টগর ফুলকে অনেকেই পছন্দ করলেও অযত্ন আর অবহেলায় বেড়ে ওঠা কচুরিপানাকে দেখেন ফেলনা হিসেবে। কিন্তু সে কচুরিপানাই জাগালো অর্থের সম্ভাবনা। সময়ের ব্যবধানে এর ব্যবহার ও সহজলভ্যতার কারণে রপ্তানিযোগ্য পণ্য তৈরির কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে এটি। সেই ফেলনা কচুরিপানা এখন কাঁচামাল হিসেবে রপ্তানি হচ্ছে বিশ্বের ২৫টি দেশে। পিরোজপুরের উত্তরের উপজেলা নাজিরপুরের সোনাপুর গ্রামের প্রায় ৩ শতাধিক পরিবারের কর্মসংস্থান হচ্ছে এ কচুরিপানা থেকেই।
সোনাপুর গ্রামের প্রায় ৩ শতাধিক পরিবারের কর্মসংস্থান হচ্ছে কচুরিপানা থেকে নাজিরপুর উপজেলার এক প্রত্যন্ত এলাকা গাওখালীর সোনাপুর গ্রাম। এখানকার নদী আর বিলে মাইলের পর মাইল দিগন্ত বিস্তৃত কচুরিপানা আপনার দৃষ্টিকে বিভ্রান্ত করলেও এই কচুরিপানাই এ এলাকার নিম্নবিত্তদের আয়ের এক অন্যতম উৎস। সকল বয়সের নারী পুরুষ এমনকি শিক্ষার্থীরাও তাদের পড়াশোনার খরচ যোগাতে সহযোগী পেশা হিসেবে বেছে নিচ্ছেন এটি। সকাল হলেই কচুরিপানা সংগ্রহে ছোট ছোট নৌকা নিয়ে বেড়িয়ে পড়েন তারা। কিনতে খরচ না হলেও শুধু নামমাত্র খরচে সংগ্রহ করা হচ্ছে এগুলো। এলাকার শতকরা ৯৫টি পরিবার সংযুক্ত আছে এর সাথে। সংগ্রহকারীদের তালিকায় আছেন গৃহবধুরাও।
উদ্যোক্তা আলমগীর হোসেন বলেন, মাঘ থেকে জ্যৈষ্ঠ মাস পর্যন্ত ভরা মৌসুম থাকলেও এর সংগ্রহ চলে সারা বছরজুড়ে। কাটার পর শুকানোর প্রক্রিয়ায় প্রায় ৫ থেকে ৬ দিন লেগে যায়। প্রতি কেজি শুকনা কচুরিপানা বিক্রি হয় ৫০ টাকা দরে। ১ কেজি শুকনো মাল পেতে সংগ্রহ করতে হয় প্রায় আড়াই কেজি কচুরিপানা। মাসে প্রায় ১০ টন কচুরিপানা কেনাবেচা হয় এখানে। ফলে অনেকটা বিনা পুঁজিতে স্বাবলম্বী হচ্ছেন এলাকার মানুষ। কাঁচামাল হিসেবে কচুরিপানা রপ্তানি হচ্ছে বিশ্বের ২৫টি দেশে।
দৃষ্টিনন্দন ফুলঝুড়ি, রঙিন পাপোশ, রকমারি ফুলদানি, আর বিভিন্ন রঙের পাটি তৈরির কাঁচামাল এ কচুরিপানা। ব্যাগ, টুপি আর সুন্দর সব জায়নামাজও তৈরী হয় এর থেকে। ফলে বিদেশে এর চাহিদা অনেক।