1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

জার্মানিতে জ্বালানি সংকট, সামাল দিতে গ্যাস স্টোরেজ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
বুধবার, ১ মার্চ, ২০২৩

ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে রাশিয়া থেকে গ্যাস সরবরাহ প্রায় থেমে যাওয়ার কারণে জার্মানিতে জ্বালানি সংকটের আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল। বিকল্প উৎস ও অত্যাধুনিক গ্যাস স্টোরেজ বা সংরক্ষণ ভাণ্ডারের দৌলতে সেই সংকট আপাতত সামাল দেওয়া সম্ভব হয়েছে।

জার্মানির গ্যাস সংরক্ষণ ভাণ্ডার সম্পর্কে কিছুদিন আগেও মানুষের তেমন ধারণা ছিল না। বর্তমানে এমন গ্যাস স্টোরেজ সবার নজর কাড়ছে। তার যথেষ্ট কারণও রয়েছে। জার্মানির জ্বালানি নিরাপত্তা এগুলোর উপর নির্ভরশীল।

বাভারিয়ার লাইপফিঙার বাডার ব্রিক মেকার্স নামের কম্পানির ইটভাটার মতো উৎপাদন কেন্দ্র ভবিষ্যৎ গ্যাস ভাণ্ডারের মাত্রার ওপর নির্ভর করছে। গ্যাস না পেলে পারিবারিক এই কম্পানির চুলা বন্ধ হয়ে যায়। কম্পানির প্রতিনিধি কাটেরিনা বাডার বলেন, ‘এই হলুদ রেখাগুলোর মধ্য দিয়ে গ্যাস ওভেনে চলে যায়। তারপর ইট গরম হয় ও পোড়ানো হয়।’ গ্যাস স্টোরেজ পরিপূর্ণ থাকলে উৎপাদন নিশ্চিত থাকে। এমনকি শীতের মাসগুলোতে জার্মানিতে আমদানির তুলনায় গ্যাসের চাহিদা বেড়ে গেলেও ঘাটতি মেটানো সম্ভব হয়।

কিন্তু এমন গ্যাস স্টোরেজ কীভাবে কাজ করে?

ইটভাটা থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে ভল্ফার্সব্যার্গে জার্মানির গভীরতম গ্যাস স্টোরেজ অবস্থিত। সেটি আসলে পোর স্টোরেজ। নক্সায় শুধু চূড়া দেখা যায়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশটি মাটির তিন হাজার মিটার গভীরে রয়েছে। সেখানে ছিদ্রযুক্ত শিলার মধ্যে গ্যাস জমা রাখা হয়। কোটি কোটি বছরের পুরানো পাথর স্পঞ্জের মতো গ্যাস শুষে নেয়। পাথর ও মাটির স্তর এবং সেই সঙ্গে পানি গ্যাস লিক হতে দেয় না।

সেখানে গ্যাসের পরিমাণ প্রতিনিয়ত পরিমাপ করা হয়। ভল্ফার্সব্যার্গ গ্যাস স্টোরেজের টোমাস রুপরিশ বলেন, এ দিনের মাপ ৯৯ দশমিক ২ শতাংশ। পোর স্টোরেজ ভরতে বা খালি করতে ১৫০ দিন সময় লাগে।

তথাকথিত স্টোরেজ প্রক্রিয়া শুধু সময়সাপেক্ষ নয়, বেশ জটিলও বটে। বিশাল এক পাইপের মধ্যে সেই কাজ শুরু হয়। ভল্ফার্সব্যার্গ গ্যাস স্টোরেজের প্রতিনিধি হর্স্ট গাইয়ার বলেন, ‘গ্রীষ্মকালে এখানে গ্যাস ভরা হয় এবং শীতকালে এখান থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে গ্যাস বেরিয়ে যায়। আগে মূলত রাশিয়া থেকেই গ্যাস আসতো। পরিমাপের মাত্রার ভিত্তিতে আমরা বলতে পারি, রাশিয়া থেকে আর গ্যাস আসছে না। নরওয়ে বা এলএনজি সূত্রে গ্যাস আনা হচ্ছে।’

শিলার ক্ষুদ্র ছিদ্রের মধ্যে যতটা সম্ভব গ্যাস জমা রাখতে গ্যাসের চাপ বাড়িয়ে দেওয়া হয়। তথাকথিত কম্প্রেসার নামের বিশাল যন্ত্রের মাধ্যমে সেই কাজ করা হয়। চাপ বাড়ানোর ফলে গ্যাস উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। শেষে গ্যাস আবার শীতল করা হয়। তারপর পাতালের দ্বারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে গ্যাস গন্তব্যে পৌঁছয়।

টোমাস রুপরিশ বলেন, ‘এটা স্টোরেজের শিলা। এই শিলার মধ্যে অনেক স্তর রয়েছে, অর্থাৎ অনেক ছিদ্রে ভরা। উচ্চ মাত্রায় চাপের মাধ্যমে আমরা সেই ছিদ্রে গ্যাস জমা রাখি।’

জোগানের তুলনায় চাহিদা বেড়ে গেলে স্টোরেজ থেকে গ্যাস বার করে উষ্ণ করা হয়। চাপ কমিয়ে দেওয়া হয়। তারপর সেই গ্যাস বাইরে পাঠানো হয়। সবকিছু ঠিকমতো চললে ভল্ফার্সবার্গের গ্যাস স্টোরেজ এক বছর ধরে তিন লাখ ঘরবাড়িতে গ্যাস সরবরাহ করার ক্ষমতা রাখে।

রুপরিশ বলেন, ‘কোনো বছর সত্যি ভীষণ শীত পড়লে কী হবে, সেটা ভাবলেই শুধু অস্থিরতা সৃষ্টি হয়। কারণ গ্যাস স্টোরেজ পুরো ভরা থাকলেও এমন শীতকালে আমাদের সমস্যা হবেই।’ অত্যাধুনিক গ্যাস স্টোরেজ সত্ত্বেও সে ক্ষেত্রে চুলা বন্ধ রাখতে হবে এবং অনেক কারখানার কাজ থেমে যাবে।

সূত্র : ডয়চে ভেলে


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ