1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরে উৎপাদন শুরু চলতি বছরেই

বিশেষ প্রতিবেদক : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
মঙ্গলবার, ২৪ মে, ২০২২

দেশের ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের মধ্যে সবচেয়ে বড় এবং দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর হবে পরিবেশ সহনশীল গ্রিন অর্থনৈতিক অঞ্চল। এজন্য বর্জ্য পরিশোধন প্লান্ট (সিইটিপি), ডিস্যালাইনেশন প্লান্ট, স্টিম নেটওয়ার্ক, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, বায়োগ্যাস প্লান্ট, ওয়েস্ট সোর্টিং ফ্যাসিলিটি, রুফটপ ও ফ্লোটিং সোলার স্থাপনসহ উপকূলীয় অঞ্চলে বৃক্ষরোপণসহ নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর হবে দেশের জন্য গেম চেঞ্জার হবে। অর্থনীতির পুরো পথের নকশাই দেবে বদলে। যে অর্থনৈতিক অঞ্চলে উৎপাদনের কারণে দেশের অর্থনৈতিক গ্রোথ যেমন বাড়বে, তেমনি বাড়বে কর্মসংস্থান, দেশের ও বিদেশের বিনিয়োগ।

বিগত ২০১৪ সালে কাজ শুরু হয় সর্ববৃহৎ এই প্রকল্পের। বঙ্গোপসাগর থেকে বালি নিয়ে এসে হাজার হাজার একর চরের জমি উঁচু করা হয়েছে। আগে যেসব যেসব চর ঘিরে শুধু মাছ ধরা আর গবাদিপশু চরানো হতো; এখন সেখানে গড়ে উঠছে বড় বড় দৃষ্টিনন্দন শিল্পকারখানা। যেন সাগরের বুকে জেগে ওঠা এক টুকরো বাংলাদেশ।

স্থানীয়রা বলছেন, মিরসরাই উপজেলার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল ছিলো বছরের পর বছর পতিত জমি। সাগরের নোনা জলের সংস্পর্ষে সেখানে ফলতো না ফসল। শুধুমাত্র গরু মহিষের চারণভূমি হিসেবে ব্যবহার হতো এসব বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল। কালের পরিক্রমায় সে অনাবাদী পতিত জমিতে গড়ে উঠছে শিল্পাঞ্চল। ফেনীর সোনাগাজী, চট্টগ্রামের মিরসরাই ও সীতাকুন্ডের ৩০ হাজার একর জমি নিয়ে গড়ে ওঠা এ শিল্পনগরীর নামকরণ করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর। যা দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ অর্থনৈতিক অঞ্চল।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগরের মিরসরাই অংশ মিরসরাই ইকোনোমিক জোন নামে সর্বাধিক পরিচিত। মিরসরাই ইকোনোমিক জোন থেকে চলতি বছরে আনুষ্ঠানিক উৎপাদনে যাওয়ার কথা রয়েছে বেশ কয়েকটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ম্যাগডোনাল্ড স্টিল ও এশিয়ান পেইন্টস। এ দুটি প্রতিষ্ঠান ছাড়াও উৎপাদনে যেতে দ্রুত কাজ চলছে হেলথকেয়ার ফার্মা, বাংলাদেশ অটো ইন্ডাস্ট্রিজ, এসকিউ ক্যাবল, জিংজিয়াং, মডার্ণ সিনটেক্স, নিপ্পন, বার্জার পেইন্টস সহ বেশকিছু শিল্পপ্রতিষ্ঠানের। আগামী বছরের মধ্যে কারখানা চালু করার পরিকল্পনা করছে স্থানীয় কোম্পানী সমুদা ফুডস ও বার্জার পেইন্টস।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরীতে অবকাঠামো উন্নয়নমূলক কাজ চলছে দ্রুতগতিতে। ইট, বালি কংক্রিট, পাথর, খোয়া ও রডের বিশাল বিশাল স্তুপ দেখে বোঝার উপায় নেই মাত্র কয়েকবছর আগেও এটি ছিলো ধূ ধূ চর। যেখানে পালবেঁধে চরে বেড়াতো গরু মহিষের বাথান। এখন সেসব পতিত জমিতে গড়ে উঠছে শিল্প।

বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) সূত্রমতে, ৩০ হাজার একরের এ শিল্পাঞ্চলে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) আওতাধীন গার্মেন্টস পল্লির জন্য বরাদ্ধকৃত জমির পরিমাণ ৫০০ একর। তার মধ্যে ১৬ একর জমির উপর প্লট অবকাঠামো সম্পূর্ণ প্রস্তুত। এ প্লটগুলো কারখানা নির্মাণের জন্য হস্তান্তরযোগ্য। বাকি অংশে পানি সরসরাহ, গ্যাস ও বিদ্যুত নিশ্চিত হলেই শুরু হবে নির্মাণকাজ।

বেজার সহকারী প্রকৌশলী ফেরদৌস ওয়াহিদ বলেন, আমরা ইতোমধ্যেই নির্মাণাধীন কারখানার জন্য গ্যাস ও বিদ্যুত নিশ্চিত করেছি। এবছরেই কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক উৎপাদনে যাওয়ার কথা রয়েছে। এশিয়ান পেইন্টস, নিপ্পন-ম্যাকডোনাল্টের কারখানা পুরোপুরি উৎপাদনযোগ্য।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর নিয়ে মিরসরাইয়ের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, আধুনিক এ শিল্পাঞ্চলে প্রায় ১৫ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। অনতিদূরে এ জনপদ হবে শিল্পশহর।

বেজা জানায়, বর্তমানে ১৩টি প্রতিষ্ঠান উৎপাদনের অপেক্ষায় আছে। আরও ১৫টি প্রতিষ্ঠান কারখানা স্থাপনের প্রাথমিক কাজ শুরু করেছে। আশা করা হচ্ছে, চলতি বছরেই এশিয়ান পেইন্ট, ম্যাকডোনাল্ড স্টিল মিল, নিপ্পন সহ আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান উৎপাদনে যাবে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরের মিরসরাই অংশে আমূল পরিবর্তন হয়েছে। শিল্পনগরের ভেতরকার সংযোগ সড়ক, প্রতিরক্ষা বাঁধ ও বনাঞ্চল তৈরির কাজ চলতে দেখা গেছে পুরোদমে। চলছে বনায়ন কার্যক্রম। পুরো অঞ্চলের আয়তনের শতকরা ২৫ ভাগ বনায়ন করা হবে।

দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বৃহত্তম এ শিল্পনগরীতে ইতোমধ্যে বিনিয়োগ করেছে দেশি বিদেশি বিভিন্ন নামকরা প্রতিষ্ঠান। জাপানের নিপ্পন, ভারতের এশিয়ান পেইন্টস, যুক্তরাজ্যের বার্জার পেইন্টস ও সিঙ্গাপুরের উইলমারসহ বিনিয়োগ করেছে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান। দেশি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে পিএইচপি, বসুন্ধরা গ্রুপ ও টিকে গ্রুপ।

এছাড়াও বিনিয়োগ আগ্রহ প্রকাশ করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরে জমি বরাদ্দ পেয়েছে উত্তরা মোটরস, বার্জার পেইন্টস, বেইজিং ঝেনুয়ান হেংহুই ইঞ্জিনিয়ারিং কনসাল্টিং কোম্পানি, পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি, বিএসএ ফ্যাশনস লিমিটেড, হাংঝু ঝিনঝিয়াং গ্রুপ, ঝিন্দে ইলাস্টিক (বিডি), এক্সপোর্ট কম্পেটিটিভনেস ফর জবস, ইস্ট এশিয়ান কক্স, কমফিট কম্পোজিট নিট, ইওন মেটাল ইন্টারন্যাশনাল, ট্রেড ডিজাইন সল্যুশনস, ইয়নমেটাল লিমিটেড, ফন ইন্টারন্যাশনাল ও আরব বাংলাদেশ ফুডস লিমিটেড।

এ ছাড়া বরাদ্দ পেয়েছে গ্যাস ওয়ান লিমিটেড, অনন্ত অ্যাপারেলস লিমিটেড, বিপি-পাওয়ারজেন লিমিটেড, এসিআই লিমিটেড, ইনট্রিগা অ্যাপারেলস লিমিটেড, হ্যামকো করপোরেশন লিমিটেড, যমুনা স্পেসটেক (জেভি) লিমিটেড, বিএসআরএম স্টিল মিলস লিমিটেড, চিটাগং পাওয়ারসহ অনেক প্রতিষ্ঠান।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ