উৎপাদনের ভরা মৌসুমে এসে এবার পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত, সহনীয় তাপমাত্রা ও বাংলাদেশ চা বোর্ডের ব্যাপক নজরদারিতে দেশে রেকর্ড পরিমাণ চা উৎপাদনের উজ্জ্বল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। গেলো বছরের তুলনায় এ পর্যন্ত ৫৯ লাখ কেজি চা উৎপাদন বেড়েছে। শুধু তাই নয়, এ অঞ্চলে ১৬৯ বছরের চা চাষের ইতিহাসে উৎপাদনে রেকর্ড গড়ার আশা করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশের ইতিহাসে ২০২১ সালে সর্বোচ্চ চা উৎপাদন হয়েছিল ৯ কোটি ৬০ লাখ কেজির বেশি। এ বছর চা বোর্ডের দেয়া লক্ষ্যমাত্রা ১০ কোটি ২০ লাখ কেজি চা উৎপাদন; যা অনায়াসে অর্জনের সম্ভাবনা দেখছেন কর্মকর্তারা।
সরেজমিনে দেখা যায়, মৌলভীবাজারে ছোটবড় মিলে প্রায় ৯৩টি চা বাগান রয়েছে। জেলার সবকটি উপজেলার পাহাড়ের বুকজুড়ে সারি সারি চা বাগান। যেদিকে চোখ যায়, শুধুই গাঢ় সবুজের সমাহার। সাম্প্রতিক সময়ে পরিমিত বৃষ্টিপাত আর সূর্যের সহনীয় তাপমাত্রা পেয়ে চায়ের গাছগুলো যেন সতেজ-সজীবতা ফিরে পেয়েছে। একই সঙ্গে কচি পাতার সমারোহে ভরে ওঠেছে এসব চা বাগান। নারী চা শ্রমিকরা ভোর থেকেই এ কচি পাতা তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। মৌসুমের প্রায় শেষ দিকে এসে বেশি বেশি চা পাতা তুলতে পাড়ায় তারা খুশি।
তবে এ বছর চা উৎপাদন মৌসুমের শুরুতে টানা মাস কয়েক বৃষ্টিপাত না থাকায় চা বাগানগুলো প্রচণ্ড খরার কবলে পড়ে। তবে চা উৎপাদনের ভরা মৌসুম জুন, জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে এসে রাতে নিয়মিত বৃষ্টি ও দিনে সহনীয় মাত্রায় সূর্যের আলো চা উৎপাদনে আশীর্বাদ হয়ে দেখা দিয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, চায়ের ভালো উৎপাদনের জন্য বছরে কম করে হলেও ২ হাজার মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের প্রয়োজন। এবার জানুয়ারি থেকে মধ্য সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১ হাজার ৯৩০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। এতে চায়ের উৎপাদন ভালো হয়েছে।
বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম জানান, গেলো বছরের তুলনায় এ পর্যন্ত ৫৯ লাখ কেজি চা অতিরিক্ত উৎপাদন হয়েছে। এ ধারা আরও দু-এক মাস অব্যাহত থাকলে এ বছর চায়ের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।
চা বোর্ডের প্রকল্প পরিচালক ড. এ কে এম রফিকুল হক জানান, উৎপাদন বাড়াতে বাগানগুলোতে নজররদারিও জোরদার করা হয়েছে। এছাড়া নানাভাবে বাগান কর্তৃপক্ষকে প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। এতে এ বছর মৌসুম শেষে এসে চায়ের উৎপাদন বেজায় ভালো হচ্ছে।