1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

আইএমএফের ঋন নিয়ে যা বলেছিল বিরোধীরা

বিশেষ প্রতিবেদক : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
মঙ্গলবার, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

‘বাংলাদেশ দেউলিয়া হয়ে যাবে, পরিস্থিতি হবে শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের মতো’। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে সরকার ঋণ সহায়তা চাওয়ার পর থেকে এমন প্রচারণাই চালিয়ে আসছিল বিরোধী জোট।

তবে মাত্র ছয় মাসের মাথায় তাদের মুখ কার্যকরভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। পাকিস্তান দেউলিয়া হলেও বাংলাদেশের অর্থনীতি ক্রমেই শক্তিশালী হচ্ছে। ইতোমধ্যে ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ সহায়তা অনুমোদন করেছে আন্তর্জাতিক ঋণদান সংস্থাটি। আইএমএফের এই ঋণই বিরোধীদের সব বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা বন্ধ করে দিয়েছে।

বিরোধীদের এই সংকারবিরোধী প্রচার-প্রচারণা নতুন নয়। গত কয়েক বছর ধরেই এমন বিভ্রান্তিমূলক প্রচার চালিয়ে আসছে তারা। এখন থেকে তিন বছর আগে দেশে যখন প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়, তখন থেকে এখন পর্যন্ত একের পর এক ভিত্তিহীন খবর ও গুজব শুরু করে যাচ্ছে বিতর্কিত ব্রিটিশ সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যানের অর্থায়নে চালিত বিতর্কিত সংবাদমাধ্যম নেত্র নিউজ।

করোনা মহামারির প্রথম দিকে নেত্র নিউজ দাবি করে, ‘করোনায় দেশের লাখ লাখ মানুষের মৃত্যু হবে’, ‘স্বাস্থ্য ব্যবস্থা একেবারে ভেঙে পড়েছে’, ‘দেশে একটা টিকাও আসবে না, সরকার আনতে পারবে না’। এরপর সম্প্রতি সরকার যখন আইএমএফের কাছে ঋণ সহায়তা চিঠি দেয়, তখনও ঠিক একইভাবে নানা বিভ্রান্তি ছড়াতে শুরু করে বিরোধীরা।

গণঅধিকার পরিষদ নেতা ড. রেজা কিবরিয়া বলেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) মামার বাড়ি নয়। চাইলেই সরকার ঋণ পাবে এমন নয়। সরকার সেখান থেকে ঋণ পাবে না।

আইএমএফের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরুর আগেই এ কথা বলেছিলেন ড. রেজা কিবরিয়া। বাংলাদেশের অবস্থা শ্রীলঙ্কার মতো হতে যাচ্ছে – এমন দাবি করে তিনি বলেন, ‘আমার ধারণা ছিল যে, বাংলাদেশের অবস্থা শ্রীলঙ্কার মতো হতে আরও আড়াই বছরের মতো লাগবে।’

গণমাধ্যমের প্রতিবেদন মতে, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলটির অন্যতম নেতা আমানউল্লাহ আমানসহ অন্য নেতারা রীতিমতো বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণার ঢেউ বইয়ে দেন। ‘বাংলাদেশের পরিস্থিতি শ্রীলঙ্কার মতো হবে’ বলেও ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন তারা।

আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাতের চেষ্টায় আইএমএফের ঋণের ব্যাপারে জাতীয় স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করতেও দ্বিধা করেনি বিরোধী দল। যেমন এক রাজনৈতিক সমাবেশে মির্জা ফখরুল বলেছিলেন, ‘আমরা নিশ্চিত করতে বলতে পারি, আইএমএফ সরকারের ঋণের আবেদন প্রত্যাখ্যান করবে।’

কিন্তু বিরোধীদের এসব মিথ্যা প্রচারণা বরাবরই ব্যর্থ হয়েছে। পদ্মাসেতু থেকে করোনা মহামারি এরপর সম্প্রতি আইএমএফের ঋণ নিয়ে বিরোধীদের প্রচারণা শুধুমাত্র ভুলই প্রমাণিত হয়নি, তাদের বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণাও ভয়ঙ্করভাবে ব্যর্থ হয়েছে।

বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্বে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সফলতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ। একইভাবে আইএমএফের ঋণও পেয়েছে দেশ। গত সপ্তাহেই আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের প্রথম কিস্তি বাংলাদেশে পৌঁছেছে।

বিরোধী দলগুলোর এমন বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণার বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে খ্যাতনামা সাংবাদিক সৈয়দ বদরুল আহসান বলেন, সরকারের সঙ্গে দলগুলোর রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকলেও তাদের গণকের ভূমিকা নেয়া উচিত নয়।

তিনি বলেন, সরকারের সাথে যে কারও নির্দিষ্ট কিছু মতপার্থক্য থাকতে পারে। তবে যখন কেউ গণকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়, তখন একটা শোচনীয় পরিস্থিতি দাঁড়ায়। এমন মন্তব্যের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিরোধী দল ও তাদের সমর্থকরা শুধুমাত্র নিজেদের মর্যাদাকেই ক্ষুণ্ণ করেছেন।

দৃষ্টান্ত হিসেবে বিশ্বব্যাংকের কথা উল্লেখ করা যায়। দুর্নীতির অভিযোগে পদ্মাসেতুর তহবিল সরবরাহের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নিয়েছিল বিশ্বব্যাংক। তবে পরে অভিযোগটি পরে কানাডার একটি আদালতে মিথ্যা প্রমাণিত হয়। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার নিজস্ব অর্থায়নে সেতুটি নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়।

এরপরও বিরোধী দলগুলো বানোয়াট ও ভিত্তিহীন দুর্নীতির অভিযোগে সরকারকে আক্রমণ করে করতে থাকে। তারা বলেছিল, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণ ‘স্বপ্নই থেকে যাবে।’ কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিজস্ব অর্থায়নেই পদ্মাসেতু নির্মিত হয়েছে। গত বছরের জুন মাসে সেই সেতুর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।

আওয়ামী লীগ সরকারকে পতনের জন্য বিরোধী দলগুলোর প্রচেষ্টার বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে বিশিষ্ট গবেষক অজয় দাস গুপ্ত বলেন, ‘জনগণ এখন এসব সাফল্যের মধ্যদিয়েই সরকারকে মূল্যায়ন করবে এবং অপপ্রচারের জন্য বিরোধী দলগুলোকে সময় মতো শাস্তি দেবে।’

দেউলিয়া হওয়ার পথে পাকিস্তান

বিরোধীরা বলতেন, বাংলাদেশ পাকিস্তানের মতো হবে। কিন্তু বাংলাদেশের অর্থনীতি এখনও শক্তিশালী ভিত্তির ওপরই দাঁড়িয়ে আছে। উল্টো পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র হওয়া সত্ত্বেও পাকিস্তানই দেউলিয়া হওয়ার পথে।

কিন্তু কেন? পাকিস্তানের পতনের পিছনে বাইরের দেশের ষড়যন্ত্র নাকি নিজেদের দুর্দশা দায়ী? অনেকেই বলছেন, পাকিস্তানের যত সমস্যা তার একমাত্র কারণ ষড়যন্ত্র। কিন্তু একটা পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র কিভাবে দেউলিয়া হয়ে যেতে পারে, এমন প্রশ্ন অনেকের মনে।

পাকিস্তানের অর্থনীতি এই মুহূর্তে গভীর খাদের কিনারে দাঁড়িয়ে। দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন ৩ বিলিয়ন ডলারের কিছু বেশি; যা দিয়ে দেশটি মাত্র তিন সপ্তাহের আমদানি ব্যয় মেটাতে পারবে।

পাকিস্তানের বৈদেশিক ঋণ ২৭৪ বিলিয়ন ডলার। মুদ্রাস্ফীতি ২৪ শতাংশের বেশি। অন্যদিকে ইতোমধ্যে বৈদেশিক বাণিজ্যের বকেয়া পাওনা পরিশোধ করতে অক্ষম হয়ে পড়েছে। ওষুধ উৎপাদনের জন্য মাত্র দুইদিনের কাঁচামাল অবশিষ্ট আছে। অর্থাৎ দেশটির ওষুধ শিল্প ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থাও ভেঙে পড়ার উপক্রম।

এ পরিস্থিতিতে দেশটি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের কাছে ৭৫০ কোটি ডলারের জরুরি ঋণ সহায়তা চেয়েছিল। আইএমএফ মাত্র ১১০ কোটি ডলার পর্যন্ত ঋণ দিতে সম্মত হয়েছে। এজন্য বেশ কিছু কঠিন শর্ত দিয়েছে। এ শর্ত পূরণ করতে গিয়ে এখন আরও মুখ থুবড়ে পড়েছে পাকিস্তানের অর্থনীতি।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ