1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

দেশে মাছ-মাংস-দুধ খাওয়ার পরিমাণ বেড়েছে

বিশেষ প্রতিবেদক : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
রবিবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৩

মাছ, মাংস, দুধ, ফল ও শাক-সবজি খাওয়ার পরিমাণ বেড়েছে দেশের মানুষের। গত ছয় বছরের হিসাব অনুযায়ী, খাদ্য সংক্রান্ত প্রায় সব সূচকেই আনুপাতিক হারে বেড়েছে খাবার গ্রহণের পরিমাণ। তবে ভাত খাওয়ার পরিমাণ কমেছে। এমনটাই বলছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রকাশিত ‘খানার আয়-ব্যয় জরিপ ২০২২’-এর ফলাফল।

সারা দেশের ৭২০টি নমুনা এলাকায় এ জরিপ পরিচালিত হয়। প্রতিটি নমুনা এলাকা থেকে দৈবচয়নের ভিত্তিতে ২০টি করে মোট ১৪ হাজার ৪০০ খানা থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। জরিপের প্রশ্নপত্রে মোট সেকশন ছিল ১০টি। এই ১০টি সেকশনের তথ্য সংগ্রহের জন্য একজন তথ্য সংগ্রহকারী প্রতিটি খানায় ১০ বার পরিদর্শন করেন।

হেইজ ২০২২ জরিপ ১ জানুয়ারি ২০২২ থেকে শুরু হয়ে ৩১ ডিসেম্বর ২০২২ সময়ে অর্থাৎ, এক বছর ধরে তথ্য সংগ্রহ করা হয়।

খানার আয়-ব্যয় জরিপে দেখা যায়, দেশের জনসাধারণের মাথাপিছু গড় ক্যালরি গ্রহণের পরিমাণ ২ হাজার ৩৯৩ কিলোক্যালরি, যা ২০১৬ সালে ছিল ২ হাজার ২১০ দশমিক ৪ ও ২০১০ সালে ছিল ২ হাজার ৩১৮ দশমিক ৩ কিলোক্যালরি। ২০১৬ সালে দৈনিক গ্রামের একজন মানুষ ৩৮৬ দশমিক ১ গ্রাম চালের ভাত খেলেও বর্তমানে (২০২২) একজন মানুষ দৈনিক ৩৪৯ দশমিক ১ শতাংশ চালের ভাত খাচ্ছেন।

২০১৬ সালের তুলনায় ২০২২ সালে শাক-সবজি ও ফলমূল বেশি খাচ্ছে মানুষ। ২০১৬ সালে গ্রামের একজন মানুষ দৈনিক ১৬৮ দশমিক ৮ গ্রাম শাক-সবজি খেলেও বর্তমানে (২০২২) ২০২ দশমিক ২ গ্রাম খাচ্ছেন। শহরের মানুষ ১৭৪ দশমিক ১ গ্রাম শাক সবজি খেলেও বর্তমানে খাচ্ছেন ২০১ দশমিক ৩ গ্রাম। ২০১৬ সালে গ্রামের একজন মানুষ দৈনিক ৬০ দশমিক ৬ গ্রাম মাছ খেলেও এখন (২০২২) খাচ্ছেন ৬৭ দশমিক ৭ গ্রাম, শহরের মানুষ ৬৭ দশমিক ৯ গ্রাম খেলেও এখন খাচ্ছেন ৬৮ দশমিক ২ গ্রাম।

২০১৬ সালের তুলনায় শহর ও গ্রামের মানুষ মাংস খাওয়াও বাড়িয়েছে। ২০১৬ সালে গ্রামের একজন মানুষ দৈনিক গড়ে ২২ দশমিক ১ গ্রাম মাংস খেতো, বর্তমানে এটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫ দশমিক ৪ শতাংশে। শহরের মানুষ গড়ে দৈনিক ৩৩ দশমিক ৭ শতাংশ মাংস খেলেও এখন খাচ্ছেন ৫০ দশমিক ৩ গ্রাম। ২০১৬ সালে গ্রামের একজন মানুষ দৈনিক গড়ে দুধ ও দুগ্ধজাতীয় খাদ্য গ্রহণ করেছিল ২৬ দশমিক ৩ গ্রাম, এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২ দশমিক ১ গ্রাম, শহরের একজন মানুষ ৩০ গ্রাম খেলেও এখন খাচ্ছেন ৩৮ দশমিক ৫ গ্রাম।

গ্রামের একজন মানুষ দৈনিক ফল খাচ্ছেন ৯০ দশমিক ৯ গ্রাম, অথচ ২০১৬ সালে খেয়েছিল মাত্র ৩২ দশমিক ২ গ্রাম, শহরের একজন মানুষ দৈনিক ১০৫ দশমিক ৩ গ্রাম ফল খাচ্ছেন, ২০১৬ সালে খেয়েছিল মাত্র ৪৫ দশমিক ২ গ্রাম। অর্থাৎ, মাত্র ৬ বছরের ব্যবধানে ফল খাওয়া বাড়িয়ে দিয়েছে দেশবাসী।

বিবিএস জরিপে উঠে এসেছে, পর্যাপ্ত পুষ্টিকর সুষম খাবার মানুষের সুস্থ ও কর্মক্ষম জীবনের অন্যতম নিয়ামক। খাদ্য গ্রহণের বিষয়টি খাদ্যের প্রাচুর্যতা, প্রাপ্যতা, খাদ্যাভ্যাস ও দামের ওপর নির্ভর করে। দানাদার ফল ও শাক-সবজিজাতীয় পণ্যের সরবরাহ এবং দামে মৌসুমগত ভিন্নতা রয়েছে বিধায় খানার খাদ্য গ্রহণের হ্রাস-বৃদ্ধির কারণ হিসেবে জরিপে এসব বিষয় বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। গ্রাম ও শহর এলাকার জনসাধারণের মধ্যে খাদ্যে ক্যালরি গ্রহণের মাত্রায় রয়েছে ভিন্নতা। গ্রামাঞ্চলের জনগণের মাথাপিছু ক্যালরি গ্রহণের পরিমাণ শহরের তুলনায় বেশি। গ্রামাঞ্চলে একজন ব্যক্তি প্রতিদিন গড়ে ২ হাজার ৪২৪ দশমিক ২ কিলোক্যালরি খাদ্য গ্রহণ করে, যেখানে শহরে একজন ব্যক্তির প্রতিদিন গৃহীত ক্যালরির পরিমাণ ২ হাজার ৩২৪ দশমিক ৬ কিলোক্যালরি। ক্যালরি গ্রহণে গ্রাম ও শহরের এ ভিন্নতা ২০১৬ ও ২০১০ সালের জরিপেও বিদ্যমান ছিল।

২০১৬ সালে একজন গ্রামবাসী প্রতিদিন ২ হাজার ২৪০ কিলোক্যালরি গ্রহণ করতো, যা শহরে ছিল ২ হাজার ১৩০ দশমিক ৭ কিলোক্যালরি। তাছাড়া ২০১০ সালের হেইজে এ ক্যালরি গ্রহণের পরিমাণ ছিল গ্রামে ২ হাজার ৩৪৪ দশমিক ৬ কিলোক্যালরি এবং শহরের ২ হাজার ২৪৪ দশমিক ৫ কিলোক্যালরি।

মানুষের মাথাপিছু আয় বাড়ায় ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে। এ কারণেই ২০১৬ সালের চেয়ে ২০২২ সালে খাবার গ্রহণের পরিমাণ ভালো বলে দাবি করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেন, মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে। মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি বদলেছে। এখন বাজারেও নানা ধরনের খাদ্যের সরবরাহ বেড়েছে। মানুষ শহর ও গ্রামে নানা ধরনের সবজি, ফলমূল পাচ্ছে।

‘খাদ্য নিয়ে মানুষের জ্ঞানও বেড়েছে। মানুষ একটু ভালো খাবার ও ভালো পানি খেতে চায়। আমাদের সরকারও এ বিষয়ে অনেক উদার। সরকারের মূল টার্গেট দেশবাসী মোটা কাপড় ও মোটা ভাত খেয়ে সুখে থাকুক।’

বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ আবাসিক মিশনের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, ছয় বছরে মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে। খাদ্য কিনতে টাকা লাগে, সুতরাং আয় বাড়লেই হলো। আয় বাড়লেই ব্যয় করা যায় সহজে। অবকাঠামো উন্নয়নে সরবরাহও বেড়েছে। সরবরাহ বাড়ার ফলে কর্মসংস্থানও বাড়ছে। কর্মসংস্থান বাড়লে আয় বাড়ে। মানুষের হাতে টাকা-পয়সা থাকলে একটু ভালো খেতে-পরতে চায়- এটা চিরন্তন সত্য।’


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ

নির্বাচিত