করোনাভাইরাস মহামারির কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর আবারও স্বাভাবিক পাঠদানে ফিরেছে দেশের সব স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। তবে স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়ার প্রথমদিন অবশ্য ক্লাশ করা হয়নি সুমাইয়া সিনহা স্বর্ণার। স্বাভাবিক নিয়মে পাঠদান শুরু হওয়ার দিন ইউনিফর্ম পরে না যাওয়ায় দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির এই শিক্ষার্থীকে স্কুল থেকে বের করে দেয়া হয়।
ঘটনাটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গে তার নির্দেশে সুমাইয়ার জন্য ইউনিফর্ম ও চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহযোগিতা নিয়ে তার বাড়িতে হাজির হয় জেলা প্রশাসন।
মঙ্গলবার রাত ১০টায় ফুলবাড়ী পৌর শহরের রামচন্দ্রপুর গ্রামে সুমাইয়ার বাড়িতে যান দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক খালেদ মোহাম্মদ জাকী।
সুমাইয়া পৌর শহরের রামচন্দ্রপুর গ্রামের সুপারি ব্যবসায়ী মো. শাহিনুর ইসলামের মেয়ে এবং ফুলবাড়ী পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী।
সুমাইয়া সিনহা স্বর্ণার বাড়িতে গিয়ে তার স্কুলে পরার জন্য ইউনিফর্ম ও থ্যালাসেমিয়ার চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহযোগিতা করেন জেলা প্রশাসক।
এসময় ফুলবাড়ী পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাসেম আলী নিজের কৃতকর্মের জন্য দুঃখপ্রকাশ করেন এবং আগামীতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না করার অঙ্গীকার করেন।
জেলা প্রশাসক খালেদ মোহাম্মদ জাকি বলেন, সকালে স্কুল থেকে ইউনিফর্ম না থাকার কারণে সুমাইয়াকে প্রধান শিক্ষক স্কুল থেকে বের করে দিয়েছিলেন। এ ঘটনা নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টিগোচর হয়। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে আমাকে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দ্রুত শিশু সুমাইয়া সিনহা স্বর্ণাকে নতুন ইউনিফর্ম ও আর্থিক সাহায্য দিয়েছি। একইসঙ্গে তার চিকিৎসার জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুই এক দিনের মধ্যে সহযোগিতা করা হবে।
এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রধান শিক্ষকের এমন কাজ আমরা পুরো শিক্ষা পরিবার লজ্জিত ও মর্মাহত। এমন ঘটনার জন্য প্রধান শিক্ষককে আগামীকাল শোকজ করা হবে। এছাড়াও আগামীকাল (বুধবার) এ বিষয়ে জেলার সকল বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের এ ধরনের কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হবে।
এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ‘স্কুলড্রেস না থাকায় ছাত্রীদের বের করে দিলেন প্রধান শিক্ষক’ শিরোনামে দৈনিক সমকালে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়। এরপর বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিগোচর হলে দিনাজপুরের জেলা প্রশাসককে স্কুল ছাত্রীর পাশে দাঁড়ানোর জন্য নির্দেশ দেন তিনি।