1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

মার্কিন বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার কোনো আশঙ্কা নেই

ডেস্ক রিপোর্ট : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
সোমবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২৩

শ্রম অধিকার লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের ঘোষণা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি প্রেসিডেন্সিয়াল মেমোরেন্ডাম বা স্মারক জারি করে। এতে সংশ্লিষ্টরা আশঙ্কা করছেন, শ্রম ইস্যুতে দেশটির বাণিজ্য জরিমানা ও ভিসা বিধি-নিষেধের মুখে পড়তে পারে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এ ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি হবে না বাংলাদেশ। তবে বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে।

শ্রম ইস্যুতে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা ও ভিসা বিধি-নিষেধসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের ঘোষণা দিয়ে গত ১৬ নভেম্বর এই প্রেসিডেন্সিয়াল মেমোরেন্ডাম জারি করে যুক্তরাষ্ট্র। বিষয়টি নিয়ে ওয়াশিংটনের বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে ২০ নভেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি পাঠানো হয়।

জানা গেছে, ওয়াশিংটনের বাংলাদেশ দূতাবাসের ওই চিঠিসহ সামগ্রিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় সোমবার (৪ ডিসেম্বর) এ বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের রপ্তানি উইংয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারাসহ শ্রম মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর, রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চল (বেপজা), বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারাসহ বিজিএমইএ, বিকেএমইএ নেতারা উপস্থিত থাকবেন।

মার্কিন মেমোরেন্ডামটি এমন এক সময় ঘোষণা দেওয়া হয়, যখন ন্যূনতম মজুরিকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভ চলছিল। সে পরিপ্রেক্ষিতে কিছু বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ওয়াশিংটনে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠিটি পাঠায়।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশ কোনোভাবেই শ্রম ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের বিধি-নিষেধে পড়তে চায় না। দেশটিতে বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি খাত তৈরি পোশাকের বাজার ধরে রাখতে চায়। এজন্য যেসব করণীয় বাংলাদেশের জন্য সম্ভব, সেগুলো পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

পোশাক খাত বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিরাট একটি অবদান রেখে আসছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি আসে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি থেকে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্রে ৯৭০ কোটি মার্কিন ডলারের বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানি হয়েছে। যার মধ্যে তৈরি পোশাক রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৮৫১ কোটি ডলার।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শ্রম ইস্যুতে কোনো ধরনের মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আসলে তা অর্থনীতির জন্য একটি বিরাট ধাক্কা হবে। তাই এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশের শ্রম খাতের ইতিবাচক পরিস্থিতি বৈশ্বিক অঙ্গনে তুলে ধরারও পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।

ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসের মিনিস্টার (বাণিজ্য) মো. সেলিম রেজা স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, স্মারকটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের শ্রম ইস্যু নিয়ে সুনির্দিষ্ট বক্তব্য রেখেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন ও ভারপ্রাপ্ত শ্রমমন্ত্রী। ওই স্মারক অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক মিশনগুলোর শ্রম অধিকার ইস্যুতে সরাসরি কথা বলার বা কাজ করার সুযোগ রয়েছে। এ নীতির কারণে মার্কিন কূটনীতিকরা বা মিশনগুলো অভ্যন্তরীণ অনেক ইস্যুতে হস্তক্ষেপে উৎসাহিত হতে পারেন। যদি তারা মনে করেন শ্রম অধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে, সেক্ষেত্রে ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে এর প্রয়োগ হওয়ার সুযোগ রয়েছে।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমনীতি নিয়ে কোনো ভয় কাজ করছে না বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, বাংলাদেশকে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার মতো কিছুই দেখি না। বাণিজ্য ক্ষেত্রে আমেরিকা থেকে বাংলাদেশ বিশেষ কোনো সুবিধা পায় না। যেটা ইউরোপীয় ইউনিয়নে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাই। ১৫ শতাংশের বেশি শুল্ক দিয়ে আমেরিকাতে আমাদের পণ্য রপ্তানি করতে হয়। কাজেই বাংলাদেশকে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার মতো পরিস্থিতি নেই।

বাণিজ্য সচিব আরও বলেন, মার্কিন এ শ্রমনীতি সব দেশের জন্যই। এটা নতুন কিছু না। আমি মনে করি, তারা সব দেশকে নতুন করে স্মরণ করিয়ে দিয়েছে। এর সাথে বাংলাদেশের নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই। বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক দেশ। বাংলাদেশের সমাজব্যবস্থা অনেক উন্মুক্ত, এখানে গণতন্ত্রের চর্চা আছে। এখানে স্বচ্ছপ্রক্রিয়ায় সবকিছু হয়।

এদিকে, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের বক্তব্যে কল্পনা আক্তারের যে হুমকির কথা উঠে এসেছে, সেটি কিন্তু কল্পনা আক্তার অতীতে বাংলাদেশে কাউকে বলেননি। অবশ্যই এটার সত্যতা কতটুকু, সেটা আমরা জানতে চাইব। পাশাপাশি একটি বিষয় পরিষ্কার করার চেষ্টা করেছি, অ্যান্টনি ব্লিংকেন যে বৈঠকে এ কথা বলেছেন, সেটা হলো এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কনফারেন্স। যেটাতে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং যোগদান করেছেন। কাজেই ব্লিংকেনের বক্তব্য মোটেই বাংলাদেশ স্পেসিফিক নয়। তিনি বাংলাদেশ উল্লেখ করে কোনো বক্তব্য দেননি। তিনি বাংলাদেশের একজন গার্মেন্ট নেতা বা কর্মী কল্পনা আক্তারের কথা বলেছেন। কান্ট্রি মেনশন করে দু-তিনটা আরও দেশের নাম বলেছেন। কিন্তু বাংলাদেশের কোনো ইস্যু সেখানে মেনশন করেননি। এটা মোটেই গার্মেন্টস শিল্প বা টেক্সটাইল শিল্প স্পেসিফিক কিছু ছিল না। এটি ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে শ্রম অধিকার আরও শক্তিশালী করতে, পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে, আপনারা জানেন যে অনেক দেশে অনেক চ্যালেঞ্জ থাকে—নারী কর্মীদের চেয়ে পুরুষদের বেতন কম, সেটা একটা বড় ন্যাশনাল ইস্যু সে দেশে। তারা একটা অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অ্যাকশন বা মেজার্স নিয়েছেন, যেখানে তারা তাদের দূতাবাসের অ্যাম্বাসেডরদের অথরাইজ করছেন লেবার রিলেটেড কোনো ইস্যুতে সেই হোস্ট কান্ট্রিগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য।’

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে রোববার রাতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রেসিডেন্সিয়াল মেমোরেন্ডাম নিয়ে ভয়ের কিছু দেখছি না আমরা। বাংলাদেশের শ্রম পরিস্থিতি ভালো, এটি বলার অপেক্ষা রাখে না। তাদের এই স্মারকের বিষয়ে আমরা আমাদের অবস্থান তুলে ধরবো। তাদের কাছ থেকেও জানতে চাওয়া হবে। আমি সবসময়ই আশাবাদী।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ