1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

জনগণ কি হরতাল-অবরোধ সমর্থন করে?

ডেস্ক রিপোর্ট : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
বুধবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৩

যুগপৎ আন্দোলনকারী দলগুলো নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে অবরোধ-হরতাল একের পর এক দিয়ে চলছে। গত অক্টোবরের ২৯ তারিখ থেকে এভাবেই বিরোধীদের কর্মসূচি লাগাতার হয়ে উঠেছে। এরই মধ্যে ১৫ তারিখ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হয়েছে। বিরোধীরা সেই তফসিল প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা আন্দোলন করে সরকারের পতন এবং নির্বাচন বন্ধ করবে বলে দাবি করছে। তাদের দাবি শুনলে মনে হয় তারা যা বলছে তা নিশ্চিত হবেই। কয়েক মাসে আগেও যুগপৎ আন্দোলনকারী দলগুলোর নেতারা সভা-সমাবেশ এবং মিডিয়াতে এসে দাবি করতেন যে অচিরেই সরকারের পতন ঘটবে। তাদের দাবি বাস্তবায়িত হবে। জনসমর্থনহীন কয়েকটি দলের নেতারাও এমন কথাই উচ্চারণ করতেন। তাদের কথা শুনে মনে হতো তারা খুবই নিশ্চিত হয়েই কথাগুলো বলছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেখা গেছে তাদের বলা কোনো কথাই বাস্তবে প্রতিফলিত হয়নি।

২৮ তারিখ দেশে বিরোধী দলের ‘মহাযাত্রা’ নামে একটি কর্মসূচির কথা শোনানো হয়েছিল। সেই মহাযাত্রার ভাগ্যবিপর্যয় ঘটেছে। অবশ্য বিরোধীরা এটি মানছে না। এখন অবশ্য মাঠে বিএনপি-জামায়াতের চেয়ে বেশি কথা বলছে মঞ্চহীন ৭ দলীয় জোটের গণতন্ত্র মঞ্চ নামে একটি জোট। এই জোটের কয়েক নেতাকে শহুরে কিছু মানুষ মিডিয়ার কল্যাণে চেনেন। তারা এখন মিডিয়াতে বেশ সরব, অবরোধ-হরতালেও এই দলগুলোর নেতাকর্মীরা প্রেস ক্লাব আর বিজয়নগর পর্যন্ত মিছিল করে যাওয়া-আসা করেন। সেখানেই তাদের জ্বালাময়ী ভাষণ দিতে দেখা যায়। বিএনপির জ্যেষ্ঠ মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রতিদিন কাকডাকা সকালে এখানে-সেখানে ঝটিকা মিছিল এবং অনলাইনে দলীয় নির্দেশনা প্রচার করেন।

অবরোধ-হরতাল যেভাবে পালিত হচ্ছে তাতে মনে হয় বিএনপির কর্মীরা যাত্রীবাহী বাস, ট্রাককে লক্ষ্য করে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর করার মিশন বাস্তবায়ন করছে। ইদানীং গভীর রাতে ট্রেনে আগুন দেয়ার ঘটনাও ঘটছে। কারা এসব অগ্নিসংযোগ করছে তা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলতে পারবে কিনা জানি না। কিন্তু প্রায় প্রতিদিন সন্ধ্যায় বা রাতের অন্ধকারে ঢাকায় দু-একটি বাসে অগ্নিসংযোগের চোরাগোপ্তা হামলা করে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যাচ্ছে, ক’জন ধরা পড়ছে জানি না। অগ্নিসংযোগের ঘটনা অবরোধ এবং হরতালে যানবাহন কেন্দ্রিকই যে ঘটছে তা নয়। গাজীপুরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েও সকাল বেলা কে বা কারা অগ্নিসংযোগ ঘটাতে পেরেছে, সেটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী খুঁজে দেখতে পারে। তবে অবস্থাদৃশ্যে মনে হয় বিএনপি এবং জামায়াতের কর্মীরা সরকারের সঙ্গে এঁটে না উঠতে পেরে এখন জনগণকে শায়েস্তা করতে মাঠে নেমেছে। এরই মধ্যে কয়েক যাত্রী অগ্নিদগ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় আছেন। তাদের অপরাধ কী? এভাবে যানবাহনে আগুন লাগিয়ে যারা আন্দোলন করছেন বলে দাবি করছেন তারা রাজনীতি ও আন্দোলনের সংজ্ঞাই বদলে ফেলেছেন। এভাবে অগ্নিসংযোগ করা যে ফৌজদারি অপরাধ সেটি জানা থাকা সত্ত্বেও যুগপৎ আন্দোলনকারীরা হরতাল-অবরোধ ডেকেই যাচ্ছে, চোরাগোপ্তা হামলা এবং অগ্নিসংযোগ করে নিজেরা পালিয়ে যাচ্ছে, যানবাহনের মালিকদের অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখে ফেলছে। যাত্রীদের মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। অগ্নিসংযোগের এসব ঘটনার কারণে দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাস এখন কমে যাচ্ছে, সাধারণ মানুষের চলাচল সীমিত হয়ে যাচ্ছে। যানবাহন সংশ্লিষ্ট মালিক, ড্রাইভার, কর্মচারীদের আয়-উপার্জন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এভাবে যুগপৎ আন্দোলনকারীরা কতদিন সহিংস হরতাল-অবরোধ চালিয়ে যাবে। তারা অবশ্য দাবি করছে যে নির্বাচন বন্ধ করা না হলে আন্দোলন আরো কঠোরতর হবে। কিন্তু কেউ স্পষ্ট করে বলছে না, কঠোরতর বলতে তারা কী বোঝাতে চাচ্ছেন। অগ্নিসন্ত্রাস আরো বিস্তৃত করাকেই কি কঠোরতর আন্দোলন বলে ধরে নিতে হবে? তেমনটি ঘটলে সেটিতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে সাধারণ জনগণ। সাধারণ জনগণের বিরুদ্ধে অগ্নিসন্ত্রাস হলে সেটিকে কীভাবে আন্দোলনের কর্মসূচি বলা যাবে? জনগণের জন্য যারা আন্দোলন করে তারা জনগণের চলাচল বন্ধ করে কিংবা ভয়ভীতি, অগ্নিসংযোগ ঘটিয়ে যা করা হয়, তার সঙ্গে জনগণের স্বার্থ নয়, জনবিরোধী কর্মকাণ্ডই ঘটে থাকে বলেই নিশ্চিতভাবে ধরে নেয়া যায়।

হরতাল-অবরোধ রাজনৈতিক কর্মসূচি ছিল। ’৬৯-এ আমরা হরতাল পালনের দৃশ্য দেখেছি। তখন হরতাল চলাকালে জনগণের কোনো দুর্ভোগের ঘটনা চোখে পড়ত না। অ্যাম্বুলেন্স কিংবা জরুরি প্রয়োজনে কাউকে কোথাও যেতে হলে তারা নির্বিঘ্নেই তা যেতে পারত। আন্দোলনকারীরাই সে ব্যবস্থা করে দিতেন। হরতাল সফল করার জন্য জনগণই তখন সাড়া দিত। কিন্তু এখন যেসব হরতাল-অবরোধ ডাকা হয়, সেগুলোতে জোরজবরদস্তির যেসব ঘটনা ঘটে তা করা হয় জনগণের বিরুদ্ধেই। রাষ্ট্রের সম্পদ পুড়িয়ে দেয়ার মধ্যে যারা আন্দোলন সফল করার কর্ম দেখে থাকেন তারা আসলেই রাজনীতিতে জনবিরোধী ভাবাদর্শে বিশ্বাসী হয়ে ওঠে। তাদের কর্মকাণ্ড রাজনৈতিক চরিত্র হারিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হিসেবে বিবেচিত হয়ে পড়ছে। যেসব নেতাকর্মী জোরজবরদস্তিমূলকভাবে গাড়িতে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর, ককটেল, পেট্রল বোমা ইত্যাদি নিক্ষেপ করছে তারা আসলে শেষ বিচারে গণবিরোধী সন্ত্রাসীরূপেই নিজেদের তৈরি করছে। এরা কোনোদিনই জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতার কথা অনুসরণ করার প্রয়োজনীয়তা বোধ করে না।

রাজনৈতিক দলের কর্মী-সমর্থকরা দলের আদর্শ চর্চা করার কথা, কিন্তু তাদের হাতে যারা অগ্নিসংযোগ করার পেট্রল কিংবা অন্যান্য দাহ্য পদার্থ তুলে দিচ্ছেন তারা রাজনীতিতে কিছু সন্ত্রাসী তৈরি করছেন। এসব সন্ত্রাসী সমাজবিরোধী মানুষ হিসেবেই রাজনীতি ও সমাজ জীবনে বেড়ে উঠবে, রাজনীতিকে কলুষিতও করছে। এদের মন যখন ভাঙচুর, চোরাগোপ্তা হামলা, অগ্নিসংযোগ অথবা মানুষের ওপর জবরদস্তি করার মতো কর্মকাণ্ডে ভরে উঠবে তখন তারা সে পথেই চলতে শিখবে। এখন যখন কোনো দলের ছাত্র কিংবা যুব সংগঠনের কোনো নেতাকে পুলিশ হত্যা, আক্রমণ, সাংবাদিক পেটানো, হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগ, বিচারপতির বাড়িতে ভাঙচুর-হামলা ইত্যাদি সংঘটিত করতে দেখা যায় তখন বুঝতে হবে রাজনীতি করতে এসে এরা এ ধরনের ঘটনা সংঘটিত করার বিষয়টি শিখে এসেছে। অতীতে হয়তো তারা আরো ঘটনা ঘটিয়েছে, হাত পাকিয়েছে, রাজনীতির মাঠে আন্দোলনের নামে ভাঙচুর, পোড়াপুড়ি, আক্রমণ, হত্যা ইত্যাদি তাদের মনোজগতে নেশার মতো বাসা বেঁধেছে। রাজনৈতিক দলের তরুণ ও যুবকরা যদি পেট্রল বোমা, গ্রেনেড, ককটেলসহ নানা ধরনের দাহ্য পদার্থের ব্যবহার করা শেখে, কেউ কেউ হাতেনাতে ধরাও পড়ে; তখন বুঝতে হবে এদের রাজনীতির সঙ্গে দেশ, জাতির কল্যাণ করার কোনো সম্পর্ক নেই। স্বীকার করতেই হবে আমাদের দেশে এখন রাজনীতিতে পেশিশক্তির অবস্থান বেশ বড় হয়ে গেছে। শিক্ষাদীক্ষা, মেধা, মননচর্চা, বিবেক, যুক্তি এবং আদর্শের চর্চার ক্ষেত্রগুলো প্রায় বিলুপ্তই হয়ে গেছে। শুধু তাই নয়, মিথ্যার চর্চাও দেশের রাজনীতিতে এখন বিশাল জায়গা করে নিয়েছে।

প্রতিদিন টিভি টকশোতে এসে কোনো কোনো দলের নেতা যখন টিয়াপাখির মতো কতগুলো মুখস্থবিদ্যা বলে যান, সত্যকে আড়াল করার চেষ্টা করেন, অন্যের ওপর দোষ চাপিয়ে নিজেদের অবস্থানকে নির্ভুল প্রমাণ করার গলাবাজির চেষ্টা করেন; তখন বুঝতে বাকি থাকে না, এদেরও রাজনীতির পাঠ একেবারেই শূন্যের কোঠায়। জনগণের নাম ব্যবহার করে তারা রাজনীতি করেন বলে দাবি করেন। কিন্তু জনগণের সঙ্গে তাদের কোনো বিন্দুমাত্র সম্পর্ক নেই। কতগুলো শেখানো বুলি আর গরম গরম কথা উচ্চারণ করার মধ্যে তারা নিজেদের বড় রাজনীতিবিদ ভাবেন। কিন্তু এদের ভাবাভাবিটাও চরম ফাঁকা আওয়াজনির্ভর। এখন প্রতিদিন তাদের হরতাল-অবরোধ চলাকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে চিৎকার করতে দেখে কেউ কি মনে করছেন যে এরা এ দেশের জন্য প্রাণ উৎসর্গ করে দেয়ার কাজ করছেন? আসলে রাজনীতির মানুষগুলো আমাদের হারিয়ে গেছেন। তাদের অনেক আগেই আমাদের জাতীয় জীবন থেকে হত্যা-ক্যুয়ের মাধ্যমে শেষ করে দেয়া হয়েছে। আমাদের সেসব মহানায়ক রাজনীতি করেছেন দেশ এবং জনগণের মুক্তির জন্য। নিজেরা জেলজুলুম, অত্যাচার সহ্য করেছেন। আন্দোলন, সংগ্রাম, রাজনীতি এসব নায়কের উদ্ভাবনী পদ্ধতিতে বেগবান হয়েছে। মানুষ সেসব আন্দোলনে যুক্ত হয়েছে, রাজনীতিবিদদের জন্য মানুষ রাস্তায় নেমেছিল।

’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান ঘটিয়ে জনগণ রাজনীতিবিদদের জেল থেকে মুক্ত করে এনেছে। সেই মুক্ত রাজনীতিবিদরা আমাদের আরো বেশি অধিকার অর্জনের আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। সেখান থেকেই মহান মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। জনগণ রাজনীতিবিদদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে দেশ স্বাধীন করতে মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছিল। রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রতি মানুষের অগাধ বিশ্বাস ও আস্থা তৈরি হয়েছিল বলেই এসব অর্জন সম্ভব হয়েছিল। রাজনীতিবিদরাও মানুষের কল্যাণ চিন্তায় মানুষকে রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ও সচেতন করার দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ অল্পকিছু দিনের মধ্যেই গড়ে তোলার প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ তারা নিয়েছিলেন, নতুন জাতিরাষ্ট্র গঠনে আমাদের রাজনীতিবিদরা একটি সংবিধান, প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা, শিক্ষা নীতিসহ অনেক কিছুই মাত্র সাড়ে ৩ বছরের মধ্যে আমাদের দিয়ে যেতে পেরেছিলেন। এই রাজনীতিবিদরা ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে পাকিস্তান রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে বাঙালির স্বায়ত্তশাসনের আন্দোলন এবং মুক্তিযুদ্ধ ও যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশ নির্মাণের কাজটি তাদের মেধা, মনন, প্রজ্ঞা ও রাষ্ট্রচিন্তা দিয়ে করেছিলেন। তাদের ছিল পৃথিবী সম্পর্কে প্রচুর জ্ঞান। সেই সময়ে তাদের বক্তৃতা, বিবৃতি, রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন পর্ষদের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন ইত্যাদিতে তার যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়। রাজনীতিবিদ তারা হয়েছিলেন জাতির জন্য কল্যাণের পথ রচনার আন্দোলন-সংগ্রাম করে। তাদের অনুসরণ করতে গিয়ে নেতাকর্মীরাও হয়ে উঠেছিলেন একেকজন রাজনীতির শিক্ষানবিস। আমাদের এই রাজনীতিবিদদের ’৭৫ সালে বর্বরোচিতভাবে হত্যা করা হয়েছিল। তাদের গড়া রাজনীতিকে ভেঙে তছনছ করে দেয়া হয়েছিল। সেই জায়গায় যারা আবির্ভূত হয়েছিলেন এদের বেশির ভাগই রাজনীতিবিরোধী, সুবিধাবাদী, উগ্র হঠকারী এবং প্রগতিবিরোধী মানসিকতায় জীবন অতিবাহিত করেছিল। তাদের দখলে রাষ্ট্র ও রাজনীতি চলে যাওয়ার পর প্রকৃত রাজনীতির পাঠশালাই বন্ধ হয়ে যায়।

রাজনীতির মাঠে, রাজনীতির পাঠশালার নামগন্ধও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। সেখানে এখন সন্ত্রাসী, রাষ্ট্রবিরোধী, জনবিরোধী কিছু মানুষ, নেতাকর্মী এখন রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। এদের দরকার ক্ষমতা। ক্ষমতা হলেই লুটপাট এবং নিজের উদরভর্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়। এই রাজনীতি কৃত্রিম এবং নকল। নির্বাচন যেসব রাজনৈতিক দল বর্জন করেছে তারা জনগণকে বড়জোর নির্বাচন বর্জনের আহ্বান জানাতে পারে। জনগণ নির্বাচন বর্জন করবে নাকি ভোটদান করবে সেটি তাদের যার যার ইচ্ছা। যুগপৎ আন্দোলনকারীদের মধ্যে যেহেতু দুই একটি দল অপেক্ষাকৃত বড়। তাদের ভোটার আছে, সমর্থকও আছে। তারা সিদ্ধান্ত নেবে তাদের দলের আহ্বান তারা কতটা প্রতিপালন করবে। বাকি দলগুলোর তেমন কোনো ভোটারই নেই। কিন্তু তাদের কথাবার্তা শুনে মনে হয় জনগণ তাদের পক্ষে আছে। খুবই ভালো কথা। তাই বলে হরতাল-অবরোধ ডেকে এভাবে জনগণকে জিম্মি করার রাজনীতি যারা করছে তারা ’৭৫-পরবর্তী কৃত্রিম রাজনীতিবিদ ছাড়া আর কিছুই হয়ে উঠতে পারেননি। স্পষ্টতই বোঝা যায় এরা নির্বাচন পর্যন্ত এভাবেই হরতাল-অবরোধ ডেকে চোরাগোপ্তা হামলা, গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, মানুষের যাতায়াতে ভয়-ভীতি বাড়িয়ে তোলার অপকৌশলই অবলম্বন করতে যাচ্ছে। সরকার জনগণের জীবন এবং সম্পদ রক্ষার জন্য চোরাগোপ্তা হামলাকারী ও অগ্নিসংযোগকারীদের কীভাবে নিবৃত্ত করবে সে বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি, সেটিই সবার একমাত্র চাওয়া।

লেখক: মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী – অধ্যাপক (অবসরপ্রাপ্ত), ইতিহাসবিদ ও কলাম লেখক।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ