1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

খুলনার পর গাজীপুরে নৌকার জোয়ার

ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
শুক্রবার, ২২ জুন, ২০১৮

বিশেষ প্রতিবেদন: আগামী ২৬ জুন অনুষ্ঠিতব্য গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে উৎসব মুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। বিজয় নিশ্চিত করতে এলাকায় ঘরে ঘরে ঘুরে ভোটারদের কাছে ভোট চাইছেন, দোয়া চাইছেন প্রার্থীরা। কিছুদিন আগে শেষ হয়েছে খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। বিচ্ছিন্ন কয়েকটি ঘটনা ঘটলেও সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন বলতে যে মানদণ্ড রয়েছে তার আলোকে নিঃসন্দেহে খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। আর এর স্বীকৃতি দিয়েছে নির্বাচন পর্যবেক্ষকরাই। বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রধান দুই দলের আগত নেতাকর্মী ছাড়াও প্রায় সকল গণমাধ্যম কর্মীদের উপস্থিতি লক্ষণীয় মাত্রায় রয়েছে। তাই গাজীপুরের নির্বাচনও সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।
গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম নৌকা প্রতীকে মেয়র পদে নির্বাচন করছেন। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনেও খুলনার জোয়ার ব্যাপকভাবেই প্রভাব ফেলেছে।
মেয়র পদে জামায়াতের প্রার্থী নগর আমির অধ্যক্ষ এস এম সানাউল্লাহ বহুদিন থেকেই প্রচার প্রচারণা চালিয়েছিল। কিন্তু বিএনপির অনুরোধে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করলেও জামায়াত শিবির কর্মীদের এ নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে। অন্যদিকে গাজীপুরে ছয়টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে জামায়াতকে সমর্থন দেয়ার আশ্বাসে জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির সমঝোতা হওয়ায় ছয় ওয়ার্ডে বিএনপির প্রার্থী ও নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে যা নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে বলে মনে হচ্ছে।
অন্যদিকে চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসীদের পৃষ্ঠপোষক, মাদক ব্যবসার অভিযোগে অভিযুক্ত এবং সর্বোপরি গাজীপুরের প্রাণপুরুষ খ্যাত আহসানউল্লাহ মাস্টার হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত হাসান সরকারকে বিএনপি কর্তৃক মনোনয়ন প্রদান করায় বিএনপির ভোটারদের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। উপরন্তু আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যাকাণ্ডে তৎকালীন বিএনপি সরকারই হাসান সরকারের ভাই নুরুল ইসলাম সরকারকে মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে অভিযুক্ত করেছিল। পরবর্তিতে হাসান সরকার মামলা থেকে অব্যহতি পেলেও সাজা পায় তার ভাই নুরুল ইসলাম সরকার। মূলত সরকার পরিবারটি কখনোই গড ফাদার ইমেজ থেকে বের হয়ে আসতে পারেনি।
এছাড়া হাসান সরকার জাতীয় পার্টি থেকে বিএনপিতে যোগ দিলেও তার প্রতিপক্ষ বিএনপির মূল ধারার নেতা আবদুল মান্নানকে মনোনয়ন না দেয়ায় নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে যা নির্বাচনে ভালো প্রভাব ফেলবে। এর আগে আবদুল মান্নান অভিযোগ করেছিলেন যে, তারেক রহমানকে টাকা না দেয়ায় সে মনোনয়ন পায়নি।
উল্লেখ্য, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে ৭ জন, সাধারণ আসনের কাউন্সিলর পদে ২৫৬ ও সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর পদে ৮৪ জনসহ মোট ৩৪৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। গাজীপুরে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম নৌকা প্রতীকে এবং বিএনপির হাসান সরকার ধানের শীষ প্রতীকে মেয়র পদে নির্বাচন করছেন।
এদিকে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের সমর্থন জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ১৪-দলীয় জোট। গাজীপুর মূলত আওয়ামী লীগের ঘাটি। গোপালগঞ্জের পর গাজীপুরেই সবচেয়ে বেশি আওয়ামী লীগের ভোট রয়েছে। এর আগে অন্তর্দলীয় কোন্দলের কারণেই পরাজিত হয়েছিল আওয়ামী লীগ। এবার নির্বাচনে জয়ের লক্ষে মাঠে নেমেছেন গাজীপুরের বর্ষীয়ান নেতা আজমত উল্লাহ খান। তাই ইতোমধ্যে উভয় সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনেই আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীদের বিজয়ের সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়ে উঠছে।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী উদ্দিন সরকার প্রতিদিন নির্বিঘ্নে পরিবেশে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু গণমাধ্যমে নানা ধরনের শঙ্কার কথা বলে নির্বাচনকে প্রভাবিত করা এবং জনগণের সহানুভূতি অর্জনে বিএনপির প্রচলিত অপকৌশল অব্যাহত রেখেছেন।
দানবীর হিসেবে পরিচিত জাহাঙ্গীর আলম ২০০৯ সালে গাজীপুর সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। সে সময় টঙ্গী এবং জয়দেবপুর থানার পুরো এলাকাবাসীর সঙ্গে সামাজিক-সাংস্কৃতিক-পারিবারিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। সুখে-দুঃখে তিনি তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। সময়ের সাথে সাথে তার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেতে থাকে। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন গঠনের পর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। শিল্প কল-কারখানার বৃদ্ধির সাথে সাথে শিল্পায়নের ব্যাপক বিকাশের ফলে এ এলাকার ব্যবসা-বাণিজ্যের অপার সম্ভাবনা সৃষ্টি হলে তিনি এলাকার অসংখ্য বেকার যুবকদেরও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেন। সরকারি অর্থ বরাদ্দ পেতে সহযোগিতার পাশাপাশি তিনি নিজের অর্থ দান করেছেন মসজিদ, মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে। কেউ তার কাছ থেকে খালি হাতে ফেরেন নি। ফলে অল্প সময়ে তিনি এলাকাবাসীর মন জয় করতে সমর্থ হয়েছেন। তাই সাধারণ ভোটাররা তাকেই মেয়র হিসেবে দেখতে চান।
মেয়র নির্বাচিত হলে গাজীপুরকে একটি আধুনিক উন্নত বাসযোগ্য সুন্দর নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে বহুমাত্রিক পদক্ষেপ গ্রহণের অঙ্গীকার করেছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম।
যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, গাজীপুর সিটিকে একটি আধুনিক গ্রিন সিটিতে পরিণত করা, সুন্দর, পরিচ্ছন্ন এবং পরিকল্পিত নগর গড়ে তোলা, গাজীপুরের ৫৭টি ওয়ার্ডকে ৮টি অর্থনৈতিক জোনে বিভক্ত করে উন্নয়ন পরিকল্পনা হাতে নেওয়া, সকল নাগরিকের জন্য সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ওয়ানস্টপ সার্ভিস চালু, নগরবাসীর জান-মালের নিরাপত্তার স্বার্থে সড়কের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা স্থাপন, স্থানীয় গণমাধ্যম ব্যক্তিদের সমন্বয়ে ওয়ার্ডভিত্তিক উন্নয়ন কমিটি গঠন করা, মশা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা, সৌন্দর্য বৃদ্ধি ও সবুজায়ন করার লক্ষ্যে খালি জায়গায় বৃক্ষরোপণ, নগরীর যানজট ও জলাবদ্ধতা প্রধান সমস্যা সমাধানে ফুটপাতসহ সুষ্ঠু ড্রেনেজ নির্মাণ করে নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন করা, শিক্ষা ও সায়েন্স সিটি গড়ে তোলা, ওয়ার্ডভিত্তিক গ্রন্থাগার স্থাপন, শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের মাধ্যমে দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের সহায়তা প্রদান, স্থানীয় সাংবাদিকদের জন্য স্বল্প মূল্যে আবাসন ও তাদের ছেলে-মেয়েদের শিক্ষা সহায়তা, কমিউনিটি ক্লিনিক সেবা আরও প্রান্তিক পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়া, ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও স্বাস্থ্য বীমার সুবিধা, অর্থনৈতিক জোন ও শিল্প পার্ক স্থাপনের মধ্য দিয়ে ব্যাপক কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা।
অন্যদিকে হাসান সরকার প্রচলিত ভাষায় প্রতিশ্রুতি প্রদান করেছে। এর আগে বিএনপি মেয়র পদে থেকে কোনো প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন না করায় বেশ বেগ পেতে হচ্ছে হাসান সরকারকে।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ