1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

পদ্মা রেল সেতু : শেখ হাসিনার হাত ধরে আরেক মাইলফলক

নিউজ এডিটর : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
বৃহস্পতিবার, ১২ অক্টোবর, ২০২৩

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ স্বাধীন করে দিয়েছেন। তারই সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর স্বাধীন বাংলাদেশকে সর্বাধুনিক রাষ্ট্রে পরিণত করার মিশনে নেমেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আধুনিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বিচ্ছিন্ন ভৌগোলিক কাঠামোকে উন্নয়নের ছোয়ায় জোড়া দিয়ে চলেছেন। বাংলাদেশের প্রমত্ত পদ্মা নদীতে মুন্সীগঞ্জ ও শরীয়তপুর অংশ বহুল আকাক্সিক্ষত পদ্মা সেতু নির্মাণ করে দুটি বিচ্ছিন্ন জনপদকে একত্রে করে দেশের মানচিত্রের ভৌগোলিক রেখায় একটি অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। সেই স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ১০ অক্টোবর রেললাইনের শুভ উদ্বোধন করে দেশের উন্নয়নের ইতিহাসে আরেকটি মাইলফলক যুক্ত করেন।

অবাক বিস্ময়ে সারাবিশ্বের আজ বাংলাদেশের উন্নয়নের দিকে তাকিয়ে রয়। এই উন্নয়নের মহানায়ক জননেত্রী শেখ হাসিনা। উন্নয়নের মহানায়ক জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতেই সর্বাধুনিক বাংলাদেশের অকল্পনীয় মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন। মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, কর্ণফুলি টানেল, হযরত শাহাজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের থার্ড টার্মিনাল নির্মাণ দেশের উন্নয়নের বাস্তবচিত্র।

মহান স্বাধীনতা ওবঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উত্তর বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু পরিবার হত্যাকাণ্ডের বিচার ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পর কোটি কোটি বাংলাদেশীর স্বপ্নের পদ্মা সেতু নির্মাণ সবচেয়ে বড় অর্জন। পদ্মা সেতুতে রেলওয়ে একজন বাংলাদেশি হিসেবে আমি এই অর্জনে গর্ববোধ করছি। সেই সঙ্গে বঙ্গবন্ধু কন্যা আধুনিক বাংলাদেশের নির্মাতা মাদার অব হিউম্যানিটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে চলবে সড়ক পথের যানবাহন। দ্বিতল পদ্মা সেতুর নিচতলা দিয়ে চলবে ট্রেন। এই পদ্মাসেতুর যথাযথ ব্যবহারে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক শক্তিতে আরও শাণিত করবে। বাংলাদেশ রেলওয়ে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের আওতায় ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার দীর্ঘ নতুন রেল ট্র্যাক নির্মাণ করছে। এর ৮২ কিলোমিটার অংশ ঢাকা ও ভাঙ্গাকে সংযুক্ত করে আজ খুলে দেওয়া হয়েছে এবং এর যশোর সংযোগকারী অবশিষ্ট অংশটি আগামী বছরের জুনে চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গত বছরের জুনে যুগান্তকারী পদ্মা সেতু উদ্বোধনের এক বছর দুইমাস পর পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা-ভাঙ্গা রেল সার্ভিস উদ্বোধন করা হয়েছে। গত ৭ সেপ্টেম্বর পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকা-ভাঙ্গা রুটে বিশেষ ট্রেনের ট্রায়াল সম্পন্ন হয়। পদ্মা সেতুতে পাথরহীন রেললাইনের কাজ শেষ হওয়ার পর গত ৪ এপ্রিল ভাঙ্গা থেকে পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্ত পর্যন্ত ট্রায়াল ট্রেন চালায় বাংলাদেশ রেলওয়ে।

গত বছরের ১৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘পদ্মা সেতু রেল সংযোগ নির্মাণ প্রকল্প’-এর আওতায় ঢাকা ও যশোরের মধ্যে রেলসংযোগ নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৯,২৪৬.৮০ কোটি টাকা। এতে চীনের এক্সিমব্যাংক ২১,০৩৬.৭০ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে। প্রকল্পের বিশদ বিবরণে বলা হয়েছে, সমাপ্ত হওয়ার পর, সংযুক্ত রেল যোগাযোগ পদ্মা সেতুর মাধ্যমে দেশের মধ্য ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানী শহরের প্রবেশ পথ আরো বর্ধিত হবে- যা মুন্সিগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর এবং নড়াইল জেলার নতুন এলাকাকে সংযুক্ত করবে।

প্রকল্পটি ঢাকা-যশোর-খুলনাকে ২১২.০৫ কিলোমিটার সংক্ষিপ্ত রুট দিয়ে বিকল্প রেলপথ সংযোগ স্থাপন করবে। এটি বাংলাদেশে ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ে নেটওয়ার্কেরআরেকটি উপ-রুট স্থাপনকরবেএবংজাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক মালবাহী ও বিজি কন্টেইনার ট্রেন পরিষেবা চালু করবে। এই রুটটি কন্টেইনার বহনের জন্য গতি ও লোড সীমাবদ্ধতা থেকে মুক্ত হবে। জননেত্রী শেখ হাসিনা ২০২২ সালের ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন। সেই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বারবার মনে করেছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যোগ্য উত্তরসূরী হিসেবে জননেত্রী শেখ হাসিনা আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের ঘোষণার মাধ্যমেই আবার প্রমাণ করেছেন বাঙালি জাতিকে দাবিয়ে রাখা যায় না। আজ আবারও আমাদের প্রিয় নেত্রীকে অভিনন্দন জানাই। দক্ষিণবঙ্গের একজন মানুষ হিসেবে আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নতচিত্তে কৃতজ্ঞতা জানাই। পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের পর পুরো জাতির পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছিলাম। অভিনন্দন জানাই সেই সব শ্রমিকদের যাদের নিরলস পরিশ্রমে এই স্বপ্নের সেতু ও রেলওয়ে নির্মিত হয়েছে।

পদ্মা সেতু আমাদের আবেগের সেতু, আত্মনির্ভরশীলতার প্রতীক। পদ্মা সেতু আমাদের আত্মবিশ্বাসের প্রতীক। আত্মগৌরবের প্রতীক এই পদ্মা সেতু বাঙালীদের সারাবিশ্বে আরেকবার মহিমান্বিত করেছে । পদ্মা সেতুর সেই মহিমাকে কলেবরে বৃদ্ধি করেছে ঢাকার সাথে দক্ষিণ বঙ্গের রেলওয়ে যোগাযোগ।জননেত্রীর একজন স্বাস্থ্যকর্মী হিসেবে, আমি এ স্বপ্ন জয়ের পদ্মাসেতুকে অর্থনৈতিক বড় প্রবৃদ্ধির সাথে সাথে দেশের স্বাস্থ্যখাতের জন্য আরেকটি মাইলফলক হিসেবে উল্লেখ করতে চাই। পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার সরাসরি যোগাযোগ সৃষ্টি হবে। ফলে সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে পদ্মাসেতু স্বাস্থ্যখাতেও অবদান রাখবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছাড়াও আগে যেখানে মুমূর্ষু রোগীকে পদ্মা নদী পারের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হতো। অনেক রোগী কাওরাকান্দি, কাঠালবাড়ি ও মাঝিকান্দি নৌঘাটে ফেরি পারাপার না হতে পেরেই বিনা চিকিৎসায় মারা যেত। এসব মর্মভেদী ঘটনা আমাকে খুব পীড়া দিত। পদ্মা সেতু চালু হবার ফলে এসব ঘটনার থেকে জাতি মুক্ত পেয়েছে। এসব রোগী বিনাবাধায় পদ্মা নদী পার হয়ে রাজধানীতে প্রবেশ করে সেবা নিয়ে জীবন রক্ষা করতে পারছে। এই পদ্মাসেতু চালু হবার ফলে স্বাস্থ্যখাতে নতুন দিগন্তের দ্বার উন্মোচিত হলো। বাংলাদেশের স্বাস্থ্যক্ষেত্রে এই পদ্মাসেতু কত খানি অবদান রাখবে সেটি এসব ভুক্তভোগী পরিবার ছাড়াও ২১ জেলার মানুষ ভাল করেই জানেন।

পরিশেষে বলতে চাই, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালীকে স্বাধীন দেশ উপহার দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর যোগ্য উত্তরসূরী জ্যেষ্ঠ কন্যা গনতন্ত্রের মানসকন্যা মাদার অব হিউম্যানিটি জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত দিয়ে বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে পদ্মা সেতুর মত বিভিন্ন মেগা প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়িত হোক। দ্রুতবাস্তবায়িত হোক জননেত্রীর সকল স্বপ্নযাত্রা। সফল হোক জননেত্রীর ভিশন-২০৪১ সহ ডেল্টাপ্ল্যান। জননেত্রী শেখ হাসিনার সুস্থতা ও শতায়ু কামনা করছি। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু। বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।

লেখক : অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ – উপাচার্য, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ