1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

গণমানুষের ভরসাস্থল শেখ হাসিনা

দীপক চৌধুরী : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
সোমবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৩

রাজনীতি মানুষের জন্য। কিন্তু রাজনীতির নামে ষড়যন্ত্র, চক্রান্ত ও নাশকতা মানুষের জন্য নয়। আমাদের অভিজ্ঞতার ঝুলিতে ১৯৭১, ১৯৭৫, ২০০৪, ২০১৩-এর ভয়ঙ্কর দিনগুলোর ইতিহাস রয়েছে। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে কারা স্বাধীন বাংলাদেশ চায়নি, ’৭৫-এ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রকে কীভাবে হত্যা করা হয়েছিল তা কিন্তু বাঙালিরা জানে।

১৯৮১-তে দেশে ফেরার পর গুলি-ষড়যন্ত্র-চক্রান্তের মুখে জীবনবাজি রেখে অপ্রতিরোধ্য গতিতে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা মানুষের মুক্তির জন্য লড়াই করেছেন এবং গণতন্ত্র পুনপ্রতিষ্ঠা করেছেন। কিন্তু ২০০৪-এর ২১ আগস্ট ষড়যন্ত্র করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও তৎকালীন বিরোধীনেত্রী শেখ হাসিনার ওপর গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। তাঁকে হত্যার জন্য কী না করা করেছিল খুনিচক্র।

২০১৩-এ শেষ পর্যন্ত হেফাজতকে নামানো হলো মাঠে। বিএনপি-জামায়াত জোটের নৃশংসতা দেখেছি সাংবাদিকতা পেশার কারণে, ভয়ঙ্কর সেসব দিনের প্রতিটি মুহূর্ত দেখেছি। নিষ্ঠুর সেসব দিনের কথা কি ভুলবার মতো ? এসবের প্রতিটি ঘটনা মানুষের জানা। এসব ঘটনা উল্লেখ করলাম এ কারণে যে, খুনি, খুন মামলার আসামি, চোর-গুণ্ডা-দুর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজ, জামায়াত-শিবির করা লোকেরা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পতাকাতলে প্রবেশ করতে পারে না। অথচ তৃণমূলে এরা দাপটের সঙ্গে রয়েছে, আওয়ামী লীগ, আওয়ামী যুবলীগ, কৃষক লীগ, শ্রমিক লীগে নানারকম অপকৌশলে ঢুকে পড়েছে।

নির্বাচনকে সামনে রেখে কেউ কেউ মিথ্যে তথ্যসম্বলিত পোস্টার নিয়ে মাঠে নেমেছে। স্কুল-কলেজ, হাট-বাজার, ইউনিয়ন অফিসের দেয়ালে পোস্টার সেঁটে দিয়েছেন। তৃণমূলে নেতা ‘ফোটানোর’ লক্ষ্যে মন্ত্রীর সঙ্গে ছবি তুলে পোস্টারে দিচ্ছেন কেউ কেউ। বোঝানোর চেষ্টা আমি অমুক মন্ত্রীর ‘প্রিয়লোক।’ বাস্তবতা কী বলে? মন্ত্রী হচ্ছেন জনপ্রতিনিধি। তিনি জনগণের মাঝে যাবেন, পাবলিক মিটিং করবেন। অনেকের সঙ্গেই কথা বলবেন। এই সুযোগ নিয়ে সমাজের কিছু মন্দলোক মাঠে নেমেছে।

শুধু দলে নয়, তৃণমূল প্রশাসনে ঘাপটি মেরে আছে আওয়ামী সরকারের বিরোধী কিছু লোক। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শবিরোধিরা। তৃণমূলে প্রশাসনের চেয়ারে বসে থাকা একশ্রেণির ব্যক্তির একমাত্র কাজ যেন জামায়াত-বিএনপিসহ আওয়ামীবিরোধী শক্তিকেই সহযোগিতা করা। অন্যায়কারী, দাগী, চিহ্নিত আসামি, সন্ত্রাসী, অগ্নিসন্ত্রাসীদের বিষয়ে তৃণমূল প্রশাসনের নজরদারি থাকতে হবে। জেলা প্রশাসকদের দায়িত্ব ও বিচক্ষণতা সবচেয়ে জরুরি এখন। সুতরাং এসব বিষয়কে ছোট করে দেখা উচিৎ নয়।

গতকালও (১৯ এপ্রিল, ২০২৩) আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক ও পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের অভিযোগ করেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি আবারও অগ্নিসন্ত্রাসের পাঁয়তারা করছে। তিনি বলেন, স্বাভাবিক পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করতে অশুভ শক্তি কাজ করছে। তিনি ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা’র রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সাধারণ সম্পাদককের সঙ্গে সম্পাদকমণ্ডলীর ও সহযোগী সংগঠনের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের যৌথ সভায় এসব কথা বলেন। বিভিন্ন ইস্যুতেই তিনি বক্তৃতা দিচ্ছিলেন আমরাও মনোযোগ দিয়ে শুনছিলাম। আমরা মনে করি, এদেশের জনগণ মনে করে তৃণমূলকে শক্তিশালী করতে হলে গভীরভাবে নজর দিতে হবে সেসব ক্ষেত্রে।

আমরা এমনই এক দুর্ভাগা জাতি যে, আমরা সহজেই প্রাপ্তির কথা ভুলে যাই। জনকল্যাণে করা এ সরকারের উন্নয়নমূলক কাজগুলোর দেখাশোনা দরকার। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটিতে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে জনসংযোগ করার পাশাপাশি সরকারি প্রকল্পের উপকারভোগীদের খোঁজখবর নিতে দলীয় নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দলের যৌথসভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব নির্দেশনা দেন। আমার তো মনে হয়, এতে মানুষের উপকার হবে।

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে অসহায়, দুঃস্থ এবং গরিব মানুষের পাশে দাঁড়ানোর নির্দেশনার পাশাপাশি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে দলকে আরও গতিশীল করার লক্ষে এ কাজগুলো করার নির্দেশ দিয়েছেন। এটা ভুলে যাওয়া চলবে না যে, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা মানুষকে ক্ষমা করে দেন, মানুষকে ভালোবাসেন, প্রতিহিংসা পরায়ণ নন। এই বিশাল উদারতা একমাত্র শেখ হাসিনার পক্ষেই দেখানো সম্ভব। খালেদা জিয়া দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত হয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার দয়ায় বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। আসামি হিসেবে খালেদা জিয়ার থাকার কথা ছিল কারাগারে। কারণ তিনি সাজাপ্রাপ্ত। দলীয় নেতারা চ্যালেঞ্জের সঙ্গে উচ্চারণ করেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে যে খালেদা জিয়া হত্যার চেষ্টা করেছিলেন সেই খালেদা জিয়াকে দয়া করে বাসায় থেকে চিকিৎসা নেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন শেখ হাসিনা, আর কেউ নয়।

আসলেই আজ এটা প্রমাণিত সত্য, বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়ন ও অগ্রগতির কিংবদন্তি। এদেশে যা কখনো সম্ভব হতো না, দরিদ্রদের পক্ষে যা ছিল অসম্ভব তা-ই সম্ভব করেছেন শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন, দেশে কোনো মানুষ গৃহহীন থাকবে না। সরকার সব ভূমিহীন, গৃহহীন মানুষকে ঘর তৈরি করে দেবে। প্রধানমন্ত্রীর এমন ঘোষণার পর ছিন্নমূল ও দুস্থ ভূমিহীন-গৃহহীনদের আধাপাকা টিনশেড ঘর নির্মাণ করে দিয়েছে ও দিচ্ছে সরকার। আজ এটা প্রমাণিত, দেশের সরকার এমন হতদরিদ্রদের পাশে সব সময়ই থাকে। ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে জমি ও গৃহ প্রদান করা হয়েছে অর্থাৎ এমন অসাধারণ উদ্যোগের জন্য সুবিধাভোগীরা আবেগাপ্লুত।

১৯৭৫-এ জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে একটি গোষ্ঠী স্বাধীন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নতি বাধাগ্রস্ত করতে চেয়েছিল। কিন্তু ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশে ক্ষমতায় এসে দেশের হাল ধরেছেন। মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন করতে দিনরাত কাজ করেছেন। জনগণের বিপুল সমর্থণ ও ভোটে ২০০৮-এর সাধারণ নির্বাচনে মানুষ তাঁকে ক্ষমতায় বসানোর পর থেকেই মানুষের জীবনমান অনেক উন্নতি হয়েছে। চারবারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি বলেছেন, ‘আমাদের দুর্ভাগ্য হলো যে কিছু কিছু লোক থাকে, সবকিছুতেই একটা নেতিবাচক মনোভাব তারা পোষণ করে। যতই ভালো কাজ করেন, সবসময় তাদের কিছু ভালো লাগে না। এরকম ‘ভালো না লাগা’ রোগে ভোগে তারা। এ রোগের কী চিকিৎসা আছে আমি জানি না।’

গৃহহীনকে ঘর দেওয়া, ভিক্ষুকের ভিটেও সেমিপাকা ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার চেয়ে বড় মাপের সেবা আর কী হতে পারে! সত্যিকার অর্থেই তো শেখ হাসিনা মানবতার মা। এখন বিএনপি গণতন্ত্র শেখাচ্ছে, রাজনীতি শেখাচ্ছে, ভোটাধিকার শেখাচ্ছে। বিএনপির সিনিয়র নেতারা গণতন্ত্রের ‘ছবক’ দিচ্ছেন। কতটা হাস্যকর এসব বিষয়। বিএনপি সরকারের শাসনামলে দরিদ্র মানুষকে গৃহনির্মাণ করে দেওয়ার কথা কী বিএনপি কল্পনা করেছিল? গণতন্ত্র ধ্বংস করার জন্য যে বিএনপি সারাদেশে একের পর এক অরাজকতা সৃষ্টি করেছিল সেই বিএনপি এখন ‘গণতন্ত্রে’র জন্য মরিয়া। এটা তো জাতির সঙ্গে মশকরা, প্রহসন করা।

আজ জাতির পিতার সেই স্বপ্ন ধীরে ধীরে বাস্তবায়িত হচ্ছে। তাঁর সুযোগ্য জ্যেষ্ঠকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে এদেশের মানুষ নতুন করে ভরসা পাচ্ছে। তাঁর বাবা বঙ্গবন্ধু দিয়ে গেছেন স্বাধীন দেশ। মানুষের বিশ্বাস, তাঁর কন্যা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এ জাতি মাথা উঁচু করে দাঁড়াবেই বিশ্বের বুকে।

লেখক : দীপক চৌধুরী – সিনিয়র সাংবাদিক, কলামিস্ট ও কথাসাহিত্যিক


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ