২০১৬ সালে দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকায় প্রকাশিত একটি ভিত্তিহীন সংবাদ দেখে পাঠ্যপুস্তকে পরিবর্তন সম্পর্কে অসত্য বক্তব্য দেয়ায় ভুল স্বীকার করেছেন জাতীয় পার্টির সাংসদ ফখরুল ইমাম।
জাতীয় সংসদে দ্বিতীয় থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্যবই থেকে বেশ কিছু বিষয় সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে যে বক্তব্য তিনি দিয়েছেন, এর কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তার বক্তব্যের সূত্র ধরে আলোচিত বইগুলো যাচাই করে ফখরুল ইমামের অভিযোগের কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি।
তার ওই বক্তব্য অনেকটা ধারণাপ্রসূত বলে স্বীকার করেছেন ময়মনসিংহ-৮ আসনের এই সংসদ সদস্য। গতকাল তিনি বলেন, ‘নিজের এই বক্তব্যের ভুল স্বীকার করে জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চোধুরীর কাছে এটি এক্সপাঞ্জ (প্রত্যাহার) করার আবেদন করেছেন।
এদিকে এরই মধ্যে তার সংসদে দেওয়া ওই বক্তব্য নিয়ে বিভিন্ন মহলে চলছে জোরালো সমালোচনা।
একজন সংসদ সদস্যের এ ধরনের মনগড়া বক্তব্য দেওয়া ঠিক হয়নি বলে মনে করছেন বিশিষ্ট জনেরা।
গতকাল সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে নিজের ভুলের কথা স্বীকার করে ফখরুল ইমাম বলেন, ‘আমি সব সময় ডাবল চেক বা ত্রিপল চেক করি। কিন্তু পত্রিকার ভেতরে এটা ২০১৬ সালের ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, সেটা আমি লক্ষ করিনি। তাড়াহুড়ার মধ্যে আমি খেয়াল করিনি। ভুলটা আমারই হয়েছে। বিষয়টি খেয়াল করা দরকার ছিল।’
ফখরুল ইমাম বলেন, ‘আমি এটা মিস করেছি, আমার বক্তব্য এক্সপাঞ্জ (প্রত্যাহার) করার জন্য আবেদন করেছি। আমি ২০১৬ সালের ২ জুলাইয়ের একটা রিপোর্ট ২০২২ ভেবে ভুল করে বক্তব্য দিয়েছি। ওই তারিখটা মিস করার ফলে এই গণ্ডগোলটা হয়েছে। আমি এই ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছি।’
কি বলেছিলেন ফখরুল ইমাম?
‘এই যে শিক্ষাব্যবস্থা প্রাইমারিতে আছে, সেখানে ক্লাস টুতে ‘সবাই মিলে কাজ করি’ শিরোনামে মহানবীর সংক্ষিপ্ত জীবনী ছিল, সেটা বাদ দিয়েছে। ক্লাস থ্রির পাঠ্যবই থেকে ‘খলিফা হযরত আবু বকর’ শিরোনামে একটা সংক্ষিপ্ত জীবনী ছিল, সেটা বাদ দিয়েছে। চতুর্থ শ্রেণিতে খলিফা হযরত ওমরের সংক্ষিপ্ত জীবনী ছিল, সেটা বাদ দিয়েছে। পঞ্চম শ্রেণিতে নবীজীর বিদায় হজ নিয়ে লেখা, সেটা বাদ দিয়েছে।’
ফখরুল ইমাম সংসদ অধিবেশনে নিজের বক্তব্যে আরও বলেন, ‘পঞ্চম শ্রেণির বইয়ে ‘বই’ নামক একটা কবিতা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যেটা ধর্মীয় গ্রন্থ আল কোরআন বিরোধী কবিতা। আর ষষ্ঠ শ্রেণিতে ‘লাল গরু’ নামক একটি ছোট গল্প আনা হয়েছে যা মুসলিম শিক্ষার্থীদের শেখানো হচ্ছে গরু হচ্ছে মায়ের মতো, তাই গরু জবাই করা ঠিক নয়। অর্থাৎ হিন্দুত্ববাদ। সপ্তম শ্রেণির বইতে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘লালু’ নামক একটি গল্প ঢুকানো হয়েছে। যাতে শেখানো হচ্ছে হিন্দুদের কালীপূজা ও পাঠা বলির কাহিনী। অষ্টম শ্রেণির বইতে হিন্দুদের ধর্মগ্রন্থ রামায়ণের সংক্ষিপ্ত রূপ অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।