1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

উচ্চ ফলনশীল মিষ্টি ভুট্টার জাত উদ্ভাবন, কম খরচে অধিক লাভ

নিজস্ব প্রতিবেদক : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
মঙ্গলবার, ৪ এপ্রিল, ২০২৩

সুইট কর্ন বা মিষ্টি ভুট্টার উচ্চ ফলনশীল একটি জাত উদ্ভাবন করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক অধ্যাপক ড. মো. রুহুল আমিন। বেশি সুগার, প্রোটিনসমৃদ্ধ ও ক্যানসার প্রতিরোধ গুণাবলী সম্পন্ন এই ভুট্টা দেশের প্রোটিন চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে দাবি উদ্ভাবকের। কম খরচে উৎপাদন করে এর বেশি ফলন পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এন্টোমলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. রুহুল আমিন বলেন, ‘২০১৪ সালে কোরিয়া থেকে মিষ্টি ভুট্টার ১৪টি ইনব্রিড বীজ এনে টবে চাষ করি। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা মাঠে চাষ করা হয়। এতে দেখা গেছে, এদেশের আবহাওয়ায় এটির ভালো উৎপাদন হয়েছে এবং ইতিবাচক ফলন পাওয়া যায়। চাষ বাড়ানোর লক্ষ্যে ’বিইউ মিষ্টি ভুট্টা’ নামে এই জাতটি চার বছর গবেষণা মাঠে চাষ করে উচ্চ ফলন পাওয়া গেছে।’

এই মিষ্টি ভুট্টা কাঁচা কিংবা পুড়িয়ে খাওয়া যায় উল্লেখ করে ড. মো. রুহুল আমিন বলেন, ‘দেশের প্রচলিত জাতগুলোর তুলনায় এই জাতের ভুট্টায় চিনি, প্রোটিনের পরিমাণ বেশি। উচ্চ ফলনশীল হওয়ায় কৃষকরা এই ভুট্টা চাষে লাভবান হবেন। ইতোমধ্যে ২০২২ সালে টাঙ্গাইলের গোপালপুর, সুপ্রিম সিড কোম্পানির মাধ্যমে ময়মনসিংহের ত্রিশাল, নীলফামারী, পঞ্চগড়ের কাউয়াপুকুর, বিএডিসির মাধ্যমে ঠাকুরগাঁও এবং মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া এলাকায় চাষাবাদ করা হচ্ছে এই ভুট্টা।’

গবেষক রুহুল আমিন বলেন, ‘মিষ্টি ভুট্টা জাপান, কোরিয়া, চীন, ফিলিপাইনসহ বিভিন্ন দেশের মানুষের জনপ্রিয় খাবার। কোনও রকম প্রক্রিয়া ছাড়াই এটি কাঁচা বা সিদ্ধ করে খাওয়া যায়। এ ছাড়া সালাদ, স্যুপ এবং সবজি হিসেবেও ব্যবহার করা হয়। আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে দেশে মিষ্টি ভুট্টার আবাদ বাড়ানো হলে মানুষের প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করা যাবে।’

বীজ রোপণের ১০০-১১০ দিনের মধ্যে মিষ্টি ভুট্টার মোচার দানা দুধালো হয় জানিয়ে উদ্ভাবক রুহুল আমিন বলেন, ‘তখন থেকেই এগুলা বাজারজাত করা যায়। এ ছাড়া মোচাগুলোর সবুজ খোসা, গাছ, পাতা গো-খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এই জাতের ভুট্টা রোগবালাইয়ের শিকার হয় না বিধায় কীটনাশক প্রয়োগের প্রয়োজন হয় না। হেক্টর প্রতি ১২ দশমিক ৫ টন ফলন হয়। আমাদের দেশে প্রচলিত জাতগুলো গোখাদ্য হিসেবে বেশি প্রচলিত। তবে নতুন জাতটি সুইট কর্ন বা পোল কর্ন নামে পরিচতি।’

অঙ্গ সংস্থানিক বৈশিষ্ট্য: মিষ্টি ভুট্টার গাছ গাঢ় ও সবুজ রঙের। উৎগমনকালে বর্ণ গোলাপি থাকে। তবে বয়োবৃদ্ধির সঙ্গে বাদামি রং ধারণ করে। পরিপূর্ণ গাছের উচ্চতা ১৫৫-১৬০ সেন্টিমিটার এবং প্রতিটি গাছে গড়ে ১০-১২টি পাতা পরিলক্ষিত হয়। একটি গাছ সবুজ বর্ণের খোসা বিশিষ্ট এক-দুটি মোচা ধারণ করে। মোচাগুলো গড়ে ১৬ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার লম্বা এবং ৪ সেন্টিমিটার পরিধি বিশিষ্ট হয়। প্রতিটি মোচাতে গড়ে ৫৩৭টি সাদা বর্ণের দানা থাকে এবং পরিপক্ব ও শুষ্ক একটি দানার ওজন ২০০ মিলিগ্রাম।

পুষ্টি উপাদান: রাসায়নিক উপাদান হিসেবে প্রতি ১০০ গ্রাম মিষ্টি ভুট্টায় পানি ৭৫.৯৬ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট ১৯.০২ গ্রাম, সুগার ৩.২ গ্রাম, আঁশ ২.৭ গ্রাম, চর্বি ১.১৮ গ্রাম, আমিষ ৩.২ গ্রাম, ভিটামিন-সি ৬.৮ মিলিগ্রাম এবং ভাইটামিন-এ, বি-১, বি-৩ বিদ্যমান থাকে। মিষ্টি ভুট্টায় আয়রন, পটাসিয়াম, ম্যাংগানিজ প্রভৃতি খনিজ উপাদান বিদ্যমান থাকে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. গিয়াস উদ্দিন মিয়া বলেন, ‘ভুট্টার জাতগুলোর মধ্যে ছয়টি উপ-জাত রয়েছে। নামগুলো হলো ডেন্ট কর্ন, ফ্লিন্ট কর্ন, পডকর্ন, পপকর্ন, ফ্লাওয়ারকর্ন এবং সুইটকর্ন। মিষ্টি ভুট্টা সুইটকর্ন বা পোলকর্ন নামে পরিচিত। মিষ্টি ভুট্টায় মিল্ক স্টেজে সাধারণ ভুট্টার চেয়ে শতকরা ১৩-১৫ ভাগ চিনি বেশি থাকে। তবে সাধারণ ভুট্টা থেকে এর দানার কোনও পার্থক্য নেই। সাধারণ ভুট্টার চেয়েও নতুন জাতের ফলন বেশি এবং দ্রুত তোলা যায়। এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এখন পর্যন্ত ৬৮টি বিভিন্ন ফসলের নতুন জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। নতুন মিষ্টি ভুট্টা বেশি চাল হলে পুষ্টিমান তথা পুষ্টির চাহিদা নিশ্চিত করা যাবে।’


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ