1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

মেট্রোরেলে ঝুঁকছে মানুষ, বাস-মালিকরাও চান আধুনিকতা

নিজস্ব প্রতিবেদক : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
বুধবার, ১২ জুলাই, ২০২৩

রাজধানীর গণপরিবহনের ক্ষেত্রে যাত্রীদের স্বস্তি এনে দিয়েছে মেট্রোরেল। স্বল্প সময়ে ও কোনও ধরনের ভোগান্তি ছাড়াই এক স্থান থেকে আরেক স্থানে যাতায়াতের নির্ভরযোগ্য যান এখন মেট্রোরেল। তাই যাত্রীরা এখন বাসের বিকল্পে মেট্রোরেল ব্যবহারে অধিক আগ্রহী। দেশের আধুনিক পরিবহন মেট্রোরেলের পুরো অংশ চালু না হলেও উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশে যাত্রীদের নিয়মিত ব্যবহার বেড়েছে। এতে ভবিষ্যতে যাত্রী-সংকটে পড়ার শঙ্কায় রয়েছেন বাস মালিক ও শ্রমিকরা।

তবে বাস কর্তৃপক্ষ বলছে, বাসগুলো যদি আধুনিক না করা হয়, সুযোগ-সুবিধা ও সঠিক ব্যবস্থাপনা না থাকে, তাহলে যাত্রীরা আর বাসে চড়বে না। এ জন্য বাস কোম্পানির মালিকরা দফায় দফায় মিটিং করছেন, এ নিয়ে কাজ করছেন। ফ্র্যাঞ্চাইজি পদ্ধতির বিষয়েও ভাবছেন তারা।

সম্প্রতি মেট্রোরেলের বিভিন্ন স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, অফিস সময় মেট্রোরেলে সকাল ও সন্ধ্যায় কর্মজীবী মানুষের ব্যাপক ভিড়। কেবল মেট্রোরেল-সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা নন, দূর এলাকার বাসিন্দারাও উত্তরার অফিসে আসা-যাওয়ায় মেট্রোরেল ব্যবহার করছেন। শুধু দীর্ঘ যাত্রা নয়, এক স্টপেজ থেকে আরেক স্টপেজে যেতেও সারা দিনই স্থানীয়রা মেট্রোরেল ব্যবহার করছেন।

অন্যদিকে বাসচালক ও সহকারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সারা দিনের চলাচলে যাত্রীর সংখ্যা তেমন একটা না কমলেও চাকরিজীবী যাত্রীদের উল্লেখযোগ্য একটি অংশ আর বাস ব্যবহার করছেন না। ফলে মূল চাহিদার সময় সকাল ও সন্ধ্যায় আগের তুলনায় যাত্রী অনেকাংশই কমেছে। উত্তরা থেকে মতিঝিল মেট্রোরেল পুরোপুরি চালু হলে যাত্রীর সংখ্যা আরও অনেক কমবে বলে ধারণা করছেন বাসশ্রমিকরা।

শিকড় পরিবহনের সহকারী আবুল রাজ্জাক বলেন, এখনও যাত্রী তেমন কমে নাই। তবে আগারগাঁও পর্যন্ত যাত্রী পাওয়া যায় না। যারা পল্টন-মতিঝিলে যায়, তারাই এখন বাসের যাত্রী। সামনে মেট্রোরেল পুরোপুরি চালু হইলে যাত্রীর সংখ্যা আরও কমে যাবে, এইটা তো প্রায় নিশ্চিত।

অফিস সময়ে যাত্রী কমে গেছে জানিয়ে বিহঙ্গ বাসের সহকারী রাজু বলেন, আগে অফিসের সময় মিরপুর যাইতে যাত্রীরা ভিড় করে দাঁড়াইয়া থাকতো। এখন ওই ভিড় কমে গেছে। সন্ধ্যায় আগারগাঁওয়ের পর থেকে লোকই পাওয়া যায় না। মিরপুর ১০ নম্বরে জ্যামে আটকায়া না থাকতে সবাই এখন মেট্রোরেলে করেই চলে যায়।

সন্ধ্যার দিকে আগারগাঁও স্টেশনে কথা হয় অফিস-ফেরত যাত্রী নাইমুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি সংসদ ভবন এলাকার মনিপুরী পাড়ার বাসিন্দা। নাইমুল বলেন, মেট্রোরেল থেকে নেমে বাসায় যেতে হয়। তবু উত্তরা অফিসে যেতে আমার জন্য মেট্রোরেল ব্যবহারই সুবিধার। ৩০ থেকে ৪০ মিনিটের মধ্যে বাসায় পৌঁছে যাই। অথচ আগে রাস্তায় তিন ঘণ্টার মতো বসে থাকতে হতো।

আরেক যাত্রী সাদিয়া তুলি বলেন, মেট্রোরেল অবশ্যই আমাদের জন্য অনেক বড় উপকার হয়েছে। এখন অফিস আওয়ারে ভিড় বেড়েছে। তবে বাসে যাতায়াত করার মতো ভোগান্তি আর নেই।

এদিকে উত্তরা ও আগারগাঁও এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে নিয়মিত মেট্রোরেল ব্যবহার বেড়েছে। এক স্টপেজ থেকে আরেক স্টপেজ যেতেও তারা মেট্রোরেল ব্যবহার করছেন। যাতায়াতের সুবিধার্থে এমআরটি পাস করে নিয়েছেন তারা।

এ বিষয়ে মিরপুর পল্লবীর বাসিন্দা মো. তারিক বলেন, মিরপুর ১৩ নম্বরে আমার কাপড়ের দোকান। মেট্রোরেলে আসতে লাগে ৫ মিনিট। আগে বাসে জায়গায় জায়গায় থেকে লোক ওঠাইতো। এতে সময় লাগতো অনেক।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, মেট্রোরেলের সঙ্গে টিকে থাকতে হলে বাস-মালিকদের যেমন যাত্রীসেবার মান বাড়াতে হবে, তেমনি মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষেরও উচিত হবে ভাড়া যাত্রীবান্ধব করা। এতে মানুষ মেট্রোরেলের প্রতি আগ্রহী হবে। তখন কে ভালো সেবা দিচ্ছে, এমন প্রতিযোগিতা তৈরি হবে। অন্যথায় মেট্রোরেলের ভাড়া বেশি থাকলে অনেক যাত্রীর পক্ষে নিয়মিত মেট্রোরেল ব্যবহার সম্ভব না-ও হতে পারে। ফলে তারা আবার বাসের প্রতি ঝুঁকবে।

তিনি আরও বলেন, কেবল একশ্রেণির জন্য তো আর মেট্রোরেল নয়। বিভিন্ন আয়ের মানুষ সড়কে যাতায়াত করে। তাই মেট্রোরেলকে গণপরিবহন হয়ে উঠতে হলে অবশ্যই এর ভাড়া কমাতে হবে।

শিকড় পরিবহনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শাহাজালাল বলেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সবকিছুর পরিবর্তন হচ্ছে। মেট্রোরেল হওয়ার পাশাপাশি ঢাকা সিটি ও এর সড়কগুলোও সুন্দর হচ্ছে। সুতরাং সবকিছুর সঙ্গে মিল রেখে যদি আমাদের ব্যবসা করতে হয়, তাহলে গাড়িগুলো আরও মানসম্মত করতে হবে। সেই চিন্তাই করছি আমরা।

তিনি আরও বলেন, অবশ্যই আমাদের যাত্রীসেবার মান বাড়াতে হবে। কারণ মেট্রোরেলের মতো আধুনিক যানে চড়ে যাত্রীরা অভ্যস্ত হয়ে যাবে। তখন যদি আমাদের বাসগুলো আধুনিক না করি, সব সুযোগ-সুবিধা ও সঠিক ব্যবস্থাপনা না থাকে, তাহলে তো যাত্রীরা আর বাসে চড়বে না। বাস কোম্পানির মালিকরা দফায় দফায় মিটিং করছি, কাজ করছি।

রুট রেজুলাইশনের বিষয়ে এই পরিচালক বলেন, এটি সময় সাপেক্ষে ব্যাপার। তবে হয়ে যাবে। ধীরে ধীরে বাস-মালিকরাও বাস ফ্র্যাঞ্চাইজির দিকে যাবে বলে আশা করা যায়।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ