প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে এখন উঠে আসছেন নারী কর্মকর্তারা। পুরুষের তুলনায় তা অনেক কম হলেও বিগত কয়েক দশকের তুলনায় এটাকে নারীর ক্রম অগ্রযাত্রা বলা যায়। প্রশাসনে অনেক যোগ্য নারী কাজ করছেন এবং ভবিষ্যতে বড় দায়িত্বে নারীর সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশা দায়িত্বরতদের।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, সিভিল সার্ভিসে সহকারী সচিব থেকে সচিব পর্যন্ত নারী কর্মকর্তার সংখ্যা এক হাজার ৫৪০ জন।
বর্তমানে প্রশাসনে ৮৬ জন সচিব, সিনিয়র সচিব ও সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা আছেন। এর মধ্যে ১০ জন নারী। ৬৪ জন জেলা প্রশাসকের (ডিসি) মধ্যে নারী ৭ জন। আটজন বিভাগীয় কমিশনারের মধ্যে একজন নারী।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে জানা যায়, নারী সিনিয়র সচিব, সচিব ও সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা ১০ জন। এদের মধ্যে রয়েছেন- শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সিনিয়র সচিব মোসাম্মৎ হামিদা বেগম, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব শাহনাজ আরেফিন এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ফারহিনা আহমেদ।
এছাড়া রয়েছেন- জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান (সচিব) নাসরীন আফরোজ, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ওয়াহিদা আক্তার, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমা মোবারেক, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য (সচিব) রেহানা পারভীন এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন।
ময়মনসিংহের বিভাগীয় কমিশনার নারী। উম্মে সালমা তানজিয়া ময়মনসিংহ বিভাগ সামলাচ্ছেন।
জেলা প্রশাসকদের মধ্যে রয়েছেন- ফেনীর জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার, লক্ষ্মীপুরের জেলা প্রশাসক সুরাইয়া জাহান, ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক ফারাহ্ গুল নিঝুম, হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোছা. জিলুফা সুলতানা, মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক উর্মি বিনতে সালাম, মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক রেহেনা আকতার ও গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক কাজী নাহিদ রসুল। রাজশাহী ও খুলনা বিভাগে কোনো নারী জেলা প্রশাসক নেই।
ক্যাডার সার্ভিসের নারী কর্মকর্তাদের সংগঠন বিসিএস উইমেন নেটওয়ার্কের মহাসচিব ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সায়লা ফারজানা বলেন, ‘গত ৫/৬ বছরে প্রশাসনে নারী কর্মকর্তার সংখ্যা খুব একটা বাড়েনি। প্রধানমন্ত্রী আমাদের নীতি-নির্ধারণী পদগুলোতে যাওয়ার সুযোগ দিয়েছেন। সেই সুযোগটা প্রসারিত করেছেন আমাদের মন্ত্রিপরিষদ সচিব, মুখ্য সচিব, জনপ্রশাসন সচিবসহ সিনিয়র স্যাররা। সেজন্য আমরা প্রধানমন্ত্রী ও স্যারদের প্রতি কৃতজ্ঞ।’
অতিরিক্ত সচিব বলেন, ‘আরও অনেক যোগ্য নারী কর্মকর্তা রয়েছেন, যারা এসব নীতি-নির্ধারণী পদে যাওয়ার মতো। আমরা আশা করছি এ সংখ্যা আরও বাড়বে। আমরা আশা করছি ভবিষ্যতে এসব জায়গায় আরও নারী কর্মকর্তা পাবো। আমাদের স্যাররাও জানেন যে দেওয়ার মতো আরও ভালো কর্মকর্তা আছেন। আশা করি আস্তে আস্তে বাড়বে।