হজের পর মুসলমানদের সবচেয়ে বড় জমায়েত টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ সম্মিলিত ইসলামী জোটের সভাপতি হাফেজ মওলানা জিয়াউল হাসান। পাকিস্তানের এক পীর এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
সংবাদমাধ্যমে প্রেরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে মওলানা জিয়াউল হাসান বলেন, বিশ্ব ইজতেমা পাকিস্তানে নেওয়া হলে মুসল্লিদের জীবনের নিরাপত্তা ব্যাপকভাবে বিঘ্নিত হতে পারে। তাবলীগ বিরোধী জঙ্গি গোষ্ঠী বিদাত আখ্যা দিয়ে আয়োজন বানচাল করতে মুসল্লিদের উপর বোমা হামলা সহ সন্ত্রাসী তৎপরতা চালাতে পারে যা পাকিস্তানে অহরহ ঘটে থাকে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক সাংস্কৃতিক চুক্তি না থাকা সত্ত্বেও ঈদে মিলাদুননবী (সা.) এর জশনে জুলুশের রেলিতে অংশগ্রহণের জন্য পাকিস্তানের এক পীরকে প্রতি বছর ভিসা দেওয়া হচ্ছে যিনি ইজতেমা পাকিস্তানে নিতে চাচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, একদিকে জাকির নায়েক ও তাবলীগের একাংশের আমীর সাদকে বাংলাদেশে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, অন্যদিকে পাকিস্তানের উক্ত পীরকে ভিসা দেওয়া হচ্ছে যা সরকারের দ্বিমুখী নীতির পরিচায়ক।
তিনি অভিযোগ করেন, তাবলীগ জামাতের আমীর সাদ বিরোধী জোবায়ের পন্থীরা কওমি মাদ্রাসা কেন্দ্রিক হেফাজতে ইসলামের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমায় দুই গ্রুপের মধ্যে গন্ডগোল বাধিয়ে ইজতেমার স্থান বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়ার ষড়যন্ত্রে চলছে।
যারা টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত, তাদের বিরুদ্ধে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে যৌথ তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি করেন মাওলানা জিয়াউল হাসান।
উল্লেখ্য, প্রায় শতবর্ষ আগে ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দে মাওলানা ইলিয়াস (রাহ.) ভারতের উত্তর প্রদেশের সাহরানপুর এলাকায় ইসলামী দাওয়াত তথা তাবলিগের প্রবর্তন করেন এবং একই সঙ্গে এলাকাভিত্তিক সম্মিলন বা ইজতেমারও আয়োজন করেন। এরই ধারাবাহিকতায় তা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। বাড়তে থাকে তাবলিগের প্রচার-প্রসার ও ব্যাপকতা। তাবলিগের সাথী সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু টঙ্গিতে বিশ্ব ইজতেমার জন্য জায়গা দেন। এছাড়া মারকাজের কাজের জন্য কাকরাইল মসজিদের জায়গা স্হায়ীভাবে বরাদ্দ দেন। এর পর থেকে মুসলিম বিশ্বে বাংলাদেশ এক অনন্য সম্মানের আসনে পৌঁছে। হজের পর মুসলমানদের ২য় বৃহৎ এই আর্ন্তজাতিক সম্মেলনকে কেন্দ্র করে সারা বিশ্বের প্রতিটি দেশের তাবলীগের প্রতিনিধি ও মুসল্লীরা বাংলাদেশে আসে। ফলে বাংলাদেশ একদিকে যেমন পর্যটন খাতে লাভবান হচ্ছে অন্যদিকে মুসলিম বিশ্বে ঐতিহ্যবাহী দেশ হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে।