1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

খালেদার পাকিস্তান প্রেম : দূতাবাসের সাথে নিবিড় সম্পর্ক

ইবার্তা সম্পাদনা পর্ষদ : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
সোমবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২১

২০১৬ সাল। বৈশ্বিক জঙ্গিবাদে মদদ, অর্থায়ন, প্রশিক্ষন ও বিস্তারের সাথে প্রতক্ষভাবে জড়িত পাকিস্তানের কুখ্যাত গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই এর চর হিসেবে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ প্রসারের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে বেশ কিছু এজেন্ট – এমন গোপন তথ্যের উপর ভিত্তি করে বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো নজরদারি চালাচ্ছিল অনেকের উপর আর তা থেকে বেরিয়ে আসে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য এবং সংশ্লিষ্ট আরো কিছু অপরাধের খবর।

টানা গোয়েন্দা তৎপরতা এবং নজরদারির পর আইএসআই এর গুপ্তচর সন্দেহে দুই পাকিস্তানি নাগরিককে আটক করা হয়। তাদের একজনের নাম মোহাম্মদ রেহেমান। অন্যজন পাকিস্তান হাইকমিশনের প্রেস কাউন্সেলর আমব্রিন জানের ব্যাক্তিগত সহকারী আবরার আহমেদ খান।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর পাকিস্তানি হাই কমিশনের অনুরোধে মুচলেকা নিয়ে আবরার আহমেদকে ছেড়ে দেওয়া হলেও মোহাম্মদ রেহেমানকে পুলিশ গ্রেফতার দেখিয়ে রিমান্ডে নেয়। রিমান্ডে অংশ নেন বাংলাদেশের দুইটি গোয়েন্দা সংস্থার বিশেষ বিভাগের কয়েকজন বিশেষজ্ঞ। তাদের কাছে মোহাম্মদ রেহেমান স্বীকার করেন ছয় মাস আগে তিনি করাচি থেকে ঢাকা আসেন। তার সাথে পাকিস্তানি হাই কমিশনের কর্মকর্তাদের নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে।

শুধু তা-ই নয়। আরও জানা যায় পাকিস্তানের সাথে প্রত্যক্ষ যোগাযোগ রক্ষা করেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। আর এজন্য মাধ্যম হিসেবে পাকিস্তান হাইকমিশনের প্রেস কাউন্সেলর আমব্রিন জানের ব্যাক্তিগত সহকারী আবরার আহমেদ খান দায়িত্ব পালন করেন।

মোহাম্মদ রেহেমান এর ব্যাপারে পরে আসসি তার আগে দেখা যাক এই ছুপা রুস্তম আবরার খান সম্পর্কে আরো কিছু তথ্য।

আবরারের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল। তিনি বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থার নজরেদারিতেও ছিলেন অনেকদিন।

ঢাকায় তিনি আটক হওয়ার সময় তার কাছে অন্তত সাড়ে তিন হাজারেরও বেশি ভারতীয় জাল মুদ্রা পাওয়া যায়৷ যে রুপির একটা অংশ ছাপা হত পাকিস্তানে।
তাদের উদ্দেশ্য ছিল ভারতে এসব রুপি পাচার করে ভারতের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দেয়া।
দূতাবাস কর্মী হওয়া স্বত্তেও আবরার সম্পুর্ন নিয়ম বহিভূর্তভাবে সাদা নম্বর প্লেটযুক্ত মোটর সাইকেল ব্যাবহার করতেন। নিয়ম অনুযায়ী হলুদ প্লেটযুক্ত নম্বর প্লেট ( দূতাবাসের জন্য প্রযোজ্য) ব্যাবহার করার কথা ছিল তার।

সূত্রগুলো জানায়, আবরার আহমেদ খানের সন্দেহজনক গতিবিধির কারনে কয়েকমাস ধরেই তিনি গোয়েন্দা সংস্থা গুলোর নজরদারিতে ছিলেন। তিনি ২০১১ সাল থেকে ঢাকায় দায়িত্ব পালন করছেন। তার মোবাইল ফোন ট্রাক করে দেখা গেছে তিনি প্রায়ই বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে আসা যাওয়া করতেন। সেই সাথে আশেপাশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতেন৷ এসব কিন্তু তার কাজের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ ছিল না।

২০১৬ সালের কথা বলছি। বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থা গুলোর কাছে তথ্য ছিল, পাকিস্তানের কিছু নাগরিক ছদ্মবেশে বাংলাদেশে আইএসআই এর এজেন্ট হিসেবে গুপ্তচরবৃত্তি করছে। তারা বিভিন্ন পরিচয়ে ঘাপটি মেরে থাকলেও তাদের আসল লক্ষ্য এদেশে জঙ্গিবাদ ও জাল মুদ্রা ছড়িয়ে দেয়া৷
২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে পাকিস্তান হাইকমিশন কর্মী মাজহার খান ও একই বছরের ডিসেম্বর মাসে পাকিস্তানি কূটনীতিক ফারিনা আরশাদ জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার দ্বায় মাথায় নিয়ে বাংলাদেশ ছেড়েছেন । যা নিয়ে পাকিস্তানের সাথে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে চাপ সৃষ্টি হয়। যদিও এই গুপ্তচরদের মূলহোতা তখনও পর্যন্ত ঢাকায় সক্রিয় বলে গোয়েন্দারা ধারণা করেছেন। জঙ্গিবাদসহ বিভিন্ন ইস্যুতে দু’দেশের সম্পর্কে টানাপড়নের মধ্যে এমন তথ্য প্রমাণ পেয়েছেন তারা৷

এবার আসি সেই মোহাম্মদ রেহমানের বিষয়ে।
তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, রেহমান দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে অবস্থান করে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থার হয়ে গুপ্তচরবৃত্তিতে নিয়োজিত ছিল। তার সাথে আর্ন্তজাতিক জাল মুদ্রা ব্যাবসায়ী চক্রের ঘনিষ্ঠতার প্রমাণ পাওয়া গেছে। দেশে পরিকল্পিতভাবে অস্তিরতা সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করেছিলেন তিনি৷ তাকে জিজ্ঞাসাবাদে আরো বেশ ক’জন সন্দেহভাজন পাকিস্তানি নাগরিকের নাম পাওয়া গেছে।

যারা পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার হয়ে বাংলাদেশে তাদের গুপ্তচরবৃত্তি করেছে। তাদের সঙ্গে উগ্র- জঙ্গিগোষ্ঠীর সম্পৃক্ততার তথ্যও পাওয়া গেছে। গোয়েন্দা সংস্থা গুলো এসময় তাদের কাজ শুরু দেয়৷

র‍্যাব ২ এর তৎকালীন পরিচালক লে.কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদ এর বরাতে গণমাধ্যমের খবরে জানা যায় ২০১৬ সালের ২০ জানুয়ারি রাতে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানাধীন পলিটেকনিক্যাল কলেজের পিছনের রাস্তা থেকে পাকিস্তানি নাগরিক মোহাম্মদ রেহেমান এবং মোজাম্মেল হক ও ফারুক আহমেদ নামে দুই বাংলাদেশী নাগরিককে গ্রেফতার করা হয়৷ তাদের কাছে জাল ডলার সহ পাকিস্তানি ও ভারতীয় জাল রুপি উদ্ধার করা হয়৷

জিজ্ঞাসাবাদে তারা এই অঞ্চলে জাল মুদ্রার ব্যাবসার পাশাপাশি পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থার হয়ে তথ্য সংগ্রহে নিয়োজিত হওয়ার কথা স্বীকার করেন৷ স্থানীয় কিছু শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছে থেকে তারা তথ্য পেতেন। আর অই শুভাকাঙ্ক্ষীদের অর্থের যোগান দিতেই তারা জাল মুদ্রা সরবরাহ ও ব্যাবসা করতেন তারা৷

তারা জানান বিভিন্ন পেশাজীবি শ্রেণীতেও তাদের শুভাকাঙ্ক্ষী রয়েছে। ভারতে জাল রুপি পাচার করে দেশটির অর্থনীতি দূর্বল করাই ছিল তাদের লক্ষ্য।
তাদের কাছে থেকে সেসময় তিন লাখ ভারতীয় জাল রুপি, ৭০০ ইউএস ডলার এবং ২ হাজার ৭০০ পাকিস্তানি মুদ্রা জব্দ করা হয়।
মোহাম্মদ রেহেমানের কাছ থেকে একটি পাকিস্তানি পাসপোর্ট ও একটি পাকিস্তানি জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়া যায়।
এই তিন জনের কাছ থেকে ৮৯ হাজার ৪৬২ টাকা জব্দ করা হয়৷ জাল বিদেশি মুদ্রা বিক্রি করে তারা এই টাকা পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন৷

পুলিশ ও র‍্যাব সুত্র জানায় মোহাম্মদ রেহেমান বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত পাকিস্তানি নাগরিক। তার বাবার নাম আবদুল মান্নান ( পাকিস্তানি) । তিনি পাকিস্তানের করাচির কায়েদাবাদ থানাধীন শেরপাও কলোনীর ৩ নম্বর গলির বাসিন্দা। সেখানকার ১৯৩ নম্বর নিজ বাড়িতে স্ত্রী (পাকিস্তানি) ও তিন সন্তান নিয়ে থাকেন।

জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান তার বাড়ি বরিশালের গলাচিপা থানার চরশিবা।
পাকিস্তান থেকে ঢাকায় আসার পর মোহাম্মদপুরের রায়েরবাগের জৈনিক হারুনের বাড়ি ভাড়া নেন। তার সাথে গ্রেফতার হওয়া মোজাম্মেল হক চাপাইনবয়াবগঞ্জ শিবগঞ্জ থানার সাতরশিয়া গ্রামের সবেদ আলীর ছেলে। এছাড়া গ্রেফতার হওয়া ফারুক আহমেদের বাবার নাম ইকরামুল হক। তার গ্রামের বাড়ি চাপাইনবয়াবগঞ্জ শিবগঞ্জ থানার চৌকা গ্রামে।

এর আগে ডিবি পুলিশ ইদ্রিস আলী সহ আরো ১১ জন পাকিস্তানি নাগরিক গ্রেফতার করে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই এর সাথে তাদের সম্পৃক্ততার কথা জানতে পারে।

নিষিদ্ধ জঙ্গিগোষ্ঠী আনসারুল্লাহ বাংলা টিম ও জেএমবিকে পুর্নগঠনের প্রক্রিয়ার সঙ্গেও জড়িত তারা। আর তখনই পাকিস্তানি গুপ্তচরদের সন্ধানে নিয়োজিত হন গোয়েন্দারা। তালিকায় উঠে অনেকের নাম।
এই নজরদারিতে এক পর্যায়ে বিএনপি কার্যালয়ের সঙ্গে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থার নিবিড় যোগাযোগের তথ্য ও প্রমাণ উঠে আসে।
এখানে একটি বিষয় উল্লেখ করা প্রয়োজন গত শুক্রবার ২৬ নভেম্বর ২০২১ তারিখে আবারও একটি জাল রুপির চক্র ধরা পরে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে। এবারও যথারীতি পাকিস্তানের প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেল এই ঘটনার সাথে ।

পাকিস্তান থেকে মার্বেল পাথরের কন্টেইনারে করে জাল রুপি আসে চট্রগ্রামে। এরপর ঢাকায় এনে মজুত করা হয়। তারপর সুবিধামত সময়ে সীমান্ত এলাকা দিয়ে পাচার করা হত ভারতে।

রাজধানীতে বিশেষ অভিযান চালিয়ে ৭ কোটি ৩৫ লাখ ভারতীয় জাল রুপি সহ চক্রের ২ সদস্যকে আটক করে পুলিশের গুলশান বিভাগ । আটককৃতরা হলেন ফাতেমা আক্তার অপি ও শেখ মোঃ আবু তালেব।

গ্রেফতার ফাতেমা আক্তার অপি আন্তর্জাতিক সংঘবদ্ধ ভারতীয় জাল মুদ্রা পাচারকারীর সক্রিয় সদস্য। তিনি দীর্ঘদিন যাবত পাকিস্তান থেকে আন্তর্জাতিক চক্রের মাধ্যমে ভারতীয় জাল মুদ্রা কৌশলে সংগ্রহ করে দেশীয় চক্রের মাধ্যমে বিপননসহ ভারতে পাচার করতেন৷
তালেব পাকিস্তানি নাগরিক সুলতান ও শফির মাধ্যমে পাকিস্তান থেকে আমদানিকৃত মার্বেল পাথরের ৫০০ টি বস্তার মধ্যে গোলাপি সুতায় চিহ্নিত ৯৫ টি বস্তার মধ্যে সুকৌশলে ভারতীয় জাল মুদ্রা শ্রীলঙ্কা হয়ে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন।

ফাতেমা আক্তার অপির স্বামী দানেশ পাকিস্তানি নাগরিক। তাকে কয়েক বছর আগে ডিবি মতিঝিল বিভাগ গ্রেফতার করেছিল, তার নামে দুটি মামলাও রয়েছে। আবু তালেবেরও পাকিস্তানে যাতায়াত ছিল স্বামী পাকিস্তানি হওয়ায় ফাতেমাও বহুবার পাকিস্তান গিয়েছেন। এ সূত্রেই আইএসআই এর জাল রুপি চক্রের বাংলাদেশী এজেন্ট সুলতান ও শফির মাধ্যমে জড়িয়ে পরে তারা।

ফিরে আসি বিএনপির সাথে পাকিস্তানের প্রেমের বিষয়ে।
কিছুদিন আগেই ( ১৯ অক্টোবর ২০২১) পাকিস্তানি হাই কমিশনের নম্বর প্লেট যুক্ত একটি গাড়ি দ- ৪৫-০৬২ এসে দাঁড়ায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ের সামনে। সেই গাড়ি থেকে ১৫ টি খাম হস্তান্তর করা হয় গুলশান কার্যালয়ের সিকিউরিটির দায়িত্বে থাকা একজনের হাতে।

বিদেশি রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বিএনপি বা খালেদা জিয়াকে ফুলের তোড়া দিলেও তা সংবাদ সম্মেলন করে গর্বের সাথে জানান দেন মির্জা ফখরুল ইসলামরা। প্রেস উয়িং প্রধান শায়রুল কবির সব পত্রিকায় ছবিসহ বিবরণ পাঠিয়ে দেন সাথে সাথেই। তবে পাকিস্তান সেদিন কি দিয়ে গেল এ নিয়ে স্রেফ মুখে কুলুপ আঁটে দলটির প্রেস উয়িং।
গুলশান কার্যালয়ে যোগাযোগ করলে বিএনপির তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক জেড খান রিয়াজউদ্দিন নসু বিষয়টি চেপে গিয়ে বলেন ” পাকিস্তান হাইকমিশন থেকে কেউ এসেছিল কিনা তা আমি জানি না ” যদিও গণমাধ্যমে সেই গাড়ির ছবিসহ প্রতিবেদন ছাপা হয়।

কূটনৈতিক সম্পর্কের অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায়শ বিভিন্ন বন্ধুপ্রতিম দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানকে উপহার সামগ্রী পাঠান। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকেও আম পাঠিয়েছিলেন। আবার ইমরান খানের পক্ষ থেকেও ফিরতি উপহার আসে।

তবে পাকিস্তানিরা তাদের প্রেমাস্পদ সম্পর্কের চিহ্ন হিসেবে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জন্যও আম পাঠালো যা কূটনৈতিক সম্পর্কের কোন নীতিতে পরে জানা নেই। কারণ বিএনপি ক্ষমতাশীন দল না এমনকি বিরোধী দলও না। তাহলে অপর একটি রাষ্ট্রের কাছ থেকে তারা কিভাবে সৌজন্যতা পেল? এখানে রহস্য অবশ্যই আছে।
আবার গত এপ্রিলে যখন খালেদা জিয়া করোনায় আক্রান্ত হলেন, তখন উদ্বিগ্ন হয়ে যায় পাকিস্তান। তার খোঁজ খবর নিতে অস্থির হয়ে পরে দেশটি। তার সুস্থতা কামনায় চিঠি পাঠানো হয় পাকিস্তান সরকারের পক্ষ থেকে। যে চিঠি নিজে পৌঁছে দেন ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তানের হাই কমিশনার ইমরান আহমেদ সিদ্দিকী।
এতে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণ হয়, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত শক্তি পাকিস্তানের ষড়যন্ত্র বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এখনো চলমান।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, খালেদা জিয়া পাকিস্তানের মতার্দশে পথ চলেন, এটা বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে সর্বজনবিদিত বিষয়। ইতিপূর্বে বিভিন্ন সময়ে তার ও বিএনপির কর্মকাণ্ডে সেটি প্রকাশ পেয়েছে।
আসিফ নাওয়াজ জানজুয়া, একাত্তরে পাকিস্তান আর্মির কর্নেল ছিলেন। চট্রগ্রামের হালিশহরে অবস্থিত ৮ম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের কমান্ডিং অফিসার ছিলেন তিনি। অই ইউনিটের ডেপুটি কমান্ডার ছিলেন মেজর জিয়া, খালেদা জিয়ার স্বামী। মুক্তিযুদ্ধের পুরোটা সময় জানজুয়ার সাথে সেচ্ছায় অবস্থান করেন খালেদা জিয়া।
জিয়াউর রহমান রণাঙ্গন থেকে কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরকে ৪ বার জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাঠান খালেদা জিয়াকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে, কিন্তু খালেদা তাদের সাথে জাননি, উল্টো সেই বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কে ধরিয়ে দেয়ারও হুমকি দেন বলে জানা যায়।
তাই মুক্তিযুদ্ধের পর জিয়াউর রহমান খালেদা জিয়ার সাথে সংসার করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মধ্যস্থতায় জিয়াউর রহমান পূনরায় খালেদা জিয়াকে ঘড়ে তুলে নেন। বঙ্গবন্ধু সে সময় খালেদাকে নিজের কন্যা হিসেবে স্বীকৃতি দেন।
১৯৯৩ সালের জানুয়ারি ৮ তারিখে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্বরত সেই জানজুয়া মারা যান। খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া সমস্ত প্রটোকল উপেক্ষা করে পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী নাওয়াজ শরীফের কাছে আবেগঘন ভাষায় রচিত এক শোক বার্তা পাঠান!

পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী নিজেই শোক জানাননি তখনও, এরমধ্যে বাংলাদেশ থেকে খালেদা জিয়ার শোকবার্তা পেয়ে মহাবিব্রত হয়ে পরে পাকিস্তান সরকার। পরবর্তীতে তারা কেবল খালেদা জিয়ার শোকবার্তার কারনেই সৌজন্য দেখিয়ে তড়িঘড়ি করে সংসদে একটা শোক প্রস্তাব পাশ করতে বাধ্য হয়৷
বিএনপির পাকিস্তান প্রেম তাই অনেক পুরোনো। বিএনপি ও পাকিস্তান একে অপরের পরিপূরক। দলটির রাজনীতি পাকিস্তানের এজেন্ডা বাস্তবায়ন কেন্দ্রীক। আইএসআই’র ইশারাতেই চলে বিএনপির যাবতীয় কার্যক্রম।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ