বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের মূল উৎস তৈরি পোশাক খাত, যেখান থেকে বিজিএমইএ’র হিসেবে গেলো বছর এসেছে ৪৭ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। এরমধ্যে একক দেশ হিসেবে সবচেয়ে বেশি আয় এসেছে আমেরিকা থেকে ৭.২৯ বিলিয়ন ডলার।
২০২২ সালে ৯.৭২ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি হলেও ২০২৩ সালে সেটা না বেড়ে উল্টো কমেছে। ২০২৩ সালে রপ্তানি হয়েছে ৭.২৯ বিলিয়ন ডলার। সুতরাং একবছরে রপ্তানি কমেছে প্রায় আড়াই বিলিয়ন ডলার বা ২৫ শতাংশ। আমেরিকায় ২৫ শতাংশ রপ্তানি কমে গেলেও সার্বিকভাবে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি না কমে বেড়ে গেছে। আমেরিকার মতো বড় বাজারে রপ্তানি কমে যাওয়ার পরও সেটা বাংলাদেশের মোট তৈরি পোশাক রপ্তানিকে নেতিবাচক করতে পারেনি, বরং ইতিবাচক হয়েছে।
মার্কিন ঘাটতি পুষিয়ে নিতে মূল ভূমিকা রেখেছে ইউরোপ-আমেরিকার বাইরে বিকল্প বাজারে রপ্তানি বৃদ্ধি।নারায়ণগঞ্জের অদূরে ঊর্মি গার্মেন্টসের কথাই ধরা যাক। কারখানাটিতে যেসব পোশাক তৈরি হয় তার একটা গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্য ইউরোপ-আমেরিকা।
তবে এর বাইরেও প্রতিষ্ঠানটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আইটেম রপ্তানি করে ইউরোপ-আমেরিকার বাইরে বিভিন্ন দেশে। এরমধ্যে আছে জাপান, অস্ট্রেলিয়া এমনকি ভারতের মতো দেশও। বাংলাদেশের রপ্তানি বাজারে যেটা নন-ট্রাডিশনাল মার্কেট হিসেবে পরিচিত।
জানা গেছে, ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে নন-ট্রাডিশনাল মার্কেটে তার রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ২০ শতাংশ।
বাংলাদেশের অনেক তৈরি পোশাক কারাখানা নন-ট্রাডিশনাল মার্কেটে রপ্তানি করে প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। সামগ্রিকভাবে তৈরি পোশাক রপ্তানি খাতে যার অবদান দাঁড়াচ্ছে ১৮.৭২ শতাংশ।
ফলে এই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের নন-ট্রাডিশনাল মার্কেটের আয় একক দেশ হিসেবে আমেরিকা থেকে আসা আয়কে ছাপিয়ে গেলো। বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি আয়ে আমেরিকা থেকে আসে ১৭ শতাংশের কিছু বেশি।
বাংলাদেশে বিকল্প মার্কেট থেকে আয় বৃদ্ধি করতে পারাতেই মূলত মার্কিন ঘাটতি পুষিয়ে নেয়া গেছে।
বাংলাদেশের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিকল্প বাজারে গুরুত্ব পাচ্ছে দক্ষিণ আমেরিকার বিভিন্ন দেশ, দক্ষিণ আফ্রিকা, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত, সৌদি আরবসহ বেশ ক’টি দেশ। তবে অন্তত আগামী কয়েক বছর একক দেশ হিসেবে আমেরিকার বাজার বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং বর্ধনশীল হিসেবেই থাকবে।
বিজিএমইএ সূত্রে জানা গেছে, আমেরিকায় রপ্তানি কমার কারণ ব্যবসায়িক। সেদেশে মূল্যস্ফীতি এবং সুদের হারের কারণে ভোগ কমেছে। কিন্তু শেষ দিকে এসে আবারও ব্যবসাটা বেড়েছে। ক্রিসমাস উপলক্ষে অর্ডার কিন্তু বেড়েছে।
আমেরিকার বাজার ধরে রাখা গেলে বাংলাদেশের পোশাক খাত অপ্রতিদ্বন্দ্বী ও অনন্য উচ্চতায় স্থান করে নিবে।