গত এক দশকের তুলনায় দেশের মোট শ্রমশক্তি ২ কোটির বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। এর পাশাপাশি বিগত বছরগুলোর তুলনায় কমে এসেছে বেকারত্বের হার।
সম্প্রতি বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) শ্রমশক্তি জরিপ-২০২২ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব তথ্য।
প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, দেশের ১৬ কোটি ৯৮ লাখ ৭০ হাজার জনসংখ্যার মধ্যে মোট কর্মক্ষম জনসংখ্যার পরিমাণ ১১ কোটি ৯৩ লাখ ৭০ হাজার। কর্মক্ষম এ জনসংখ্যার মধ্যে শ্রমশক্তির আওতায় আছেন ৭ কোটি ৩০ লাখ ৫০ হাজার মানুষ।
শ্রমশক্তির আওতায় থাকা মানুষের মধ্যে কর্মে নিয়োজিত আছেন এমন মানুষের সংখ্যা ৭ কোটি ৪ লাখ ৭০ হাজার। শ্রমশক্তির অন্তর্ভুক্ত হয়েও কোনো ধরনের কর্মে নিয়োজিত নেই অর্থাৎ বর্তমানে দেশের মোট বেকার সংখ্যা ২৫ লাখ ৮০ হাজার।
২০২২ সালকে ভিত্তি ধরে, দেশে বর্তমান বেকারত্বের হার দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৫৩ শতাংশে, যা বিগত বছরগুলোর তুলনায় কম। ২০১০ সালে বাংলাদেশে বেকারত্বের হার ছিল ৪ দশমিক ৬ শতাংশ, যা ২০১৩ সালে কমে হয় ৪ দশমিক ৩ শতাংশ। এরপর প্রায় এক দশক বেকারত্বের হার চারের ঘরে থাকলেও এবার তা সাড়ে তিন শতাংশে নেমে এসেছে।
বিবিএসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশে পুরুষের তুলনায় নারীদের মধ্যে বেকারত্বের হার সামান্য বেশি। বর্তমানে দেশে পুরুষ জনগোষ্ঠীর বেকারত্বের হার ৩ দশমিক ৫০ শতাংশ, বিপরীতে নারী জনগোষ্ঠীর বেকারত্বের হার ৩ দশমিক ৫৯ শতাংশ।
অবশ্য সংখ্যার বিচারে নারীদের তুলনায় পুরুষ বেকারের সংখ্যা ৭৪ হাজার বেশি। দেশে যেখানে পুরুষ বেকারের সংখ্যা ১ লাখ ৬৬ হাজার, সেখানে নারী বেকারের সংখ্যা ৯২ হাজার।
এদিকে গ্রামে শহরের থেকে বেকারত্বের হার তুলণামূলক কম। গ্রামীণ অঞ্চলে বেকারত্বের হার ৩ দশমিক ৩২ শতাংশ, যা শহরে ৪ দশমিক ১৯ শতাংশ।
শ্রমশক্তি জরিপ প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের প্রধান অর্থনৈতিক খাতে কর্মে নিয়োজিত মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মানুষ কাজ করে কৃষিখাতে। দেশের কৃষিখাতে ৪৫ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষ কাজ করে।
কৃষিখাতের পরে সবচেয়ে বেশি মানুষ সেবাখাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। দেশের সেবাখাতে কাজ করা মানুষের হার ৩৭ দশমিক ৬ শতাংশ। এছাড়া দেশের আরেকটি প্রধান খাত শিল্পে ১৭ শতাংশ মানুষ কাজ করে।
বিগত এক দশকের পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করে দেখা যায়, প্রায় এক দশক পরে দেশের কৃষিখাতে কর্মক্ষম মানুষের অংশগ্রহণের পরিমাণ ৪৫ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। শুধু বিগত পাঁচ বছরে কৃষিখাতে এ সংখ্যা বেড়েছে ৪ দশমিক ৮ শতাংশ।