1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

বড় যুদ্ধের আশঙ্কা নেই

নিউজ এডিটর : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরানের নজিরবিহীন ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরও অঞ্চলটিতে বড় আকারের কোনো যুদ্ধের আশঙ্কা দেখছি না। এই আক্রমণটা মূলত হয়েছে ইসরায়েল কর্তৃক সিরিয়ায় ইরানের দূতাবাসে হামলার কারণে, যেখানে ইরানের ৭ জন সেনা কর্মকর্তা নিহত হন। অন্য কোনো দেশে যদি কোনো দেশের মিশন থাকে, সেটি ওই দেশেরই ভূমি হিসেবে ধরা হয়। যে দেশে মিশনটি অবস্থিত সেই দেশ চাইলেই সেখানে প্রভাব ফেলতে পারে না। তার পরও সেখানে হামলা করা হলো এবং ইসরায়েল সব জেনেবুঝেই হামলাটা করেছিল।

ইসরায়েল জানে যে, গাজায় তাদের যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হবে। সেক্ষেত্রে যদি যুদ্ধটা বাড়ানো যায়, তাহলে সেখানে ইসরায়েলের লাভ। এর পেছনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনেরও ইন্ধন রয়েছে। কারণ ইসরায়েল যদি পরাজিত হয়, তাহলে সেটি পশ্চিমা দেশগুলোরও পরাজয়। আর এ চিন্তা করেই পশ্চিমা দেশগুলো ইসরায়েলকে সমর্থন করে যাচ্ছে। যদিও সেসব দেশের জনগণের একটি বড় অংশ ফিলিস্তিনে চালানো ইসরায়েলের গণহত্যার বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছে। এই শতাব্দীতে এসে গণহত্যা চালিয়ে একটি রাষ্ট্র গঠন করা সম্ভব নয়। কারণ এ ব্যাপারে এখনকার জনগণ বেশ সচেতন।

সমস্যাটা হলো ইসরায়েলের সঙ্গে আমেরিকার রাজনীতি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এ বিষয়ে মার্কিন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কী করেন সেটা পর্যবেক্ষণ করে তারপর বাইডেন গ্রিন সিগন্যাল দেবেন। কারণ সামনে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন। এখন এক্ষেত্রে জো বাইডেন যদি কোনো পদক্ষেপ না নেন তখন ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রচার করবেন যে, বাইডেন প্রশাসন দুর্বল। আবার যদি নেন, তখন আমেরিকার জনগণ বিশেষ করে ডেমোক্র্যাটরা বাইডেনের সমর্থন থেকে আরও সরে যাবে। এখন দেখতে হবে, আমেরিকার জনগণ কী প্রতিক্রিয়া দেখায়, যদিও সেখানকার মিডিয়া প্রচণ্ডভাবে ইসরায়েলের পক্ষে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে।

ইসরায়েলের যে ক্ষমতা আগে ছিল সেটা এখন সে অবস্থায় নেই। এর বড় একটি কারণ, হামাস তাদের ওপর ব্যাপকভাবে আক্রমণ করল এবং ফিলিস্তিনে তারা এখন গণহত্যার সঙ্গে জড়িত। পুরো পৃথিবীতে ইসরায়েল বা আমেরিকার কথা বিশ্বাস করাই সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের মিডিয়াও এখন গ্রহণযোগ্যতা হারাচ্ছে। ইসরায়েল যদি এ যুদ্ধটা বাড়াতে চায় তাহলে সে ভালো করেই জানে এখানে শুধু হামাস না হুতি, হিজবুল্লাহ, উপসাগরীয় দেশগুলো এবং তাদের জনগণ এটি প্রতিহত করবে।

আর এ কারণে সেখানে বড় আকারের যুদ্ধ হবে না। সেটি হলে আমেরিকার অর্থনীতিতে প্রচণ্ড চাপ পড়বে। ইউরোপের অর্থনীতিতেও চাপ পড়বে। সাপ্লাই লাইন বিঘ্নিত হবে। তেলের দামের ওপরও চাপ পড়বে। তাই বড় আকারের কোনো যুদ্ধের আশঙ্কা আমি দেখছি না। কারণ পৃথিবীতে এখন আর সেই যুদ্ধের কাঠামো নেই। বরং ছোটখাটো কোনো আক্রমণ, সুইসাইডাল অ্যাটাক, অন্য কোনো প্রক্সি বা ইরানিদের দিয়েই ঝামেলা লাগানো এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে।

ইসরায়েল এখন ভয়ের মধ্যে আছে সেটি স্পষ্ট। কেউ যখন ভয়ে থাকে, নিজেদের দুর্বল অনুভব করে, তখনই তারা হত্যাযজ্ঞ চালায়। ভয়ের মধ্যে না থাকলে তারা ফিলিস্তিনে ৩০ হাজার লোক হত্যা করত না। এই হত্যাযজ্ঞের পরও তারা দেখছে যে, ফিলিস্তিনিদের তারা কোনোভাবেই কাবু করতে পারছে না। পৃথিবীতে তাদের পক্ষে বিশেষ করে পশ্চিমা বিশ্বের যে সমর্থন ছিল সেটিও কমে আসছে।

এখানে নেতানিয়াহু বা তার দলের একটা রাজনীতি আছে। এখন যদি সে চুপ থাকে বা সমঝোতায় যায় তাহলে তার ক্ষমতা চলে যেতে পারে। ক্ষমতাচ্যুত হলে আবার তার গ্রেফতার হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আদালতে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা রয়েছে। তাই নেতানিয়াহু কোনদিকে পদক্ষেপ নেবে সেটি এখনই বলা মুশকিল।

এক্ষেত্রে বাইডেন ও ট্রাম্পের এখন যে দ্বন্দ্ব, সেখানে আমাদের দৃষ্টি রাখতে হবে। কারণ নেতানিয়াহু একা পাল্টা জবাব দেবে, সেটা মনে হয় না। তবে বিচ্ছিন্নভাবে কোথাও তারা হামলা করতে পারে। আর মানুষ হত্যার ব্যাপারে ইসরায়েলের বেশ অভিজ্ঞতা আছে। এক্ষেত্রে তারা ইরানিদের দিয়েই ছোটখাটো সুইসাইডাল অ্যাটাক, বম্বিংয়ের ঘটনা ঘটাতে পারে। আর আমেরিকাও সরাসরি ইসরায়েলের হয়ে ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যাবে না। এর একাধিক কারণ রয়েছে। আমেরিকা ইতোমধ্যে ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধে জড়িত হয়ে আছে। এখন মধ্যপ্রাচ্যের এ অবস্থায় যদি ইরানের সঙ্গে যুদ্ধে যায় তাহলে সেখানে রাশিয়া, চীন এই দেশগুলো বসে থাকবে না। আবার ইরানি জনগণও ছেড়ে কথা বলবে না। তারা দেশের জন্য মরতে প্রস্তুত।

লেখক: অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ – আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষক


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ