1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

উন্নয়নে মহাযজ্ঞ মাতারবাড়ীতে!

কমলিকা হাসান : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
শুক্রবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২১

সমুদ্রকন্যা কক্সবাজারের দ্বীপ উপজেলা মহেশখালী। দেশের একমাত্র পাহাড়িকা এই দ্বীপের মৈনাক পবর্তে আদিনাথ মন্দির। ফাল্গুনে সেখানে বসে আদিনাথ মেলা।

অপরূপ সুন্দর এই দ্বীপে যেন মেলা বসেছে উন্নয়নের। সেখানকার মাতারবাড়ী ইউনিয়নে সমুদ্রের কোল ঘেঁষে গড়ে উঠছে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। বলা হচ্ছে, মাতারবাড়ী আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কোল ফায়ার্ড পাওয়ার নামের প্রকল্পটি হতে যাচ্ছে দেশের অন্যতম বিদ্যুৎ হাব।

আর একে ঘিরে চলছে বিশাল কর্মযজ্ঞ। এরই মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে আমদানি করা কয়লা লোড আনলোড জেটির। এখন বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণের পাশাপাশি চলছে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন বসানো ছাড়াও সংযোগ সড়ক নির্মাণের কাজ।

পানিপথে কক্সবাজার শহর থেকে প্রকল্পের দূরত্ব প্রায় ৩৩ কিলোমিটার। আর সড়কপথে চকরিয়া ঘুরে পাড়ি দিতে হয় ৮০ কিলোমিটার রাস্তা।

সেখানে গিয়ে দেখা যায়, একেবারে সাগরের তীরে গড়ে তোলা হচ্ছে বিদ্যুৎকেন্দ্রের মূল অবকাঠামো। এখানকার বয়লার চেম্বার বা স্টিম জেনারেটরের কাঠামো গড়া হচ্ছে স্টিলের পাত দিয়ে।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ প্রকল্প কেবল এ জনপদকেই নয়, বিকশিত করবে সারা দেশের অর্থনীতিকে।

প্রকল্পের শুরু যখন

২০১৭ সালে মাতারবাড়ী ও ধলঘাটা ইউনিয়নে ১ হাজার ৬০৮ একর জমিতে বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়ে তোলার কাজ শুরু করে জাপানের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইপিসি। এর আগে ২০১৩ সালে প্রকল্পের পরিবেশগত ও সামাজিক প্রভাব সমীক্ষা ও সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়। ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

ব্যয় বৃদ্ধি ৪৪ দশমিক ১০ শতাংশ

বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণে ২০১৪ সালের জুনে বাংলাদেশ সরকার ও জাপানের উন্নয়ন সংস্থা জাইকার মধ্যে ঋণচুক্তি হয়। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবে (ডিপিপি) প্রকল্পটির সম্ভাব্য ব্যয় ধরা ছিল ৩৫ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকা।

তবে চলতি বছরের ২৩ নভেম্বর একনেকে প্রকল্পাটির ব্যয় ও বাস্তবায়নের সময় বৃদ্ধির সংশোধনী প্রস্তাবে প্রকল্পটির ব্যয় বাড়ানো হয় প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা। ৩৫ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকার মাতারবাড়ী ১২০০ মেগাওয়াট আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কোল পাওয়ার প্রকল্পটিতে ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৫১ হাজার ৮৫৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) দিচ্ছে ৪৩ হাজার ৯২১ কোটি টাকা ঋণ। বর্তমানে প্রকল্পটিতে ব্যয় বৃদ্ধির পরিমাণ দাঁড়াল ৪৪ দশমিক ১০ শতাংশ।

একনেক সভায় পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, বিদ্যুতের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে সরকার এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে। এর সঙ্গে মাতারবাড়ীতে সমুদ্রবন্দরের জন্য সহায়ক অবকাঠামো তৈরি হবে। এ প্রকল্পের সংশোধনী অনুমোদন দিয়েছে একনেক।

মাতারবাড়ীতে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ২০১৫ সালের মাঝামাঝিতে ৩৫ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন দেয় সরকার। সাত বছর আগে শুরু হওয়া এ প্রকল্পের কাজের বাস্তব অগ্রগতি হয়েছে ৪৪ দশমিক ৫০ শতাংশ। আর্থিক অগ্রগতি ৪৭ দশমিক ৭৬ শতাংশ। এবার ব্যয় বাড়ল ১৫ হাজার ৮৭০ কোটি টাকা।

ব্যয় বাড়ার কারণ হিসাবে বলা হয়, প্রকল্পটি অনুমোদনের পর পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ডিটেইল ডিজাইন করে। সে অনুযায়ী খরচ বেড়েছে প্ল্যান্ট ও জেটির। তা ছাড়া মাতারবাড়ী সমুদ্র বন্দরের উপযোগী কিছু অবকাঠামোর জন্যও বাড়তি ব্যয় হবে। আর বাড়তি কাজের জন্য বাড়তি সময়ও লাগবে।

নতুন প্রস্তাবে চ্যানেল, জেটি, ভূমি উন্নয়ন ও বিদ্যুৎকেন্দ্রের সিভিল কার্যক্রম, বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ, পরামর্শক, ভ্যাট-আইটি ও আমদানি শুল্ক, পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণ এবং পল্লী বিদ্যুতায়ন ও টাউনশিপ নির্মাণেও বাড়তি ব্যয়ের প্রস্তাব করেছে বিদ্যুৎ বিভাগ।

কতটুকু বিদ্যুৎ মিলবে

প্রথম ধাপে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি থেকে মিলবে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। পরে আরও দুটি ইউনিট চালু হলে পাওয়া যাবে অতিরিক্ত আরও ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ।

নানা দেশের শ্রমিকের মিলনমেলা

প্রকল্প এলাকায় দেখা মেলে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা শ্রমিকের। বিদ্যুৎকেন্দের বিভিন্ন ধরনের অবকাঠামো গড়তে কাজ করছেন দেশি-বিদেশি ৮ হাজার শ্রমিক-প্রকৌশলী।

সব মিলিয়ে বিদেশি রয়েছেন ৭৬০ জন, যারা এসেছেন জাপান, চীন, ভারত, দক্ষিণ কোরিয়া, ভিয়েতনাম, মালয়শিয়া, সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশ থেকে।

প্রকৌশলীরা জানিয়েছেন, ‘বর্তমানে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি ইউনিটের কাজ চলমান। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে প্রথমটির এবং একই বছরের জুলাইয়ে দ্বিতীয়টির কাজ শেষ হওয়ার কথা, তবে মেয়াদ শেষের আগেই উৎপাদনে যাওয়া সম্ভব হবে।’

তারা আরও বলেন, ‘বিদ্যুৎকেন্দ্রে কয়লা আনা-নেয়ার জন্য এরই মধ্যে দুটি জেটির কাজ শেষ হয়েছে, যার একটিতে কয়লা খালাস করা হবে। আরেকটি ব্যবহৃত হবে তেল ও ভারী যন্ত্রপাতি ওঠানো-নামানোর কাজে।

‘বিদ্যুৎকেন্দ্রে কয়লা বা প্রয়োজনীয় সরঞ্জামবাহী জাহাজ ভেড়ার জন্য ১৪.৩ কিলোমিটার চ্যানেল তৈরি করা হয়েছে, যার প্রশস্ততা ২৫০ মিটার। আর গভীরতা ১৮.৫ মিটার। এই গভীরতা আরও বাড়িয়ে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ করা হবে। চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি ৫৯ শতাংশ।’

প্রকৌশলীরা জানান, এখানে ২৭৫ মিটারের একটি চিমনি তৈরি করা হবে, যার উচ্চতা হবে ৯০ তলা ভবনের সমান। এরই মধ্যে এর ভিতের কাজ শেষ হয়েছে। এখানে যে বয়লার চেম্বারের কাজ চলছে, তার উচ্চতা ৮০ মিটার, যেটি দেখতে হবে ২৬ তলা ভবনের সমান।

ওয়াটার ট্রিটমেন্ট এবং ওয়েস্ট ওয়াটার ট্রিটমেন্টের কাজও চলছে জোরেশোরে। চলমান রয়েছে ৪০০ কিলোভোল্টের সঞ্চালন লাইনের কাজও। এরই মধ্যে তৈরি হয়েছে ১৩২/৩৩ কেভি সার্ভিস লাইন, যার মাধ্যমে প্রকল্প ছাড়াও স্থানীয় এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়েছে। ইপিসির তত্ত্বাবধানে পুরো প্রকল্পের কাজ করছে তিনটি জাপানি প্রতিষ্ঠান তোশিবা, সুমিতোমো ও আইএইচআই।

গড়ে উঠছে নতুন শহর

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, বিদ্যুৎকেন্দ্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের থাকার জন্য গড়ে তোলা হচ্ছে একটি টাউনশিপ, যার নকশা প্রণয়নে কাজ করছে একটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান। সেখানে স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, মসজিদ, মার্কেট, কমিউনিটি সেন্টারসহ থাকবে নানা অবকাঠামো। এ জন্য ভূমি উন্নয়নের কাজ ৮০ ভাগ শেষ।

শুধু তা-ই নয়, মহেশখালীর রাজঘাট থেকে ধলঘাটা পর্যন্ত ৭.৩৫ কিলোমিটার সংযোগ সড়কের কাজও চলছে দ্রুতগতিতে। এই সড়কে একটি সেতু তৈরির কাজও চলছে সমানতালে।

এ ছাড়া বিদ্যুৎকেন্দ্রে কয়লা পোড়ানোর পর যে ছাই সৃষ্টি হবে, তা রাখতে তৈরি করা হবে অ্যাশপন্ড। সেখানে ৩০ বছরের ছাই রাখা যাবে।

পরিবেশের কী হবে

বিদ্যুৎ বিভাগের দাবি, বিদ্যুৎকেন্দ্রটি হবে আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তির। পরিবেশ দূষণ রোধে অস্ট্রেলিয়া এবং ইন্দোনেশিয়া থেকে আনা হবে উন্নত মানের সাব-বিটুমিনাস কয়লা। বলা হচ্ছে, আধুনিক প্রযুক্তির এই কেন্দ্রে তুলনামূলক কম কয়লা পুড়িয়েই বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হবে। ফলে কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গমন হবে কম। এ ছাড়া নাইট্রাস অক্সাইডের ক্ষতিকর প্রভাব কমাতে স্থাপন করা হবে লোরেট বার্নার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান বলেন, ‘মাতারবাড়ীর বিদ্যুৎ এসে যখন জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে, তখন সারা দেশের বিদ্যুৎ পরিস্থিতির ব্যাপকভাবে উন্নতি ঘটবে। তৈরি হবে নতুন নতুন কল-কারখানা। বহুমাত্রায় বাড়বে কর্মসংস্থান।’

তিনি বলেন, ‘কক্সবাজারের মহেশখালী এবং চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে যে অর্থনৈতিক জোন তৈরি হচ্ছে, তার জন্য আমাদের অনেক বিদ্যুতের প্রয়োজন হবে। সেই চাহিদার অনেকটাই পূরণ করবে এই মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্র।’


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ

নির্বাচিত

গোপনে কেউ ওয়াই-ফাই ব্যবহার করলে জানার উপায়

নকল ও ভেজাল ঔষধ বেচে কোটিপতি হওয়া পিনাকী ভট্টাচার্যের অপকর্ম ফাঁস (ভিডিওসহ)

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগের কোনো আল্টিমেটাম দেয়া হয়নি: যুক্তরাষ্ট্র

সৈয়দপুরে প্রস্তুত হচ্ছে রেলের ১১০টি কোচ

বিদ্যুৎ ও সারের ভর্তুকি মেটাতে ছাড়া হবে ২৫ হাজার কোটি টাকার বন্ড

গাজীপুরে জাহাঙ্গীরের পক্ষে গণজোয়ার; অন্যদলের নেতাকর্মীরাও অভিভূত

শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধন ৭ অক্টোবর, চালু চব্বিশের ডিসেম্বরে 

শক্তিশালী পাসপোর্ট সূচকে এগোল বাংলাদেশ

আজ বিশ্ব শিক্ষক দিবস

বিশ্বে অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশ মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে : শেখ হাসিনা