1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

জরায়ুমুখ ক্যানসার: প্রথম টিকা পাবে ১০ থেকে ১৪ বছরের শিক্ষার্থীরা

স্বাস্থ্য ডেস্ক : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
মঙ্গলবার, ২৫ জুলাই, ২০২৩

জরায়ুমুখ ক্যানসার প্রতিরোধে পূর্বঘোষিত মাসেই শুরু হতে যাচ্ছে শিশুদের টিকাদান। আগামী সেপ্টেম্বর থেকে স্কুলে স্কুলে এই টিকা দেওয়া হবে। সরকারের পক্ষ থেকে চলতি বছরের শুরুতেই জানানো হয়, ১০ থেকে ১৪ বছরের শিশুদের এই টিকা দেওয়া হবে। চিকিৎসকরা বলছেন, এই উদ্যোগ অনেক প্রাণ বাঁচাবে। শিশু ও অভিভাবকদের মধ্যে ব্যাপক সচেতনতাও তৈরি হবে। তারা বলছেন, ৯ থেকে ৪৫ বছর বছর পর্যন্ত মেয়েদের সচেতন করা গেলে এবং সঠিক সময়ে ভ্যাকসিন নিশ্চিত করা গেলে আগামী একশ বছরের মধ্যে জরায়ুমুখের ক্যানসার সম্পূর্ণভাবে নির্মূল করা সম্ভব হবে।

সোমবার (২৪ জুলাই) রাজধানীর কয়েকটি স্কুলের শিক্ষার্থীদের কাছে চিঠি দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়, সরকারের উদ্যোগে হিউম্যান প্যাপিলোমাভাইরাস (এইচপিভি) টিকা কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। আগামী সেপ্টেম্বর থেকে ১০ থেকে ১৪ বছরের শিশুদেরকে এই টিকা দেওয়া হবে (৫ম শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণি)।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে প্রতি বছর ৫ লাখ ৭০ হাজার নারী জরায়ুমুখ ক্যানসারে আক্রান্ত হন, মারা যান ৩ লাখের বেশি। বাংলাদেশে নারীরা স্তন ক্যানসারের পর সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন জরায়ুমুখ ক্যানসারে। দেশে প্রতিবছর ৮ হাজার নারীর জরায়ুমুখের ক্যানসার শনাক্ত হচ্ছে। এই ক্যানসারে আক্রান্ত নতুন ও পুরনো রোগী মিলিয়ে বছরে ৫ হাজার নারীর মৃত্যু হয়। কিশোরী মেয়েদের টিকা দেওয়ার মাধ্যমে প্রতিরোধব্যবস্থা নিলে এবং প্রাপ্তবয়স্ক নারীদের পরীক্ষা–নিরীক্ষার (স্ক্রিনিং) মাধ্যমে প্রাথমিক অবস্থায় শনাক্ত ও চিকিৎসার মাধ্যমে সহজেই নির্মূল করা সম্ভব জরায়ুমুখ ক্যানসার।

এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় করণীয় নির্ধারণে বেশ কয়েকবছর ধরে কর্মকৌশল নিয়ে কাজ করছিল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাস থেকে নারীদের জরায়ু ক্যানসারের টিকা দেওয়ার কার্যক্রম শুরু করা হবে।

উল্লেখ্য, জরায়ুমুখ ক্যানসার প্রতিরোধে ১০ বছর বয়সের পর থেকেই টিকা নেওয়া যায়। এই টিকার তিনটি ডোজ নিতে হয়। প্রথম ডোজের এক মাস পর দ্বিতীয় ডোজ এবং তার তিন মাস পর তৃতীয় ডোজ নিতে হয়।

এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক নারী অধিকারকর্মী শাহানা হুদা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, এই নির্দেশনাটি পাওয়ার পর আমি খুব খুশি হয়েছি, এই ভেবে যে মেয়েদের অতিগুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি সরকারের নজরে এসেছে। অবশ্যই আমি আমার নাতনিকে এই ইনজেকশন দেওয়াবো। কারণ আমার মেয়ে যখন বড় হয়েছে, তখন আমরা এতোটা সচেতন ছিলাম না। এবং এরকম সুযোগও স্কুল থেকে পায়নি। ফলে এখন ওর বয়স চলে গেছে। শুনেছি কিশোরীদের ক্ষেত্রে বেশি কাজ করে এই প্রতিরোধ ব্যবস্থা। আমাদের দেশে অনেক নারী এখন জরায়ু ক্যানসারে অনেকই ভুগছেন। এবং যতজন ভুগছেন এদের অধিকাংশই চিকিৎসার আওতায় নেই, এমনকি এটাকে চিহ্নিত করা হয়নি। তাই স্কুল পর্যায়ে যদি ছাত্রীরা এই সুযোগ পায় বিনামূল্যে সেটা অনেক অনেক বড় সুযোগ।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরেক অভিভাবক বেশ শঙ্কা জানিয়ে বলেন, বাচ্চা মেয়েদের এই টিকা দেওয়া কতটা ঠিক হবে জানি না। আমাদের যদি আরেকটু বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হয় তাহলে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হবে। তিনি আরও বলেন, এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কী রকম হবে সেটাও প্রচার দরকার।

এই টিকা দিতে যেন অভিভাবকরা কোনও ভয় না পান উল্লেখ করে কুমুদিনী মেডিক্যাল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক বিলকিস বেগম চৌধুরী বলেন, এটা খুব ভালো উদ্যোগ হয়েছে। এই ক্যানসারের পিছনে বাল্যবিবাহ একটি বড় কারণ হিসেবে ধরা হয়। হিউম্যান প্যপিলোমাভাইরাস (এইচপিভি) এর জন্য দায়ী। যদি যৌনসম্পর্কের আগে এই টিকা দেওয়া যায় তবে সংক্রমণের শঙ্কা কম থাকে। ফলে স্কুলগামী শিশুদের এটা দেওয়ার সিদ্ধান্ত খুব ভালো ফল দিবে।

এই টিকাদান কর্মসূচির অধীনে ১০ থেকে ১৪ বছরের সকল শিক্ষার্থীকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে নাকি ধাপে ধাপে দেওয়া হবে প্রশ্নে স্বাস্থ্য অধিদফতরের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. আব্দুল্লাহ আল মুরাদ বলেন, কোথায়, কীভাবে দেওয়া হবে সেটার সার্বিক পরিকল্পনা মন্ত্রী মহোদয় ঘোষণা করবেন।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ