1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

সন্ত্রাসী সংগঠন কেএনএফের সঙ্গে আর কোনো শান্তি আলোচনা নয়

ডেস্ক রিপোর্ট : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
শনিবার, ৬ এপ্রিল, ২০২৪

বান্দরবানে একের পর এক ব্যাংক ডাকাতির করে অপহরণ করা হয়েছে সোনালী ব্যাংক রুমা শাখার ম্যানেজার নিজাম উদ্দিন রাসেলকে। ব্যাংক ডাকাতির ঘটনা ছাড়াও খুন, অপহরণ, চাঁদাবাজি, মাদকব্যবসা ও জঙ্গিদের সশস্ত্র প্রশিক্ষণ দিয়ে বারবার আলোচনায় আসা একটি নাম কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট বা কেএনএফ। এর সামরিক শাখার নাম কুকিচিন ন্যাশনাল আর্মি বা কেএনএ।

রুমা উপজেলার এডেনপাড়ার নাথান বম এই সংগঠনের প্রধান। ২০১৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে জামানত হারান তিনি। তারপরই পাহাড়ে স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখিয়ে কিছু উচ্ছৃঙ্খল তরুণ ও যুবকদের নিয়ে গেরিলা প্রশিক্ষণের জন্য মিয়ানমারের কাচিন প্রদেশে পাড়ি জমান। ২০২১ সালে ফিরে এসে নিজে আত্মগোপনে থেকে অপতৎপরতা শুরু করেন। নাথান বমের বিরুদ্ধে খুন, ধর্ষণ, অপহরণ, চাঁদাবাজি, মাদকব্যবসা, চোরাচালানি, জঙ্গি প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র ব্যবসা সহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলা রয়েছে।

পাহাড়ে বসবাসরত অন্যান্য ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও প্রশাসনকে সহায়তাকারী সাধারণ বমরাও কেএনএফের নানামুখী অপতৎপরতা শিকার। এছাড়া আধিপত্য বিস্তার নিয়ে কেএনএফের সঙ্গে অন্য সংগঠনের সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যাও কম নয়। আধিপত্য বিস্তার ও অস্ত্র ব্যবসার জন্য জঙ্গিদের সঙ্গেও আঁতাত করেছে কেএনএফ। অর্থের বিনিময়ে দুর্গম পাহাড়ে জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসারকে প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র সরবরাহ করেছিল তারা।

জঙ্গি প্রশিক্ষণ ছাড়াও গত বছরের ১১ মার্চ ১২ জন নির্মাণশ্রমিককে অপহরণ করে কেএনএফ। এর মধ্যে একজন শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হন। পরদিন কেএনএফের গুলিতে সেনাবাহিনীর মাস্টার ওয়ারেন্ট অফিসার নাজিম উদ্দিন মারা যান এবং দুই সেনাসদস্য আহত হন। ১৫ মার্চ রুমার লংথাসি ঝিরি এলাকা থেকে কেএনএফ সদস্যরা অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট আনোয়ারসহ ৯ জনকে অপহরণ করে। কেএনএফের আতঙ্কে বম সম্প্রদায়ের অনেক পরিবারও নিজ ভিটেমাটি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে। এ সংগঠনের সদস্যদের বিরুদ্ধে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও সাধারণ বম পরিবারের গৃহস্থালির জিনিসপত্র লুট করে নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে।

নাথান বম বা কেএনএফ অর্থ, খাবার, সার-বীজ সহায়তা দিয়ে বা মেডিক্যাল ক্যাম্পেইন করে নিরীহ কুকি-চিন জনগোষ্ঠীর অনেককে আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয়েছিল। কিন্তু ধোঁকায় পড়ে কেএনএফে যোগ দেয়া কিশোর-তরুণরা সহসাই বাস্তবতা বুঝতে পারছে। কেএনএফ এর শীর্ষ নেতা নাথান বম ও ভানচুং লিয়ানের মতো গুটিকয়েক নেতা স্বাধীন রাষ্ট্র কায়েমের নামে চাঁদাবাজি, মাদকব্যবসা, অস্ত্র ব্যবসা, মুক্তিপণ আদায় ও দেশ-বিদেশ থেকে কোটি কোটি টাকা গ্রহণ করে বিত্ত বৈভবের মালিক বনে গেলেও, জুনিয়রদের পাওনা রয়েছে শুধু বাকির খাতায়। মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি ও অস্ত্র বিক্রির সঙ্গে জড়িত সদস্যরা বেতন ও ভাতা বাবদ কিছু পেলেও অন্যদের জন্য দু’বেলা খাবারই সর্বোচ্চ প্রাপ্তি।

কেএনএফের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে পাহাড়ে পর্যটনশিল্পের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। বিশাল এলাকাজুড়ে গাছ কেটে বিক্রি করে দেওয়ায় প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্যে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। কেএনএফের কারণে পর্যটন ব্যবসা থেকে শুরু করে অন্যান্য ব্যবসা-বাণিজ্য প্রায় বন্ধ। চান্দের গাড়ি, গাইড, হোটেল মালিক-শ্রমিক ও বোট চালকরা চরম বিপাকে। সরকারের গৃহীত উন্নয়নমূলক কার্যক্রমও ব্যাহত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে তারা।

কেএনএফ সুস্পষ্টভাবে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। তাদের সন্ত্রাসী তৎপরতার কারণে বাঙালি বা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কেউই নিরাপদ নয়। তাই পার্বত্য চট্টগ্রামে যারা অস্থিরতা তৈরি করছে, দেশের ভূখণ্ডে যারা আইন ভঙ্গ করছে, তাদের সঙ্গে শান্তি সংলাপের আর কোনো সুযোগ নেই। নিষিদ্ধ এই সন্ত্রাসী সংগঠনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে অভিযান পরিচালনা করা উচিত।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ