব অডিবিলিটি) কথা বলছেন অর্থাৎ এই অধ্যাপক সাহেবের কথাগুলো সত্য বলে ধরে নিলে বলতে হবে, সেদিন কেবল তিনি ছাড়া রেসকোর্স ময়দানে উপস্থিত কোনো মানুষের শ্রবণেন্দ্রিয় সঠিকভাবে কাজ করেনি তাঁরা কিকানে খাটো ছিলেন!  

ধরে নেওয়া যেতে পারে, সবই এক সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্রের অংশ এই ষড়যন্ত্রে দেশের অভ্যন্তরে কিছু মানুষ সক্রিয়, তেমনি সক্রিয় দেশের বাইরেও একটি বড় শক্তি সুধী সমাজের একাংশ, এক শ্রেণির বুদ্ধিজীবী, বেসরকারি সংস্থা চিহ্নিতকিছু গণমাধ্যমের কাজ হচ্ছে এই ষড়যন্ত্রের যন্ত্রে রসদ জোগানো অতএব কাণ্ডারি হুঁশিয়ার!

লেখক : আলী হাবিব – সাংবাদিক, ছড়াকার।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ