আমাজন বন নিয়ে একটা সুসংবাদ দিয়েছে ব্রাজিল সরকার। আমাজনের ব্রাজিল অংশে বন নিধন একেবারে বন্ধ না হলেও উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে বলে জানিয়েছেন দেশটির কর্মকর্তারা।
সাবেক প্রেসিডেন্ট কট্টর ডানপন্থী জাইর বলসোনারোর আমলে আমাজনে রীতিমতো বন উজাড়ের উৎসব চলছিল। তবে বন নিধন বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সবশেষ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মধ্যদিয়ে ক্ষমতায় আসেন লুলা দা সিলভা। এরপর সেই প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন শুরু করেন তিনি।
লুলার সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ক্ষমতার প্রথম ছয় মাসেই বন ধ্বংসের হার গত বছরের চেয়ে ৩৩ দশমিক ৬ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। অর্থাৎ ২০২২ সালের প্রথম ছয় মাসে যে পরিমাণ বন ধ্বংস হয়েছে, চলতি বছর তথা ২০২৩ সালের প্রথম ছয় মাসে বন ধ্বংসের পরিমাণ এক-তৃতীয়াংশ কমেছে।
আমাজনের স্যাটেলাইট চিত্র প্রকাশ করে সরকার আরো জানিয়েছে, ২০২২ সালের প্রথম ছয় মাসে যেখানে ৩ হাজার ৯৮৮ বর্গকিলোমিটার এলাকার বন ধ্বংস হয়েছিল, ২০২৩ সালে তা কমে ২ হাজার ৬৪৯ বর্গ কিলোমিটারে এসে দাঁড়িয়েছে। তবে সরকারের প্রকাশিত স্যাটেলাইট চিত্র যাচাই করা হয়নি বলে জানিয়েছে বিবিসি।
আমাজন বনের ৬০ ভাগই ব্রাজিলে। ১৩ ভাগ পেরুতে ও বাকি অংশ কলম্বিয়া, ভেনিজুয়েলা, ইকুয়েডর, বলিভিয়া, গায়ানা, সুরিনাম ও ফ্রেঞ্চ গায়ানায়। পৃথিবীর ২০ ভাগ অক্সিজেন এই বন থেকে আসে। তাই একে ‘পৃথিবীর ফুসফুস’ও বলা হয়।
জলবায়ু পরিবর্তন ঠেকাতেও বড় ভূমিকা রাখছে আমাজন। এর সুরক্ষায় প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট লুলা। বলেছেন, ২০৩০ সালের মধ্যেই বন নিধন একেবারে বন্ধ করবেন তিনি।
যদিও সেই লক্ষ্য অর্জন করতে গিয়ে ব্যাপক বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে তাকে। গাছকাটা কমিয়ে আনার পরেও প্রথম ছয় মাসে আমাজনে যে পরিমাণ এলাকা হারিয়েছে তা যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের তিন গুণ বলে জানিয়েছে বিবিসি।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে তৃতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন লুলা ডা সিলভা। তার দায়িত্ব নেয়ার ছয় মাসের মাথায় বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) আমাজন বন সম্পর্কিত স্যাটেলাইট চিত্র প্রকাশ করে ব্রাজিলের রাষ্ট্রীয় মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব স্পেস রিসার্চ (ইনপে)।
তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরে পরিবেশমন্ত্রী মেরিনা সিলভা সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা আমাজনের বন উজাড়ের একটি নিম্নগামী প্রবণতায় পৌঁছেছি।’ গত বছরের একই সময়ের তুলনায় চলতি বছরের জুন মাসে রেকর্ড ৪১ শতাংশ বন নিধন কমেছে বলে জানিয়েছে ইনপে।