1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

যেকোনো মুহূর্তে গ্রেফতার মামুনুল

ইবার্তা সম্পাদনা পর্ষদ : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
শনিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২১

হেফাজত ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরীর সেক্রেটারি মামুনুল হক পুলিশের খাতায় ‘পলাতক’। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছেন, মামুনুল রাষ্ট্রক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলেন। এজন্যই পরিকল্পিতভাবে একের পর এক সহিংসতায় উসকানি দিচ্ছিলেন তিনি।
তাকে গ্রেপ্তারে তৎপরতা চলছে দাবি করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, চলতি লকডাউনের ভেতরেই তিনি আইনের আওতায় আসতে পারেন।
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ রিসোর্টকাণ্ডের পর থেকে মামুনুল হককে জনসমক্ষে দেখা যায়নি। তিনি শিক্ষকতা করেন মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া মাদ্রাসায়।
৩ এপ্রিল রিসোর্ট-কাণ্ডের পরদিন ওই মাদ্রাসায় হেফাজত নেতারা জরুরি বৈঠক করেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন মামুনুল হক। এরপর আর তাকে সাংগঠনিক কোনো কর্মকাণ্ডেও দেখা যায়নি।
অবশ্য তিনি ফেসবুকে যেসব লাইভ করেছেন সেগুলো মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া মাদ্রাসা থেকেই করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তার ঘনিষ্ঠরা। কয়েক দফা ওই মাদ্রাসায় গেলে সংশ্লিষ্টরা প্রতিবারই দাবি করেন, মামুনুল হক সেখানেই আছেন।
 
সাম্প্রতিক সহিংসতা ও রিসোর্টকাণ্ডে রাজধানীর পল্টন থানা ও নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানায় দুটি মামলা হয়েছে মামুনুল হকের বিরুদ্ধে। এছাড়া, ২০১৩ সালের শাপলা চত্বর তাণ্ডবের ঘটনাতেও তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা আছে।
রিসোর্টকাণ্ডের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে মামুনুল হকের তীব্র সমালোচনা করেন। এরপর থেকেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। গ্রেপ্তার হতে থাকেন হেফাজতের নেতা-কর্মীরা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বেশ কয়েকটি সূত্র জানায়, মামুনুল হকও যেকোনো সময় গ্রেপ্তার হতে পারেন।
 
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার সৈয়দ নূরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা তদন্ত করে যাচ্ছি, তদন্তের একটা পার্ট হল আটক করা। অনেক সময় পলাতক থাকলে আসামিকে আটক করা যায় না। তবে আটক না হওয়া মানে তো আর তদন্ত থেমে থাকা নয়।
‘তদন্তের আরও অন্যান্য দিক আছে। যে অপরাধ সংগঠিত হয়েছে তার সপক্ষে কী স্বাক্ষ্য প্রমাণ আছে, সেগুলো সংগ্রহ করা তদন্তের গুরুত্বপূর্ণ পার্ট। এই কাজগুলো চলমান আছে।’
মামুনুল হক কি তাহলে পলাতক- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, অবশ্যই পলাতক আছেন। মামুনুল হককে গ্রেপ্তারের জন্য আমরা গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রেখেছি। অবস্থান শনাক্ত করা গেলেই তাকে গ্রেফতার করা হবে।’
 
ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের কাছেও মামুনুল ‘পলাতক’। ডিএমপি গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম বলেন, ‘আপাতত যতক্ষণ আমরা তাকে ধরতে না পারছি, ততক্ষণ তিনি পলাতক। তিনি লুকিয়ে আছেন, তবে কোথায় লুকিয়ে আছেন, সেটা আমরা বের করার চেষ্টা করছি। তিনি মোটামুটি নজরদারির মধ্যেই আছেন।’
মামুনুল হক সুপরিকল্পিতভাবে সহিংসতায় উসকানি দিয়েছেন বলে দাবি করেন মাহবুব আলম। তিনি বলেন, ‘মামুনুল হক দেখলেন তার কথায় তো অনেক কিছু হয়ে যাচ্ছে, অনেক সমর্থক তার, উনি যা বলছেন তারা তাই করছেন। ভাস্কর্যবিরোধী বিক্ষোভ থেকে শুরু করে মোদিবিরোধী বিক্ষোভে তিনি যা বলেছেন, তাই হয়েছে। তখন তিনি ভাবলেন জামাত-বিএনপি তার সঙ্গে আছে, তিনি তাহলে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসীন হতে পারবেন।
‘সমমনাদের নিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসার একটা চিন্তা তার মধ্যে চলে এসেছিল। বড় নেতা হতে চেয়েছিলেন তাই তার বক্তব্যের ধরন পাল্টে গিয়েছিল। কিন্তু আইনের ব্যত্যয় যারাই করেছেন তারা কেউ ছাড় পাবে না, সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। শুধু সময়ের ব্যাপার, আমরা শুধু সঠিক সময়ের অপেক্ষা করছি।’
 
মামুনুলের কয়েকটি বিয়ে নিয়ে বিতর্ক এবং জিডির বিষয়ে আইনি কোনো পদক্ষেপ নেয়া হবে কিনা, জানতে চাইলে মাহবুব আলম বলেন, ‘আমরা বিষয়গুলো পর্যালোচনা করছি। আমরা দেখব এগুলো কি তার ব্যক্তিগত বিষয়, নাকি তার কোনো অনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল। অনৈতিক-অসামাজিক উদ্দেশ্য প্রমাণিত হলে কোনো ছাড় দেয়া হবে না।
তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রতি সব নির্দেশনা দেয়া আছে, সে অনুযায়ী আমরা বিশেষ স্ট্রাটেজি নিয়ে কাজ করছি, আমরা অবশ্যই এর একটা চূড়ান্ত ব্যবস্থা নেব।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, ‘মামুনুল হক আটক হবেই। এর আগে হেফাজত তাকে বহিষ্কার করলে প্রক্রিয়া সহজ হবে। এজন্য কিছুটা সময় নেয়া হচ্ছে। তবে হেফাজত কোনো সিদ্ধান্ত না নিলেও আমরা তাকে গ্রেপ্তার করব। এই লকডাউনের মধ্যেই সেটা ঘটতে পারে।’
র‌্যাব সদর দপ্তরের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তাও নাম না প্রকাশ করার শর্তে একই ধরনের ইঙ্গিত দেন। তিনি বলেন, ‘আমরা নির্দেশনা অনুযায়ী বড় অভিযানের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি।’
পুলিশের চোখে মামুনুল হক ‘পলাতক’ থাকলেও রিসোর্টকাণ্ডের পর থেকে তিনি মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া মাদ্রাসাতেই আছেন বলে নিশ্চিত করেন র‌্যাবের ওই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘তিনি (মামুনুল) হয়ত গ্রেপ্তার এড়ানোর কৌশল হিসেবে মাদ্রাসা থেকে বের হচ্ছেন না। নিরাপদ ভেবে মাদ্রাসার একটি কক্ষে তিনি অবস্থান করছেন।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ