1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

সাবেক প্রধান বিচারপতির কারাদণ্ড : কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়

ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
বৃহস্পতিবার, ১১ নভেম্বর, ২০২১
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা (এস কে সিনহা)

ঋণ জালিয়াতি এবং অর্থ পাচারের মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহাকে ১১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এর মধ্যে ঋণ জালিয়াতির মামলায় চার বছর এবং অর্থ পাচারের মামলায় সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি দু’টি ধারায় তাকে ৪৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ অর্থ না দিলে তার সাজা আরও ছয় মাস বাড়বে বলেও জানা গেছে। এছাড়া তার অ্যাকাউন্টে অবরুদ্ধ থাকা ৭৮ লাখ টাকা বাজেয়াপ্ত করারও আদেশ দেওয়া হয়েছে।

ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম মঙ্গলবার দুপুরে এই রায় ঘোষণা করেন। এ ক্ষেত্রে উল্লেখ করা দরকার, বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনো সাবেক প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলায় সাজার রায় এটাই প্রথম। তথ্য মতে, দুই ধারার সাজা একসঙ্গে কার্যকর হবে বলে সাবেক এই প্রধান বিচারপতিকে সব মিলিয়ে সাত বছর জেল খাটতে হবে। তবে তিনি আত্মসমর্পণ করলে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার সুযোগ পাবেন বলে জানা যায়। এটাও উল্লেখ্য যে, ফারমার্স ব্যাংকের (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক) এই ঋণ আত্মসাতের মামলার ১১ আসামির মধ্যে আটজনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড এবং দুইজনকে খালাস দিয়েছেন আদালত। রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক উল্লেখ করেছেন, ‘ফারমার্স ব্যাংকের যে ‘ক্রেডিট পলিসি’ রয়েছে, প্রভাব খাটিয়ে তা লঙ্ঘন করে সাবেক প্রধান বিচারপতির জন্য ঋণ অনুমোদন করা হয়েছিল। সেই অর্থ যে পাচার হয়েছিল, সেটাও এ মামলায় প্রমাণিত হয়েছে।’

প্রসঙ্গত আমরা বলতে চাই, দায়িত্ব পালনকালে এই ধরনের অপরাধ জন আস্থার ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে এমন আশঙ্কা অমূলক নয়। তবে এটাও লক্ষণীয় যে, এই রায়ের মধ্য দিয়ে এই বিষয়টিও সামনে এলো, কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। মনে রাখা দরকার, বিচার বিভাগের কাছে মানুষ স্বচ্ছতা প্রত্যাশা করে, সঙ্গত কারণেই এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে বিচার বিভাগ নিয়ে মানুষের মনে প্রশ্নের জন্ম দেবে, এমন আশঙ্কাও থেকে যায়- যা কোনোভাবেই প্রত্যাশিত হতে পারে না। আইনমন্ত্রীও বলেছেন, দুর্নীতির মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার রায়ের মাধ্যমে কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয় প্রমাণিত হলেও তা বিচার বিভাগের জন্য সুখকর নয়।

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর যে ২২ জন বিচারক প্রধান বিচারপতির পদে অধিষ্ঠিত হয়েছেন, তাদের মধ্যে বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা অনেক দিক দিয়েই প্রথম। তিনিই প্রথম প্রধান বিচারপতি, ২০১৭ সালের নভেম্বরে যার দায়িত্বের অবসান হয়েছিল পদত্যাগের মধ্য দিয়ে। এছাড়া বাংলাদেশের ইতিহাসে তিনিই প্রথম সাবেক প্রধান বিচারপতি, দুর্নীতির দায়ে যার সাজার রায় এসেছে আদালতে। ২০১৫ সালের ১৭ জানুয়ারি দেশের ২১তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন এস কে সিনহা। প্রধান বিচারপতি হওয়ার আগে থেকেই নানা কারণে আলোচিত এস কে সিনহা তার ১০৩০ দিনের দায়িত্বে বারবার সংবাদ শিরোনামে এসেছেন নানা ঘটনায়। বয়স অনুযায়ী ২০১৮ সালের ৩১ জানুয়ারি তার অবসরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নজিরবিহীন এক পরিস্থিতির মধ্যে তার কার্যকাল শেষ হয় মেয়াদের ৮১ দিন আগেই। সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের তোপের মুখে ছুটি নিয়ে বিদেশ যাওয়ার পর ২০১৭ সালের ১১ নভেম্বর তিনি সেখানে থেকেই পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন। তিনি ছুটি নিয়ে বিদেশ যাওয়ার পর তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অর্থ পাচার, আর্থিক অনিয়ম ও নৈতিক স্খলনসহ সুনির্দিষ্ট ১১টি অভিযোগ পাওয়ার কথা সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল।

এই রায়ের মাধ্যমে প্রমাণিত হলো, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। তবে এ কথা বলতেই হবে – এমন পরিস্থিতি বিচার বিভাগের জন্য মোটেই সুখকর নয়।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ