1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

আইসিসির এলিট প্যানেলে প্রথম বাংলাদেশি আম্পায়ার হয়ে ইতিহাস গড়লেন সৈকত

ডেস্ক রিপোর্ট : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

ক্রিকেটার হিসেবে বাইশগজে ক্যারিয়ার শুরু করলেও, সেটি বেশি লম্বা করতে পারেননি শরফুদ্দৌলা ইবনে শহিদ সৈকত। আইসিসি ট্রফি খেলা এই স্পিনারের ক্যারিয়ার শেষ হয় ইনজুরিতে পড়ে। এরপর বাংলাদেশের হয়ে বেশ কয়েকবার আম্পায়ারিংয়ে ইতিহাস গড়েছেন সৈকত। যার ধারাবাহিকতায় প্রথম কোনো বাংলাদেশি আম্পায়ার হিসেবে আইসিসির এলিট প্যানেলে তিনি জায়গা করে নিয়েছেন।

বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি থেকে মাইলফলক গড়া সেই ঘোষণা আসার পর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সৈকত। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি) দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি যেমন এলিট প্যানেলে জায়গা পাওয়ার নেপথ্য ঘটনা জানিয়েছেন, তেমনি পরামর্শ দিয়েছেন আম্পায়ারিংয়ে ক্যারিয়ার গড়তে ইচ্ছুকদের। এছাড়া ক্রিকেট ছেড়ে আম্পায়ারের পেশা বেছে নেওয়ার স্মৃতিচারণও করেছেন সৈকত।

বাবার চাকরিসূত্রে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্কুলে পড়েছিলেন তিনি। সেখানকার ছাত্র থাকাবস্থায় সৈকত সূর্যতরুণের হয়ে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে খেলেন। এরপর ১৯৯২ সালে সুযোগ পান সাফ গেমসের বাংলাদেশ দলেও। একপর্যায়ে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের অধিনায়কও হয়েছিলেন। পরে কেনিয়ায় অনুষ্ঠিত ১৯৯৪ আইসিসি ট্রফিতে জায়গা হয় সৈকতের। যেখানে দ্বিতীয় রাউন্ডের তিন ম্যাচে তিনি ৬ উইকেট শিকার করেন। তবে দেশের হয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের কোনো ম্যাচে প্রতিনিধিত্ব করার আগেই ব্যাকপেইন ইনজুরির কারণে ছিটকে যান তিনি।

বাংলাদেশের প্রতিনিধি হওয়ার অন্য উপায় হিসেবে তিনি বেছে নেন আম্পায়ারিংকে। ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক ম্যাচ পরিচালনার প্রথম দায়িত্ব পাওয়া সৈকত এলিট প্যানেলে জায়গা পেয়েছেন ১৪ বছর পর। যাকে তিনি ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে প্রথম কোনো বাংলাদেশি হিসেবে দায়িত্ব পালনের পুরস্কার বলে মনে করেন। সৈকত বলেন, ‘ভালো আম্পায়ারিং করে মুগ্ধ করতে পেরেছিলাম, একটা ভাবমূর্তি গড়তে পেরেছিলাম। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বকাপে গিয়েও নার্ভাস ছিলাম না। আমার মনে হয় সেটিরই পুরস্কার আজকের এই অর্জন।’

আম্পায়ার হওয়ার শুরুতে কিছুটা চমকপ্রদ অভিজ্ঞতা হয়েছিল সৈকতের, ‘ধানমন্ডির ৮ নম্বর মাঠে তৃতীয় বিভাগের বাছাইপর্বের একটা ম্যাচ করতে যাই। তখন তো অতটা নিয়মকানুন জেনে আসিনি আম্পায়ারিং করতে। জানতাম না কোন জুতা পরতে হয়। ফরমাল শু পরে গিয়েছিলাম। দেখে একজন স্কোরার বলল, “সৈকত ভাই, এই শু-তে তো আম্পায়ারিং করে না।” এরপর একটা বলে ওয়াইড ও বাই হয়েছিল। আমি ওয়াইডের সংকেত দিলাম, বাইও দিলাম। আসলে তো ওয়াইড হলে বাইয়ের সংকেত দিতে হয় না। সেখান থেকে শুরু। এরপর অনেক অভিজ্ঞতা হলো।’

প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ পরিচালনার স্মৃতিও ভোলেননি সৈকত, যেখানে তিনি দায়িত্ব পেয়েছিলেন ব্যক্তিগত পছন্দের আম্পায়ার সাইমন টোফেলের সঙ্গে। সৈকত বলেন, ‘আমার খুব পছন্দের আম্পায়ার ছিল সাইমন টোফেল। তখন আইসিসি আম্পায়ার অব দ্য ইয়ার হন তিনি। শ্রীলঙ্কার সঙ্গে (বাংলাদেশের) ম্যাচটা ছিল ২০১০ সালে, সম্ভবত ৮ জানুয়ারি। মিরপুরে আমার অভিষেক হয় (আম্পায়ারিংয়ে) শ্রীলঙ্কা-বাংলাদেশ-ভারত ত্রিদেশীয় সিরিজে। প্রথম দুইটা ম্যাচেই আমি সাইমন টোফেলের সঙ্গে আম্পায়ারিং করি। উত্তেজনা কাজ করছিল প্রচুর। আমি যখন প্রথম আম্পায়ারিংয়ে দাঁড়ালাম, তখন দেখলাম বোলার অনেক জোরে বল করছে। ঘরোয়া ক্রিকেটে তো আমি এত জোরে বল ফেস করে অভ্যস্ত না। তাই মানিয়ে নিতে একটু সমস্যা হয়েছিল।’

বিদেশের চেয়ে দেশের মাটিতে আম্পায়ারিং করা কঠিন বলে মনে করেন সৈকত। এছাড়া যারা আম্পায়ারিং পেশায় আসতে চানও তাদের দিয়েছেন পরামর্শ, ‘বিদেশে ম্যাচ পরিচালনার চেয়ে দেশে করা অনেক কঠিন। সহজ মনে হলেও এটি কঠিন কাজ, এখানেও উত্থান-পতন আছে। কাঁদতে কাঁদতে আপনি বাসায় ফিরবেন না, এটা আপনার লাইফে থাকবে না– এমনটা হবে না। এজন্য যারা আম্পায়ারিংয়ে আসতে চান তাদের কনফিডেন্সটা হারানো যাবে না। আপনি জনপ্রিয় চরিত্র হতে পারবেন না। আপনাকে এমন একজন হতে হবে, যাকে অন্যরা সম্মান করে। আত্মবিশ্বাস ধরে রেখে লক্ষ্যটা স্থির রাখতে পারলে সাফল্য আসবেই।’

উল্লেখ্য, বাংলাদেশি আম্পায়ারিং ইতিহাসে একাধিক কীর্তি গড়া সৈকতের এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পুরুষদের ক্রিকেটে ১০টি টেস্ট, ৬৩ ওয়ানডে এবং ৪৪ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে আম্পায়ারিং করার অভিজ্ঞতা আছে। এছাড়া মেয়েদের ক্রিকেটেও ১৩টি ওয়ানডে এবং ২৮টি টি-টোয়েন্টি পরিচালনা করেছেন তিনি।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ