1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

শরীয়তপুরে তৈরি হচ্ছে স্বয়ংক্রিয় অটোমেটিক ইট তৈরির মেশিন

শরীয়তপুর জেলা প্রতিনিধি : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
শনিবার, ২৮ মে, ২০২২

শরীয়তপুরে বিসিক শিল্প নগরীতে স্বয়ংক্রিয় ব্লক ইটের মেশিন তৈরি করা হচ্ছে। এফ.কে হাইড্রোলিক ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস নামের একটি প্রতিষ্ঠান অটোমেটিক ইট বানানোর এই মেশিন তৈরি করছে।

বরিশাল, মাদারীপুর ও রাজবাড়িসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে তাদের তৈরি মেশিন। মেশিন তৈরির পাশাপাশি ব্লক ইট তৈরির কলাকৌশল শেখানোর উদ্যোগও নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

বিসিক শিল্প নগরীর পশ্চিম প্রান্তে বিশাল কারখানায় ৮ জন শ্রমিক আর একজন প্রকৌশলী মিলে দিন রাত কাজ করে তৈরি করছেন অটোমেটিক ইট তৈরির মেশিন।

পাইলটিং হিসেবে প্রকল্পটি ২০২১ সালে জুন থেকে চালু করেন ফারুক আহমেদ বেপারী। পাইলটিংয়েই পেয়েছেন সফলতা। তার কারখানায় উৎপাদন করা ৪টি মেশিনই বিক্রি হয়ে গেছে। আসছে একের পর এক অর্ডার।

ওই কারখানার প্রকৌশলী রেজাউল করিম বলেন, “একটি মেশিন তৈরি করতে ৮ জন শ্রমিকের দুই মাস সময় লাগে। মেশিন তৈরির কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করা হয় লোহা আর এ কাঁচামাল আনা হয় ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে।”

তিনি জানান, একটি মেশিনে রয়েছে তিনটি চেম্বার- মিক্সার মেশিন, কনভেয়ারবেল্ট, হাইড্রোলিক প্রেস। তিন প্রকারের (অটো, সেমি অটো ও ম্যানুয়াল) মেশিনই এই কারখানায় তৈরি করা হয়।

আকার ও প্রকারভেদে প্রতিটি মেশিন তৈরিতে খরচ পড়ে ৮ থেকে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত যা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১২ থেকে ২২ লাখ টাকায়। খরচ বাদে প্রতিটি মেশিন থেকে লাভ হচ্ছে ৪ থেকে ৭ লাখ টাকা।

যারা মেশিন ক্রয় করবেন তাদেরকে কারখানাতেই ওই মেশিন ব্যবহারের কলাকৌশল হাতে কলমে শেখানো হয়। এজন্য কারখানার পাশেই রয়েছে অটোমেটিক মেশিন দিয়ে ইট তৈরি প্রদর্শনি কারখানা।

যেভাবে তৈরি হয় ইট

ইট তৈরির কাঁচামাল দেওয়া হয় মিক্সার মেশিনে; এরপর কনভেয়ারবেল্টের সাহায্যে তা চলে যায় মূল মেশিনে। সেখান থেকে ইট প্রস্তত হয়ে হাইড্রোলিক প্রেসের মাধ্যমে বাইরে বেড়িয়ে আসে। এরপর সাড়ি সাড়িভাবে সাজানো হয় ইটগুলো। প্রস্তুত করা ইটগুলোতে পানি দিয়ে কিউরিং করে তারপরই তা বিক্রির উপযোগী হয়।

কারখানার মালিক ফারুক আহমেদ চৌকিদার বলেন, “অটোমেটিক ইট তৈরির মেশিন উৎপাদন একটি পাইলটিং প্রকল্প ছিল কিন্তু পাইলটিংয়েই বেশ সাড়া পেয়েছি। এ বছর থেকেই মূল উৎপাদনে যাওয়ার সব প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। এর ফলে অর্থনৈতিকভাবে যেমন লাভবান হওয়া যাবে তেমনি ইট প্রস্তুতে ছোট ছোট উদ্যোক্তা সৃষ্টি হবে। যারা অল্প পুঁজি নিয়েই ইট প্রস্তুতের কারখানা তৈরি করতে পারবেন।”

তিনি বলেন, “আগে চীন থেকে এই মেশিন কেনা হতো। দাম যেমন বেশি ছিল তেমনি আমদানি করাও ছিল দুষ্কর।”

তার কারখানায় বর্তমানে ১০ জন শ্রমিক কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। বড় পরিসরে উৎপাদনে গেলে আরও শ্রমিকের কর্মসংস্থান হবে। ভবিষ্যতে এই মেশিনের দাম আরও কমিয়ে নিয়ে আসা যাবে বলেও জানান তিনি।

শরীয়তপুর বিসিক শিল্প নগরী কার্যালয় সূত্র জানায়, ১৯৯৮-২০০০ সালে ১৩ দশমিক ৬১ একর জমির ওপর গড়ে ওঠে শরীয়তপুর বিসিক শিল্প নগরী। যার প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছিল ২৪৭ লাখ ১০ হাজার টাকা। ৯ দশমিক ২৮ শতাংশ জমি নিয়ে ১০০টি প্লট করা হয়।

এর মধ্যে ৪টি প্রশাসনিক প্লট ছাড়া বাকিগুলো শিল্প ইউনিট। ৯৬টি প্লটের মধ্যে ৯৫টি প্লট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এতে গড়ে তোলা হয়েছে ৫৯টি শিল্প ইউনিট যার মধ্যে ২৮টি শিল্প প্রতিষ্ঠান চললেও বাকিগুলো এখনও আলোর মুখ দেখেনি।

শরীয়তপুর বিসিকের উপ ব্যবস্থাপক মনির হোসেন বলেন, “এফ.কে হাইড্রোলিক ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসের স্বয়ংক্রিয় ইট প্রস্তুতের মেশিন উৎপাদন শরীয়তপুর শিল্প নগরীকে সমৃদ্ধ করেছে। মেশিনগুলো যুগোপযোগী। যেখানে সরকার ঘোষণা দিয়েছে ২০২৫ সালের পর ইটভাটা শূন্যে নামিয়ে আনবে সেখানে এ ধরনের শিল্প ইউনিট অবশ্যই সময়োপযোগী একটি পদক্ষেপ।”

“বিসিক থেকে ওই শিল্প ইউনিটটিকে সব ধরনের সুযোগ সুবিধা দিয়ে যাচ্ছি আমরা। এখানকার অটোমেটিক ইট তৈরির মেশিন দিয়েই বিসিকে ‘শরীয়তপুর ইন্ডাষ্ট্রিজ’ নামে ইট প্রস্তুতের একটি কারখানা গড়ে উঠেছে। সেখানেও তৈরি হয়েছে কর্মসংস্থান,” বলেন তিনি।

এই মেশিন তৈরির ফলে নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হবে বলে আশা প্রকাশ করেন মনির হোসেন।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ