ফুল-ফল, সবজি, ঔষধি গাছ, মসলাজাতীয় চারা উৎপাদন, বিপণন ও গবেষণায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে ফেনী হর্টিকালচার সেন্টার। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ঘেঁষে সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া এলাকায় ১২ দশমিক ৩৭ একর জায়গায় পরিচালিত এ সেন্টারে উৎপাদন হচ্ছে প্রায় অর্ধশতাধিক জাতের ফলের চারা।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, প্রতি অর্থবছরে এ হর্টিকালচার সেন্টার থেকে ১৮ থেকে ১৯ লাখ টাকা সরকারের রাজস্ব খাতে জমা দেওয়া হয়। ব্যবসায়ের উদ্দেশ্য নয় বরং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবেই এই টাকা সরকারি রাজস্ব খাতে জমা দেওয়া হয় বলে জানান তারা। বর্তমানে এ সেন্টার থেকে ফেনী ছাড়াও পার্শ্ববর্তী নোয়াখালী, মিরসরাই, কুমিল্লা অঞ্চলের ক্রেতারা চারা নেন।
হর্টিকালচার সেন্টারে কথা হয় চারা কিনতে আসা মোস্তাফিজ চৌধুরীর সঙ্গে। তিনি বলেন, গত দেড় বছর ধরে আমার ছাদ বাগানের জন্য এখান থেকে চারা ক্রয় করছি। সহনীয় দামের সঙ্গে সবসময় মানসম্মত চারা পাওয়া যায়। তাই ফলনও ভালো পাওয়া হয়। এজন্যই বারবার আসি।
মো. আরাফাত নামে আরেক ক্রেতা বলেন, হর্টিকালচারের সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে এসে ৫টি সিডলেস লেবুর চারা নিয়েছি। একই চারা বাইরে নার্সারিতে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। সাশ্রয়ী দামের জন্য এখানে আসি।
জানা গেছে, এ হর্টিকালচার সেন্টারে ফলের মধ্যে উৎপাদন হচ্ছে নারিকেল (সিংহোলী, মালয়পিং, ডোয়ার্ফ), ভিন্ন জাতের আম, পেয়ারা (থাই, কাঞ্চননগর), আম (বানানা ম্যাঙ্গো, ভিয়েতনাম), আতাফল, সফেদা, জামরুল, জলপাই, ড্রাগন ফল, বিভিন্ন জাতের কলা, কাঠাল, আমলকি, অরবরই, চালতা, লেবু, কামরাঙা, হরিতকী, বাউকুল, আপেল কুল, নিম, জাম্বুরা, নাশপাতি, কামরাঙা, মাল্টা, আমড়া, লিচু, গোলাপজাম, কফি, কাবাবচিনি, স্ট্রবেরি, দারুচিনি, লেবু (সিডলেস)। মসলার মধ্যে এলাচি, তেজপাতা ও ফুলের মধ্যে রয়েছে নানা জাতের গোলাপ, জবা, বেলি, গন্ধরাজ, পাতাবাহার। এছাড়া দেশি মরিচ, পটকা মরিচ, সিমনাথ, বেগুন, হাইব্রিড লাউ, তাল বেগুন ও স্কোয়াশসহ নানা জাতের দেশি-বিদেশি সবজির চারা উৎপাদন হচ্ছে। হর্টিকালচারের পাশে সারি সারি ফুল, ফলের গাছ, শান্ত ছায়া ঘেরা বাগান দেখতে প্রায়ই দর্শনার্থীদের উপস্থিতি দেখা যায়। বড় জায়গা জুড়ে সারি সারি নারিকেল গাছের কারণে অনেকে এ স্থানটি নারিকেল বাগান হিসেবেই চেনেন।
ফেনী হর্টিকালচার সেন্টারের উপ-সহকারী উদ্যান কর্মকর্তা মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, বাণিজ্যিকভাবে সাড়া পাওয়া যায় এমন ফল, ফুল, শাকসবজির বিভিন্ন জাত নিয়ে আমরা কাজ করি। এখানে সবসময় সরকারি দামে ও সূলভ মূল্যে কৃষক ও বাগানিরা এসে তাদের চাহিদা অনুযায়ী চারা বা গাছ কিনতে পারেন।
এই সেন্টারের আরেক উপ-সহকারী উদ্যান কর্মকর্তা আহসান মো. আবদুল্লাহ্ বলেন, এই হর্টিকালচার থেকে আমরা বছরে ১৮ থেকে ১৯ লাখ টাকা রাজস্ব জমা দিচ্ছি। সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবেই এই টাকা সরকারি রাজস্ব খাতে জমা দেওয়া হয়। এ সেন্টারে সরকার নির্ধারিত দাম অনুযায়ীই চারা বিক্রি করা হয়।