1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

তৃতীয় টার্মিনাল: চলছে শেষ মুহূর্তের কর্মযজ্ঞ, অক্টোবরেই ফ্লাইট চালু

ডেস্ক রিপোর্ট : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
বুধবার, ৬ মার্চ, ২০২৪

• ৬ এপ্রিল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে তৃতীয় টার্মিনাল বুঝে নেবে বেবিচক
• তৃতীয় টার্মিনালে বছরে ১ কোটি ২০ লাখ যাত্রীকে সেবা দেওয়া সম্ভব হবে
• টার্মিনালটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ২১ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকা।

পুরোদমে চলছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অত্যাধুনিক তৃতীয় টার্মিনালের কর্মযজ্ঞ। এপ্রিল মাসের মধ্যেই কাজ পুরোপুরি শেষ করার চেষ্টা চলাচ্ছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কাজ শতভাগ শেষ হলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে টার্মিনাল ভবন বুঝে নেবে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি বছরের অক্টোবরেই পূর্ণাঙ্গ অপারেশনে যাবে নান্দনিক অঙ্গসজ্জার তৃতীয় টার্মিনাল।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, এখন শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনাল ফ্লাইট উড্ডয়ন-অবতরণের জন্য প্রায় প্রস্তুত। আগামী অক্টোবরে টার্মিনালটি চালু হলে দেশি-বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলো কার্যক্রম বাড়াবে। এতে আকাশপথে যাত্রীদের আরও সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত হবে, রাজস্ব আয় বাড়বে বেবিচকের।

গত বছরের ৭ অক্টোবর ‘স্বপ্নের সঙ্গে বাস্তবতার সংযোগ’ স্লোগান নিয়ে টার্মিনালটির আংশিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অক্টোবর থেকে তৃতীয় টার্মিনাল পুরোদমে চালু হলে বিমানবন্দরের সক্ষমতা বাড়বে আড়াই গুণ। অর্থাৎ, এখন শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রথম ও দ্বিতীয় টার্মিনালে দিনে ৩০টির বেশি উড়োজাহাজ সংস্থার ১২০-১৩০টি প্লেন উড্ডয়ন ও অবতরণ করে। প্রতিদিন এসব উড়োজাহাজের প্রায় ২০ হাজার যাত্রী বিমানবন্দরের দুটি টার্মিনাল ব্যবহার করেন। এ হিসাবে বছরে প্রায় ৮০ লাখ যাত্রীর সেবা দেওয়ার সুযোগ আছে। তৃতীয় টার্মিনাল চালু হলে আরও ১ কোটি ২০ লাখ যাত্রীকে সেবা দেওয়া সম্ভব হবে।

বেবিচক সূত্র জানায়, ২০১৭ সালে শাহজালাল বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পটি হাতে নেয় সরকার। তবে নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২১ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাপানি সহযোগিতা সংস্থা জাইকা ঋণ হিসেবে দিচ্ছে ১৬ হাজার ১৪১ কোটি টাকা। বাকি টাকা দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। এই নির্মাণকাজ করছে জাপানের মিতসুবিশি ও ফুজিতা এবং দক্ষিণ কোরিয়ার স্যামসাং।

কার্যাদেশ অনুযায়ী আগামী ৫ এপ্রিল তৃতীয় টার্মিনালের সব কাজ শেষ হওয়া কথা। পরদিন ৬ এপ্রিল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান থেকে টার্মিনালটি বুঝে নেবে বেবিচক। এরপর শুরু হবে পুরোনো টার্মিনাল থেকে নতুন টার্মিনালে সবকিছু স্থানান্তরে অপারেশন রেডিন্যান্স অ্যান্ড এয়ারপোর্ট ট্রান্সফার (ওআরএটি) প্রকল্পের কাজ।

রাজধানীর নিকুঞ্জের লা মেরিডিয়ান হোটেলের উত্তর পাশে দাঁড়ালেই চোখে পড়বে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্প এলাকা। সম্প্রতি সরেজমিনে চোখে পড়ে বিশাল কর্মযজ্ঞ। এর মধ্যে টার্মিনাল ভবনের ওপর দৃষ্টিনন্দন নকশার কাজ সবার নজর কাড়ছে। সেখানে কয়েক হাজার শ্রমিক বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে কাজ করছেন। তাদের কেউ বৈদ্যুতিক বাতি লাগাচ্ছেন, কেউ ধোয়া-মোছা করছেন, কেউ আবার বড় বড় যন্ত্রের সাহায্যে টার্মিনালের ছাদের অংশে সিলিং ফিট করছেন।

তবে টার্মিনালের দক্ষিণাংশে (ভিআইপি, ভিভিআইপি) তেমন কর্মযজ্ঞ নেই। সেখানে সারিবদ্ধভাবে বোর্ডিং কাউন্টার, চেকিংয়ের বিভিন্ন যন্ত্র, ইমিগ্রেশন ডেস্ক ধাপে ধাপে সাজানো। স্বয়ংক্রিয় চলমান ওয়াকওয়ে ‘মুভিং ওয়াক’, এসকেলেটর, লিফট স্থাপনের কাজও শেষ। টার্মিনালের ভেতর থেকে স্বচ্ছ কাচের মধ্য দিয়ে বিমানবন্দরের রানওয়েতে উড়োজাহাজ ওঠা-নামা, প্রথম ও দ্বিতীয় টার্মিনালের উড়োজাহাজ পার্কিং দেখা যায়।

দ্বিতীয় ফ্লোর থেকে গ্রাউন্ড ফ্লোরে নামতেই দেখা যায় ভিআইপি বা ভিভিআইপি অংশে উন্নত দেশের আদলে আলাদা চারটি বোর্ডিং ব্রিজ স্থাপন করা হয়েছে। এই অংশের শীততাপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রসহ বৈদ্যুতিক সবকিছু সচল। বাইরে স্থাপন করা হয়েছে বড় একটি এলইডি বোর্ড।

শাহজালাল বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের প্রকল্প পরিচালক এ কে এম মাকসুদুল ইসলাম বলেন, তৃতীয় টার্মিনালের সব ধরনের কাজ প্রায় শেষ। কার্যাদেশ অনুযায়ী প্রকল্পের মেয়াদ আর অল্প কিছুদিন বাকি। এ সময়ের মধ্যে টার্মিনাল ধোয়া-মোছাসহ অন্য সব কাজ শেষ হবে। এরপর টার্মিনালটি বুঝে নেবে বেবিচক।’

তিনি বলেন, ‘নির্মাণ প্রতিষ্ঠান জাপানের মিতসুবিশি ও ফুজিতা এবং দক্ষিণ কোরিয়ার স্যামসাং তারা নিজেদের কাজের দক্ষতার প্রমাণ দিয়েছেন। নিখুঁতভাবে টার্মিনাল ভবন স্থাপনসহ আনুষঙ্গিক কাজ শেষ হয়েছে।’

বেবিচক সূত্র জানায়, বর্তমানে শাহজালাল বিমানবন্দরে দুটি টার্মিনালে জায়গা রয়েছে এক লাখ বর্গমিটারের কিছু বেশি। তৃতীয় টার্মিনাল চালু হলে এর সঙ্গে যুক্ত হবে আরও দুই লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটার স্থান। তিনতলা টার্মিনাল ভবনে থাকছে ১১৫টি চেক-ইন কাউন্টার, ৬৪টি ডিপার্চার ও ৬৪টি অ্যারাইভাল ইমিগ্রেশন ডেস্ক। নিরাপত্তা নিশ্চিতে থাকবে ২৭টি ব্যাগেজ স্ক্যানিং মেশিন, ৪০টি স্ক্যানিং মেশিন, ১২টি বোর্ডিং ব্রিজ, ১৬টি ক্যারোসেল ও ১১টি বডি স্ক্যানার।

তৃতীয় টার্মিনালে একসঙ্গে ৩৭টি উড়োজাহাজ পার্ক করা যাবে। রানওয়েতে উড়োজাহাজের অপেক্ষা কমাতে নির্মাণ করা হয়েছে দুটি হাইস্পিড ট্যাক্সিওয়ে। পণ্য আমদানি ও রপ্তানির জন্য নির্মাণ করা হয়েছে দুটি ভবন। একসঙ্গে এক হাজার ৩৫০টি গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য তিনতলা ভবনের নির্মাণকাজ প্রায় শেষ। তৃতীয় টার্মিনালের মোট ২৬টি বোর্ডিং ব্রিজের মধ্যে প্রথম ধাপে চালু হবে ১২টি। বহির্গমনের জন্য মোট ১১৫টি চেক-ইন কাউন্টারের মধ্যে ১৫টি থাকবে সেলফ সার্ভিস চেক-ইন কাউন্টার। ১০টি স্বয়ংক্রিয় পাসপোর্ট কন্ট্রোল কাউন্টারও থাকবে।

গত ২০ ফেব্রুয়ারি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড ট্যুরিজম জার্নালিস্ট ফোরামের নির্বাহী কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী ফারুক খান। বৈঠকে তিনি চলতি বছরের অক্টোবরে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অত্যাধুনিক থার্ড টার্মিনাল চালুর কথা জানান।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ