1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

দিনাজপুরের জমজমাট ঐতিহাসিক চেরাডাঙ্গী ঘোড়ার মেলা

নিউজ এডিটর : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
শনিবার, ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

দিনাজপুরে এখন জমজমাট ঐতিহাসিক চেরাডাঙ্গী ঘোড়ার মেলা। মেলায় গেলেই দেখা মিলছে রাস্তার রাজা, বিজলী রানী, রাস্তার পাগল, কিরণমালা, রানী, সুইটি, রংবাজ, পারলে ঠেকাও, কাজলি, তাজিয়া, কুমার রাজা, বাহাদুর এমন বাহারি সব নামের সব ঘোড়ার।

ঘোড়ার ক্ষিপ্রতা আর বুদ্ধিমত্তায়ও মেলে এদের নামের স্বার্থকতা। ঘোড়াগুলোর দুলকি চলনে বিদ্যুৎগতি, চোখের পলকে যেন মাইল পার করে ফেলতে পারে। এমন নানামুখী গুণের কারণে ঘোড়াগুলোর কদরও যথেষ্ট। পছন্দের ঘোড়া পেতে ক্রেতাদের মধ্যেও চলছে রীতিমতো প্রতিযোগিতা। বিক্রির জন্য দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মেলায় এসেছেন ঘোড়া ব্যবসায়ীরা।

ঘোড়াক্রেতা ও বিক্রেতারা জানান, আগেও তাদের বাপ-দাদারা এ মেলায় ঘোড়া কেনাবেচা করতেন, পারিবারিক ঐতিহ্য ধরে রাখতে তারাও ঘোড়া কেনাবেচা করছেন।

আয়োজকদের মতে, দেশের অন্যতম ঘোড়া বেচাকেনার হাট এটি। এ কারণে সারাদেশ থেকে ক্রেতা-বিক্রেতারা এখানে আসেন। প্রতি বছর ২৩ মাঘ মেলার উদ্বোধন করা হয়। এ বছর দুদিন আগে ২১ মাঘ অর্থাৎ ৪ ফেব্রুয়ারি থেকেই ঘোড়ার মেলা শুরু হয়েছে। মূল মেলা এক মাস হলেও পশুর মেলা হয় ১৫ দিন। প্রথমে এক সপ্তাহ চলে ঘোড়ার হাট। এছাড়া মেলা শুরু দু’তিন দিনের মধ্যে মহিষ, গরু, ভেড়া ও ছাগল কেনাবেচা শুরু হয়। ক্রেতা-বিক্রেতা ও দর্শনার্থীদের পদচারণায় এখন মুখর ঐতিহ্যবাহী চেরাডাঙ্গী মেলার ঘোড়ার হাট। দরদাম ঠিকঠাকের পর একটি খেলার মাঠে ঘোড়া নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ক্রেতাকে দেখানো হয় ঘোড়ার দৌড়।

জনশ্রুতি আছে, ৭৭ বছর আগে শুরু হওয়া এই মেলায় আগে গরু, ছাগল, ঘোড়া, মহিষসহ উট ও দুম্বার ব্যাপক আমদানি হতো ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে। কালের বিবর্তনে ওইসব প্রাণীর পরিবর্তে জায়গা করে নিয়েছে গরু, মহিষ এবং ঘোড়া। এছাড়া বিনোদনের জন্য যাত্রা, সার্কাস, পুতুলনাচ এবং সংসারের যাবতীয় আসবাবপত্র কাঠ, স্টিল ও প্লাস্টিকের ফার্নিচার, মিষ্টান্ন, মসলা, জুতা ও কাপড়সহ এমন কোনো জিনিস নেই যা এ মেলায় বিক্রি হয় না। প্রায় আড়াই কিলোমিটার বর্গাকার এ মেলা ঘিরে এলাকার প্রায় ২০ গ্রামে চলে মেজবান আয়োজন।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, এ অঞ্চলে এত পুরাতন মেলা আর কোথাও নেই। কালের বিবর্তনে আগের চেয়ে মেলার অবয়ব ছোট হলেও এখনও এই মেলার কারণে এলাকার আশপাশের গ্রামগুলোতে উৎসবের আমেজ বিরাজ করে। মেয়ে জামাই থেকে শুরু করে এমন কোনো আত্মীয় নেই যারা মেলার সময় বেড়াতে আসেন না। মেলায় পুলিশ প্রশাসন ছাড়াও নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পাঁচ শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক কাজ করে।

দিনাজপুর ঘোড়াঘাট উপজেলা থেকে মেলায় ঘোড়া বিক্রেতা আজাহার আলী বলেন, দেশ স্বাধীনের পর থেকে আমরা চেরাডাঙ্গী মেলায়া ঘোড়া বেচাকেনা করি। উত্তরের এটি একটি ঐতিহ্যবাহী ঘোড়া বেচাকেনার মেলা। এবার মেলায় ঘোড়া বেচাকেনার জন্য আসছি। ক্রেতারা ঘোড়া দাম কম বলছে।

মেলায় ঘোড়া বিক্রি করার জন্য ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলা থেকে আসছি দুটি ঘোড়া বিক্রির জন্য। একটা বিক্রি করছি একটা বিক্রি করতে পারিনি।

স্থানীয় রবিউল ইসলাম বলেন, উত্তরের ঐতিহ্যবাহী ঘোড়ার মেলা চেরাডাঙ্গীর মেলা। এই মেলায় প্রচুর ঘোড়া বেচাকেনা হয়। ঘোড়া প্রাচীন একটি যোগাযোগ মাধ্যম। এজন্য আধুনিক যানবাহনের যুগেও ঘোড়ার প্রতি মানুষের আগ্রহ রয়েছে।

মেলা কমিটির সচিব আব্দুর রশিদ শাহ বলেন, এই ঐতিহ্যবাহী চেরাডাঙ্গী মেলাই আমাদের মূল পশুর হাট মেলা। সেই পশুহাট মেলায় আগে আরও ঘোড়া আসত এখন দিন দিন একটু কমে গেছে। মেলা থেকে যা আয় হয় তার একটি অংশ স্থানীয় স্কুল-কলেজে দেওয়া হয়। স্থানীয় গরিব মানুষ, মেধাবী গরিব ছাত্র-ছাত্রীদের ও মসজিদ-মন্দিরে দান করা হয়।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ