1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

রোজা উপলক্ষে চট্টগ্রাম বন্দরে বিপুল পণ্যের নোঙর

ইবার্তা ডেস্ক : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
শনিবার, ২ এপ্রিল, ২০২২

বাজারে আগুনদামের আড়ালেও আছে সুখবর। এরই মধ্যে রোজার পণ্যে ভরপুর হয়ে উঠেছে চট্টগ্রাম বন্দর। রমজান সামনে রেখে এবারের ভোগ্যপণ্যের জোগান অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে ভালো। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের দামামার মধ্যেও রমজান ঘিরে রেকর্ড পরিমাণ পণ্য ঢুকেছে দেশে। গত দুই মাসে ২৪ জাহাজে এসেছে প্রায় ৭ লাখ টন ভোজ্যতেল, ছোলা, খেজুর, মটর ডাল, মসুর ডাল, চিনি ও গম।

এখনও চট্টগ্রাম বন্দরে খালাস হচ্ছে ৫৮ হাজার টন গম, ৪০ হাজার টন মসুর ডাল ও ৪৩ হাজার টন ভোজ্যতেল। ৫৫ হাজার টন অপরিশোধিত চিনি, ৫৮ হাজার ৭০০ টন গম ও ৫৭ হাজার টন অপরিশোধিত সয়াবিন নিয়ে আজ শুক্রবার নোঙর করবে আরও তিনটি জাহাজ। যুদ্ধ ঘিরে আন্তর্জাতিক বাজারে বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়লেও দেশে আসা ভোগ্যপণ্যের দামে সেটির প্রভাব ছিল অনেক কম। রমজানে তাই দামও সহনীয় পর্যায়ে থাকা উচিত বলে মনে করছেন সংশ্নিষ্টরা।

বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি চট্টগ্রাম চ্যাপ্টারের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক সিকান্দার খান বলেন, ‘যুদ্ধের প্রভাবে কিছু পণ্যের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে বাড়তি থাকলেও বাংলাদেশে রোজার পণ্য এসে গেছে আগেভাগেই। যুদ্ধের অনেক আগেই এলসি খুলেছেন ব্যবসায়ীরা। এ কারণে কম দামে পণ্য আনতে পেরেছেন কেউ কেউ। এবার পণ্যও আছে পর্যাপ্ত। এখন জোরদার করতে হবে তদারকি। আর অসাধু ব্যবসায়ীদের অতি মুনাফার প্রবণতা বাদ দিতে হবে।’

চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলমও মনে করছেন রমজানে সব পণ্যের দাম সহনীয় থাকবে। তিনি বলেন, ‘পর্যাপ্ত পণ্য আমদানি হয়েছে। গতবারের চেয়ে অনেক বেশি এসেছে কিছু কিছু পণ্য। এখন সরবরাহ প্রক্রিয়া ঠিক রাখতে হবে। পণ্য খালাস ও সরবরাহ প্রক্রিয়া ঠিক থাকলে রোজায় সব পণ্যের দাম সহনীয় থাকবে বলে মনে করছি আমরা।’

চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রে জানা যায়, গত দুই মাসে ২৪ জাহাজে প্রায় সাত লাখ টন অপরিশোধিত সয়াবিন, ছোলা, খেজুর, মটর ডাল, মসুর ডাল, চিনি ও গম এসেছে দেশে। বেশিরভাগ জাহাজের পণ্য এরই মধ্যে খালাস হয়েছে।

মার্চের প্রথম সপ্তাহেই চট্টগ্রাম বন্দরে অপরিশোধিত পাম তেল এসেছে ১২ হাজার টন। আরেকটি জাহাজে আনা হয়েছে প্রায় ৫৭ হাজার টন সয়াবীজ। সয়াবীজ মাড়াই করে তৈরি করা হয় অপরিশোধিত সয়াবিন তেল। এরপর প্রায় ৩২ হাজার টন অপরিশোধিত সয়াবিন নিয়ে বন্দরে এসেছে দুটি জাহাজ। গত সপ্তাহে আরও ৪২ হাজার টন সয়াবিন তেল নিয়ে এসেছে আরেকটি জাহাজ। সবমিলিয়ে এই অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে ২৪ লাখ ৪৬ হাজার ৪৭ টন ভোজ্যতেল আমদানি করেছেন ব্যবসায়ীরা। দেশে প্রতি মাসে ভোজ্যতেলের চাহিদা থাকে এক লাখ টন। রমজানে এই চাহিদা বেড়ে হয় তিন লাখ টন। এই হিসাব বিবেচনায় আনলেও চাহিদার চেয়ে বেশি ভোজ্যতেল এসেছে এই নয় মাসে।

বিষয়টি স্বীকার করে ভোজ্যতেল আমদানিকারক সিটি গ্রুপের পরিচালক বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, ‘বিশ্ববাজারে সয়াবিনের দাম বাড়লেও আমদানি অব্যাহত রেখেছি আমরা। নতুন আসা অপরিশোধিত সয়াবিন খালাস ও পরিশোধন করে দ্রুত বাজারজাত করা হবে।’

চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি হওয়া অপরিশোধিত সয়াবিনের আমদানিদর পড়েছে প্রতি টন ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ ডলার। সেই হিসাবে প্রতি কেজির দাম পড়ে ১২৭ থেকে ১৩০ টাকা। এই টাকার সঙ্গে পরিশোধন, পরিবহন, বন্দর চার্জ ও আনুষঙ্গিক খরচ যোগ করে বাজারে ছাড়বেন আমদানিকারকরা।

চট্টগ্রাম বন্দরে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ছোলা ও মসুর ডালের চালান নিয়ে আসে তিনটি জাহাজ। এর পর ৫৮ হাজার টনের দুটি চালান নিয়ে আসে আরও দুটি জাহাজ। মার্চে মটর ডালের চালান আসে তিনটি জাহাজে। সর্বশেষ চালান আসে সপ্তাহ দুয়েক আগে। ৪৭ হাজার টন মটর ডালের এই চালান এরই মধ্যে খালাস করে কারখানায় নিয়ে গেছেন ব্যবসায়ীরা।

চিনি তৈরির কাঁচামাল নিয়ে গত দুই মাসে বেশ কয়েকটি জাহাজ এসেছে বলে জানান বহির্নোঙ্গরে পণ্য খালাসের দায়িত্বে থাকা শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটরের চেয়ারম্যান একেএম শামসুজ্জামান রাসেল। তিনি বলেন, ‘৯০ হাজার টন অপরিশোধিত চিনিবাহী দুটি জাহাজ এসেছে কয়েকদিন আগে। এখন আবদুল মোনেম সুগার মিলের ৫৫ হাজার টন চিনি খালাস হচ্ছে বহির্নোঙ্গরে। অপরিশোধিত সয়াবিন ও চিনি এবং গম নিয়ে আজ শুক্রবার আরও তিনটি জাহাজ বন্দরসীমায় আসার কথা রয়েছে।’
বন্দর সূত্রে জানা যায়, এই অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে ১৮ লাখ টন চাহিদার বিপরীতে দেশে প্রায় ১৯ লাখ ৮৩ হাজার টন অপরিশোধিত চিনি আমদানি করেছেন ব্যবসায়ীরা।

এবার ডালজাতীয় পণ্যও চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে এসেছে চাহিদার বেশি। অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে ৩ লাখ ১২ হাজার টন মসুর ডাল আমদানি হয়েছে দেশে। একই সময়ে মটর ডাল আমদানি হয়েছে ১ লাখ ৩৩ হাজার টন। ছোলার বড় আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান বিএসএম গ্রুপ। এই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান আবুল বশর চৌধুরী এর আগে সমকালকে বলেছিলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজার অস্থির থাকলেও পণ্য আমদানি করেছি আমরা। যে পরিমাণ পণ্য এসেছে তাতে বাজার নিয়ন্ত্রণে থাকার কথা। সরবরাহ প্রক্রিয়ায় যাতে কোনো সমস্যা না হয়, সেদিকে দায়িত্বশীলদের খেয়াল রাখতে হবে।’

জানা যায়, আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় দেশে এবার খেজুরও এসেছে বেশি। ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে দেশে খেজুর এসেছিল প্রায় ৩৮ হাজার টন। অথচ এবার একই সময়ে খেজুর ঢুকেছে প্রায় ৭৫ হাজার টন।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ

নির্বাচিত